পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আ. লীগ-বিএনপির

>
  • বিএনপির ছয়টি অভিযোগ
  • আ. লীগ পাঁচটি অভিযোগ দিয়েছে
  • গণসংযোগে প্রার্থীরা


বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি-আওয়ামী লীগ উভয়ই পরস্পরের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে। প্রধান দুই দলের অভিযোগ পাল্টা-অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনী প্রচারে কিছুটা উত্তাপ ছড়াচ্ছে। গতকাল রোববার সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি আর ঝোড়ো আবহাওয়ার মধ্যেও নগরের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন মেয়র প্রার্থীরা।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় প্রথমে বিএনপির প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ারের পক্ষে এবং পরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর পক্ষে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়।

বিএনপির ছয়টি অভিযোগ হলো: নির্বাচনী কাজে আ. লীগ প্রার্থীর সার্কিট হাউজ ব্যবহার। বিভিন্ন এলাকায় নৌকার বিলবোর্ড। রাত আটটার পরও নির্বাচনী মাইকের ব্যবহার ও প্রতিটি ওয়ার্ডে নৌকার পক্ষে শোভাযাত্রা। বিভিন্ন ওয়ার্ডে কাঠ দিয়ে নৌকা প্রতীক বানিয়ে প্রদর্শন। ১৩ জুলাই রাতে ১০ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর। প্রত্যেক ওয়ার্ডে একাধিক মাইকের ব্যবহার। এতে নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘন হয়েছে।

আ. লীগও পাঁচটি অভিযোগ দিয়েছে। এগুলো হলো: আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসের সামনে বিএনপি কর্মীদের মিছিল। কাউনিয়া সড়ক ও বিএম কলেজে মিছিল। নগর ভবনের মতো সরকারি অফিসের সামনে নির্বাচনী কার্যালয় স্থাপন। কাশিপুর এলাকায় নৌকার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা। বাজার রোড ও কলাডেমায় ধানের শীষের পক্ষে মিছিল।

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, তাঁরা দুই পক্ষেরই অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগগুলো পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠানো হয়েছে। যাচাই-বাছাইয়ের পর আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গণসংযোগে প্রার্থীরা
কাল থেমে থেমে বৃষ্টির মধ্যেও মেয়র প্রার্থীরা নগরের ‍বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন। বিএনপির মজিবর রহমান সরোয়ার সকাল ১০টায় নগরের পোর্টরোড, মৎস্য বাজার, সদর রোড, আমানতগঞ্জ, পলাশপুর, বেলতলা এবং বিকেলে কাশিপুর এলাকায় গণসংযোগ করেন। দুপুরে দলীয় কার্যালয়ে ৩০টি ওয়ার্ডের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় সরোয়ার বলেন, সরকারদলীয় প্রার্থীর সমর্থকেরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচার চালাচ্ছেন, বাড়তি সুযোগ নিচ্ছেন।

আ. লীগ প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ সকাল ১০টায় একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এসময় তিনি বিএনপির অভিযোগ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা চাই নির্বাচনী মাঠে শান্তিপূর্ণ ও সহাবস্থানের পরিবেশ বজায় থাকুক। সে ক্ষেত্রে বিএনপি প্রার্থীর স্ত্রী প্রচারণায় নেমে ভোটারদের নির্বাচনের পর দেখিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। এটা ঠিক না। পরে তিনি সদর রোড ও আশপাশের এলাকায় গণসংযোগ করেন। বিকেল সাড়ে ৫টায় ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আমানতগঞ্জ, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের আফতাব চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে এবং ১২ নম্বর ওয়ার্ডে পৃথক তিনটি পথসভা করেন।

ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মাওলানা ওবায়দুর রহমান সকালে নগরের কালীবাড়ী রোড, লাইন রোড এবং সরকারি বরিশাল কলেজ এলাকায় গণসংযোগ করেন। বিকেলে বৌবাজার ও সন্ধ্যায় বেলতলা বাজারে পথসভা করেন। দুপুরে স্টিমারঘাট জামে মসজিদে জাতীয় ইমাম সমিতির ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে বক্তৃতাকালে তিনি বলেন, ‘ইমামগণ সংশ্লিষ্ট এলাকার নেতা। তাই আমরা মনে করি, ইমামগণ ঐক্যবদ্ধ হলে বুর্জোয়া সমাজব্যবস্থার পরিবর্তন সম্ভব।’