ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: আরও সংশোধন আসছে খসড়ায়

প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আরও পাঁচটি ধারায় সংশোধনী আনা হচ্ছে। বুধবার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সংশোধনীগুলো নিয়ে আলোচনা হয়।

এর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আইনের খসড়ায় ১১টি ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করেছিল সংসদীয় কমিটি। সব মিলে এখন পর্যন্ত প্রস্তাবিত আইনটির ১৬টি ক্ষেত্রে সংশোধন আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। সংশোধনী চূড়ান্ত করে আগামী সেপ্টেম্বরে জাতীয় সংসদে পাসের জন্য প্রতিবেদন দেবে সংসদীয় কমিটি।

সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবারের কমিটির বৈঠকে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা বিলের ৩, ৫, ১২, ২১, ৫৩ ও ৫৪ ধারা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে।

বৈঠক সূত্র জানায়, বিলের ৫ ধারায় ডিজিটাল নিরাপত্তা কাউন্সিলে একজন মহাপরিচালক সঙ্গে দুজন পরিচালক যুক্ত করা, ১২ ধারায় জাতীয় ডিজিটাল নিরাপত্তা কাউন্সিলে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একজন প্রতিনিধি রাখা (তথ্য মন্ত্রণালয় এই প্রতিনিধি নির্ধারণ করবে), ২১ ধারায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতির পিতার বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডার সঙ্গে জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সংগীত অবমাননার বিষয় যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত ৫৩ ধারায় আগে ছিল অভিযোগ গঠনের ১৮০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে হবে। সেটা ১৮০ কার্যদিবস করা এবং মামলা নিষ্পত্তির সময়সীমা সর্বোচ্চ ৯০ দিনের পরিবর্তে ৯০ কার্যদিবস করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বৈঠক শেষে সংসদীয় কমিটির সভাপতি ইমরান আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, সাংবাদিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে কমিটি একাধিক বৈঠকে আলোচনা করেছে। তাঁদের প্রস্তাবগুলোর কিছু থাকবে, কিছু হয়তো বাদ যাবে। সংসদীয় কমিটি কোনো গোষ্ঠীর সন্তুষ্টি নয়, জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেবে। তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা করায় সংসদীয় কমিটি লাভবান হয়েছে। তিনি বলেন, আগামী সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় সংসদ অধিবেশনের প্রথম বৈঠকেই কমিটি এই বিলের প্রতিবেদন দেবে।

ইমরান আহমেদ জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকা অবমাননার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।

কমিটির সভাপতি ইমরান আহমদের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ এবং হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া বৈঠকে অংশ নেন। বিশেষ আমন্ত্রণে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বৈঠকে যোগ দেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর থেকে সাংবাদিক সমাজসহ বিভিন্ন গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে আপত্তি উঠেছিল। সম্পাদক পরিষদের পক্ষ থেকে আটটি ধারা নিয়ে আপত্তি জানানো হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৭ জুলাই সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ১১টি ক্ষেত্রে সংশোধনী আনার প্রস্তাব করা হয়। ওই বৈঠকে সাংবাদিকদের তিনটি পক্ষ—সম্পাদক পরিষদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্সের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। পরে ১১ জুলাই আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন সাংবাদিক প্রতিনিধিরা। তবে বুধবারের বৈঠকে সাংবাদিক প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ ছিল না।