বিএনপির ৩ প্রার্থীর আচরণকে নাটক বললেন কাদের

ওবায়দুল কাদের।ফাইল ছবি
ওবায়দুল কাদের।ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে বিএনপি তামাশার নাটক মঞ্চস্থ করেছে। ভোটের দিন দলটির তিন প্রার্থীর কর্মকাণ্ড ছিল নাটক। কিন্তু তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে বিএনপি নেতাদের নীলনকশা জনগণ ভন্ডুল করে দিয়েছে।

ওবায়দুল কাদের আজ দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সদ্যসমাপ্ত রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও অর্জনের রাজনীতি এবং শহরের মানুষের মন জয় করতে সক্ষম হওয়ায় বরিশাল ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন। গতকাল সোমবার এ তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে তিন সিটি করপোরেশনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে একই দলের প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বিপুল ভোটে বিজয়ী হলেও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী আরিফুল হক আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমেদ কামরানের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন।

সেতুমন্ত্রী বলেন, তিন সিটি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিএনপির নেতারা কয়েক দিন ধরে তামাশার নাটক মঞ্চস্থ করেছেন। আর পরাজিত হওয়ার ভয়ে ভোটের দিন বরিশাল সিটি করপোরেশনের বিএনপির প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন। রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল নিজের ভোট না দিয়ে একাই কত নাটক করলেন। সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার আগেই পুনঃ নির্বাচন দাবি করলেন। আর এখন ‘ভি’ চিহ্ন দেখাচ্ছেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সোমবারের তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে চারটিতে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করেছে। দেশের ছয় হাজারে বেশি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে শতকরা ৯০ ভাগ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকারের অন্যান্য নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে যে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার উন্নয়নের রাজনীতিকে গ্রহণ করেছে এবং বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।

কাদের বলেন, জনগণ বিএনপির হাওয়া ভবনের মতো বিকল্প সরকার আর চায় না। কানাডার আদালতের রায় অনুযায়ী বিএনপির মতো সন্ত্রাসী সংগঠনকে দেশের মানুষ আর দেখতে চায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই বিএনপি কীভাবে দেশের মানুষের ভোট প্রত্যাশা করে। তারা জনগণের আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। তাদের রাজনীতি ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে আসছে। তিনি বলেন, বিএনপি দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে কাল বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। তাদের ডাকে দলের নেতারাও নামবে কি না সন্দেহ। নির্বাচনে তারা যেমন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে, তেমনি আন্দোলনের ডাকেও প্রত্যাখ্যাত হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, বাসের চাপায় দুই স্কুলশিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় দেশের মানুষের সঙ্গে তিনিও ভীষণভাবে মর্মাহত। এ ঘটনায় সরকার চুপ করে বসে নেই। সরকার দ্রুততার সঙ্গে বাসের চালককে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় এনেছে।
তিনি বলেন, সরকারের রেসপন্স প্রমাণ করে দিয়েছে, এ ব্যাপারে সরকারের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। দোষী ব্যক্তিদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তোমরা শান্ত হও। পড়াশোনায় মনোনিবেশ করো। দোষী বাসচালক বিচারের হাত থেকে রেহাই পাবে না।’

ওবায়দুল কাদের এ সময় তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নির্বাচিত মেয়র, কাউন্সিলর, ভোটার, নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে জড়িত সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এ কে এম এনামুল হক শামীম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।