আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তার দেখাল পুলিশ

শহিদুল আলম। ফাইল ছবি
শহিদুল আলম। ফাইল ছবি

আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে আজ সোমবার তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাতে ধানমন্ডির বাসা থেকে শহিদুলকে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ করেন তাঁর স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ। রেহনুমা বলেন, গতকাল ধানমন্ডির ৯/এ সড়কের বাসার চতুর্থ তলা থেকে শহিদুলকে ধরে নিয়ে গেছেন ডিবি পরিচয় দেওয়া একদল লোক।

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (জনসংযোগ ও গণমাধ্যম) মাসুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন জানিয়ে তাঁকে আদালতে হাজির করানো হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তর বিভাগের পরিদর্শক মেহেদী হাসান বাদী হয়ে শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলাটি করেন। মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে ফেসবুক ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও চলমান আন্দোলন নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

শহিদুলের সহকর্মী এ এস এম রেজাউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, শহিদুল যে বাসায় থাকেন, তার নিচতলার নিরাপত্তাকর্মী মো. জালাল তাঁকে বলেছেন, সাড়ে ৮টার দিকে ১৫টির মতো গাড়ি বাসার আশপাশে এসে দাঁড়ায়। তখন পাশে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল, তাই জালাল ভেবেছিলেন, এসব গাড়ি সেখানেই এসেছে। একটু পরে গাড়িগুলো থেকে লোকজন নেমে জালালকে ফটক খুলতে বাধ্য করেন। বাড়িটির গাড়িবারান্দায় তাঁরা জোর করে একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস ঢুকিয়ে দেন। জালালকে আটকে রাখা হয়। তখন জালাল অনুপ্রবেশকারীদের পরিচয় জানতে চাইলে তাঁরা নিজেদের ‘ডিবি’ বলে দাবি করেন এবং তাঁদের কোথাও ঢুকতে বাধা দিলে সমস্যা হবে বলেও জালালকে সতর্ক করেন। এরপর লোকগুলো সিঁড়ি দিয়ে চতুর্থ তলায় উঠে যান। বাসায় শহিদুল একাই ছিলেন, স্ত্রী রেহনুমা তৃতীয় তলায় এক সহকর্মীর বাসায় দাওয়াতে গিয়েছিলেন। ওই বাসায় শহিদুলেরও দাওয়াত ছিল, তিনি স্ত্রীকে রেখে কিছু আগে নিজের ফ্ল্যাটে ঢোকেন। সেখান থেকেই লোকগুলো শহিদুলকে নিয়ে লিফট দিয়ে নিচে নামেন। এ সময় শহিদুলের চিৎকার শুনে রেহনুমাও তৃতীয় তলার বাসা থেকে বের হয়ে আসেন। তবে নামতে নামতে শহিদুলকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান লোকগুলো। গাড়িটির গায়ে পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স লেখা ছিল। তাঁরা বাড়ির সিসি ক্যামেরা অচল করে দেন। ক্যামেরার ফুটেজ যেখানে সংরক্ষণ করা হয়, সেই ডিভিআর বক্সও নিয়ে যান।

শহিদুলের স্ত্রী রেহনুমা জানান, তাঁরা ধানমন্ডি থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। পুলিশ এসে ঘটনাস্থল দেখে গেছে। তিনি জানান, চলমান ছাত্র বিক্ষোভ নিয়ে শহিদুল সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেন।