কুড়িগ্রামে মানসিক ভারসাম্যহীন নারী জন্ম দিলেন পুত্র সন্তানের

হাসপাতালে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী ও সদ্য প্রসূত সন্তান। কুড়িগ্রাম, ৮ আগস্ট। ছবি: সংগৃহীত
হাসপাতালে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী ও সদ্য প্রসূত সন্তান। কুড়িগ্রাম, ৮ আগস্ট। ছবি: সংগৃহীত

মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক বলছেন, মা ও নবজাতক দুজনই সুস্থ আছে। এরই মধ্যে ওই নবজাতকের একটি নামও ঠিক করা হয়। জেলা প্রশাসক আদর করে তার নাম রাখেন ‘স্বাধীন’।

বুধবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ওই পুত্রসন্তানের জন্ম হয় বলে জানান হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শাহিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, চিকিৎসক অমিত কুমারের তত্ত্বাবধানে ওই নবজাতকের জন্ম হয়।

এই নবজাতকের জন্মের কথা শুনে হাসপাতালে উপস্থিত হন কুড়িগ্রাম জেলার প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন। এ সময় তিনি ওই নবজাতককে বুকে জড়িয়ে আদর করেন। পাশাপাশি তিনি নবজাতকের নাম ‘স্বাধীন’ বলেও ঠিক করেন। এ ছাড়া জেলা প্রশাসক এই নবজাতক ও মায়ের দায়িত্ব নেন। এ সময় সিভিল সার্জন আমিনুল ইসলাম, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ রাশেদুজ্জামান বাবু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য মতে, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী কথা বলতে পারেন না।

আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শাহিনুল ইসলাম বলেন, ‘গত ২৭ জুলাই হাসপাতালের সামনে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীকে গর্ভাবস্থায় ছটফট করতে দেখেন কুড়িগ্রাম প্রথম আলো বন্ধুসভার সভাপতি জাহানুর রহমান খোকন। তিনি লোকজনের সহায়তায় তাঁকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। এরপর তাঁকে প্রসূতি বিভাগে ভর্তি করানো হয়।’

শাহিনুল ইসলাম বলেন, ‘বন্ধুসভার মাধ্যমে খবর পেয়ে ২৯ জুলাই হাসপাতালে এই নারীকে দেখতে আসেন জেলা প্রশাসক। এ সময় তিনি তাঁর সব রকম সহায়তা দেওয়ার জন্য সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দেন।’

জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন বলেন, ‘মা ও নবজাতক আপাতত চিকিৎসাধীন রয়েছে। সুস্থ হলে আমরা বুঝে শুনে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’ চিকিৎসক অমিত কুমার বসু বলেন, ‘বর্তমান মা ও নবজাতক ভালো আছে।’

এর আগে জুলাই মাসে ঢাকার কলাবাগানে ফুটপাতে থাকা অসুস্থ এক নারী ও তাঁর পরিবারের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। যাদের বাড়ি এক সময় কুড়িগ্রাম জেলাতেই ছিল। ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনের স্বীকার ওই পরিবার সব হারিয়ে ঢাকায় ফুটপাতে আশ্রয় নিয়েছিল। সেখানেই ৬ জুলাই ওই নারী অসুস্থ হয়ে পড়েন। সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ছোট্ট শিশু মায়ের মাথায় পানি দিচ্ছে। পরে ওই পরিবারের বিষয়টি জানতে পেরে জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন তাঁদের কুড়িগ্রামে আনার ব্যবস্থা করেন এবং থাকার ব্যবস্থা করেন।