কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের সর্ববৃহৎ ঈদগাহ মাঠে ঈদুল আজহার নামাজ আদায়

কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের সর্ববৃহৎ ঈদগাহ মাঠে ঈদুল আজহার নামাজ আদায়। ছবি: তাফসিলুল আজিজ
কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের সর্ববৃহৎ ঈদগাহ মাঠে ঈদুল আজহার নামাজ আদায়। ছবি: তাফসিলুল আজিজ

দেশের সর্ববৃহৎ ঈদগাহ মাঠ কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। শোলাকিয়ায় সকাল থেকে দলে দলে মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন। এবার অনুষ্ঠিত হলো ঈদুল আজহার ১৯১তম জামাত। সকাল নয়টায় জামাত শুরু হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মুসল্লিদের এই জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা মুফতি হিফজুর রহমান খান। নামাজ শেষে বিশ্ব মুসলিম উম্মার শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

দেশের সবচেয়ে বড় এই ঈদগাহ ময়দানে নামাজ আদায় নির্বিঘ্ন করতে চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসন। মোতায়েন করা হয়েছিল র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্যসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। মাঠের ভেতর ও বাইরে ছিল অনেক সিসি ক্যামেরা। পুরো মাঠ নজরদারির জন্য ছিল দুটি ড্রোন। এমনকি পর্যবেক্ষণ টাওয়ারের মাধ্যমে আগত ব্যক্তিদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়। পুলিশ বাহিনীকে সহায়তায় ছিল বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবক দল। নিরাপত্তার স্বার্থে কাউকে ছাতা বা কোনো ধরনের ব্যাগ নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি ঈদগাহ মাঠে। শুধু পাতলা জায়নামাজ নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। মুসল্লিদের যাতায়াতে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়।

২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঈদের দিন শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের অদূরে পুলিশ সদস্যদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায় জঙ্গিরা। এতে জঙ্গিদের নৃশংস চাপাতির কোপে পুলিশের দুই সদস্য, গুলিবিদ্ধ হয়ে স্থানীয় এক নারী, এক সন্ত্রাসীসহ চারজন নিহত হন।

শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ বলেন, ২০১৬ সালের ঈদের অপ্রত্যাশিত হামলার বিষয়টি মাথায় রেখে এবারও মাঠে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। এদিকে নির্বিঘ্নে নামাজ আদায় করে মুসল্লিরা ঘরে ফেরায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ।

মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর বংশধর দেওয়ান মান্নান দাদ খান ১৮২৮ সালে জেলা শহরের পূর্ব পাশে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় সাত একর জমির ওপর এই ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন। জনশ্রুতি রয়েছে, এই মাঠে প্রথম অনুষ্ঠিত জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি অংশ নেন। এ কারণে এর নাম হয় সোয়া লাখ। পরে উচ্চারণ পরিবর্তন হতে হতে শোলাকিয়া মাঠ নামে এর পরিচিতি হয়।