খুলনা-৪ আসনে সাংসদ নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন সালাম মুর্শেদী

সালাম ‍মুর্শেদী। ফাইল ছবি
সালাম ‍মুর্শেদী। ফাইল ছবি

খুলনা-৪ আসনের (রূপসা-তেরখাদা-দীঘলিয়া) উপনির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন সাবেক ফুটবলার ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম মুর্শেদী। আজ রোববার মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী ছাড়া আর কেউই মনোনয়নপত্র জমা দেননি।

সালাম ‍মুর্শেদীর বাড়ি খুলনার রূপসা উপজেলায়। তিনি বাংলাদেশে এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ইএবি) সভাপতি, এনভয় গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি। রোববার দুপুরে খুলনা বিভাগীয় আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও খুলনা-৪ আসনের উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলীর কাছে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেন।

আওয়ামী লীগ খুলনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার মৃত্যুতে শূন্য ঘোষিত খুলনা-৪ আসনের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারিত আছে ২০ সেপ্টেম্বর।

উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তর থেকে তিনজন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত আব্দুস সালাম মুর্শেদী, জাতীয় পার্টির এস এম আনিসুর রহমান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাবেক সেনা কর্মকর্তা শেখ হাবিবুর রহমান। তবে দিন শেষে শুধু সালাম মুর্শেদী ছাড়া আর কেউই মনোনয়নপত্র জমা দেননি।

সালাম মুর্শেদীর মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় উপস্থিত ছিলেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও খুলনার মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য এস এম কামাল হোসেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও খুলনা-২ আসনের সাংসদ মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ, বঙ্গবন্ধুর ভাইয়ের ছেলে ও বিসিবির পরিচালক শেখ সোহেলসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুস সালাম মুর্শেদী ছাড়া আর কেউই মনোনয়নপত্র জমা দেননি। ২৮ আগস্ট মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। এরপর ৫ সেপ্টেম্বর রয়েছে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। ওই দিন যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না হয় তাহলে নিয়মানুযায়ী ওই দিন বিকেলেই একক প্রার্থী হিসেবে সালাম মুর্শেদীকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। তখন আর নির্বাচন করার প্রয়োজন হবে না।

জমা দেওয়া মনোনয়নপত্রের হলফনামায় সালাম মুর্শেদী উল্লেখ করেছেন তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পাস। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই, অতীতেও ছিল না। তিনি তাঁর পেশা উল্লেখ করেছেন ব্যবসায়ী হিসেবে। বিভিন্ন প্রাইভেট/পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

হলফনামায় আয়ের উৎস সম্পর্কে তিনি উল্লেখ করেছেন, বাড়ি ভাড়া থেকে বছরে তাঁর নিজের আয় ১৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা, তার ওপর নির্ভরশীলদের আয় ১০ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে বছরে নিজের আয় ২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা, নির্ভরশীলদের আয় ১৭ লাখ ৫৮ হাজার টাকা, শেয়ার সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত থেকে নিজের আয় ২ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, নির্ভরশীলদের আয় ৪৭ লাখ টাকা।

অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজের নামে নগদ সাড়ে ১৩ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে ৪ লাখ টাকা, নির্ভরশীলদের নামে ১ লাখ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের নামে জমা রয়েছে ৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে ১২ লাখ টাকা ও নির্ভরশীলদের নামে ১৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। কোম্পানির শেয়ার রয়েছে নিজের নামে ৬৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে ৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা, নির্ভরশীলদের নামে ১২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। তাঁর গাড়ির মূল্য মাত্র সাড়ে ৪ লাখ টাকা। স্বর্ণ আছে নিজের সাড়ে ৯ হাজার টাকার এবং স্ত্রীর ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকার। আসবাবপত্রের মূল্য ৩০ হাজার টাকা। অন্যান্য অস্থাবর সম্পদ আছে নিজের নামে ৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকার এবং স্ত্রীর নামে ১ কোটি ২৮ লাখ টাকার।

স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে থাকা ভবনের মূল্য ১১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে থাকা ভবনের মূল্য ৩৪ লাখ টাকা। আর ব্যাংকে তাঁর যে পরিমাণ ঋণ রয়েছে তার পরিমাণ ৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।