পাবনায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্রী নিহত, আহত ভাই

হাসপাতালের বিছানায় মেহেদি হাসান। দেখা হচ্ছে এক্স-রে রিপোর্ট। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। পাবনা সদর হাসপাতাল, ২৭ আগস্ট। ছবি: হাসান মাহমুদ
হাসপাতালের বিছানায় মেহেদি হাসান। দেখা হচ্ছে এক্স-রে রিপোর্ট। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। পাবনা সদর হাসপাতাল, ২৭ আগস্ট। ছবি: হাসান মাহমুদ

মেহেদি হাসান নবম শ্রেণিতে পড়ে। বয়স ১৬ বছর। শখের বসে বাবার মোটরসাইকেলে বোন সুরাইয়া ইসলামকে (১৩) নিয়ে নানা বাড়ি যাচ্ছিল। পথিমধ্যে ট্রাকের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে তারা।

ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় সুরাইয়া। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় মেহেদিকে।

আজ সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটে পাবনা জেলা শহরের লাইব্রেরি বাজার এলাকায়। হতাহত ভাইবোন পার্শ্ববর্তী গোপালপুর মহল্লার আইবি সড়কের শফিকুল ইসলামের সন্তান। সুরাইয়া পাবনা পুলিশ লাইনস স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণি ও মেহেদি জাগির হোসেন একাডেমির নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

প্রত্যক্ষদর্শী ও হতাহত দুজনের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেহেদির বাবা পেশায় ব্যবসায়ী। তাঁর একটি মোটরসাইকেল আছে। প্রায়ই শখের বসে বাইকটি নিয়ে মেহেদি বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। সেই শখের বসেই আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে একমাত্র ছোট বোনকে মোটরসাইকেলে তুলে নানা বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয় সে।

কিন্তু পথে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে পাশ কাটাতে গিয়ে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রুতগতির ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা খায় মেহেদির বাইক। এতে দুই ভাইবোন মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে দুই দিকে পড়ে যায়। এর মধ্যে ট্রাকের পেছনের চাকার আঘাত লেগে ঘটনাস্থলেই সুরাইয়ার মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় মেহেদিকে প্রথমে পাবনা জেনারেল হাসপাতাল ও পরে ঢাকায় নেওয়া হয়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পাবনা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুর রাজ্জাক বলেন, সুরাইয়ার লাশ উদ্ধার এবং ট্রাকসহ ঘাতক চালক সাগর আলীকে আটক করা হয়েছে।

ঘটনার পর হাসপাতাল ও সুরাইয়াদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, দুই দিকে দুই সন্তানকে নিয়ে ব্যস্ত স্বজনেরা। একদিকে দাফনের প্রস্তুতি চলছে অন্যদিকে উন্নত চিকিৎসার। এর মধ্যেই ভিড় জমিয়েছে স্বজন ও প্রতিবেশীরা। কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে পুরো বাড়ি। শোকে স্তব্ধ বাবা-মা।

সুরাইয়া ও মেহেদির বড় চাচা রফিকুল ইসলাম বলেন, মেহেদি মোটরসাইকেল চালাতে খুব পছন্দ করত। প্রায়ই বাবার মোটরসাইকেল নিয়ে বের হতো। এই শখই শেষ পর্যন্ত কাল হলো।

এ প্রসঙ্গে সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জালাল উদ্দিন বলেন, ‘একটি দুর্ঘটনা বড় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই এ ব্যাপারে সবার সচেতনতা প্রয়োজন। আমরা ট্রাকের ঘাতক চালককে আটক করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি। পাশাপাশি অপ্রাপ্তবয়স্কদের হাতে মোটরসাইকেল না দিতেও সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’