মহাসড়কে অবাধে চলছে রিকশা

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলছে রিকশা। ছবিটি সম্প্রতি মহাসড়কের রায়েরবাগ থেকে তোলা।  প্রথম আলো
নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলছে রিকশা। ছবিটি সম্প্রতি মহাসড়কের রায়েরবাগ থেকে তোলা। প্রথম আলো

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত অংশে চলছে তিন চাকার হালকা যান। এতে মহাসড়কে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

গত বৃহস্পতিবার যাত্রাবাড়ী থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত মহাসড়কের প্রায় পাঁচ কিলোমিটার অংশ ঘুরে দেখা যায়, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ভ্যান, হিউম্যান হলার, লেগুনা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা নির্বিঘ্নে চলাচল করছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ রিকশা ও ভ্যান চলছে উল্টো পথে।

কয়েকজন বাসের চালক বলেন, উল্টো পথে রিকশা ও ভ্যান চলার কারণে তাঁদের বেশ সমস্যায় পড়তে হয়।

বৃহস্পতিবার যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা, সাইনবোর্ড মোড় ও চিটাগাং রোড ছাড়া মহাসড়কের এই অংশে ট্রাফিক পুলিশের কোনো সদস্যকে দেখা যায়নি। আর ওই তিন এলাকায় পুলিশ থাকলেও রিকশা বা ভ্যানগাড়ি চলাচলে বাধা দিতে দেখা যায়নি।

যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা থেকে এক রিকশায় তিনজন যাত্রী নিয়ে উল্টো পথে শনির আখড়ায় যাচ্ছিলেন চালক দুলাল মিয়া। এভাবে ঝুঁকি নিয়ে রিকশা চালানোর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রিকশায় আয়না নেই। তাই পেছন থেকে বড় গাড়ি এলে দেখা যায় না। এ জন্য উল্টো পথে চললে সুবিধা। সামনের দিক থেকে আসা গাড়ি দেখা যায়।

মহাসড়কের দুপাশের বাসিন্দারা বলেন, কম গতির হালকা যান চলাচল নিষিদ্ধ হলেও তা বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ তাঁদের চোখে পড়েনি।
এমন অব্যবস্থাপনার কারণে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

রায়েরবাগের বাসিন্দা আফজালুর রহমান, আবদুল কাদের ও মোহাম্মদ হোসেনের সঙ্গে কথা হয় শনির আখড়ায়। তাঁরা বলেন, ধীরগতির যান চলাচলের জন্য আলাদা লেন দরকার। কিন্তু এই সড়কে সে ব্যবস্থা নেই। যাত্রাবাড়ী থেকে সাদ্দাম মার্কেট পর্যন্ত মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে একটি লেন থাকলেও সে জায়গা বেদখল হয়ে আছে। অনেক জায়গা খানাখন্দে ভরা।

উত্তর যাত্রাবাড়ীর বিবির বাগিচার বাসিন্দা আহমদ আলমগীর বলেন, সাধারণত যাত্রাবাড়ী থেকে কাজলা, দনিয়া, শনির আখড়া, মাতুয়াইলগামী লোকজন রিকশায় চলাচল করেন। এ পথে যাত্রীদের চাহিদা বেশি থাকায় পুলিশ বাধা দেয় না। তবে দুর্ঘটনা রোধে এসব হালকা যান মহাসড়কে চলাচল বন্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, সম্প্রতি শনির আখড়ায় একটি রিকশাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় যাত্রীবাহী বাস। এতে রিকশায় থাকা দুই যাত্রী সড়কে ছিটকে পড়েন। তবে বাসের গতি কম থাকায় তাঁদের বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি। মহাসড়কের এই অংশে অহরহ এমন ঘটনা ঘটছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্য বলেন, এই সড়কে সব সময়ই রিকশা, ভ্যানসহ অন্যান্য হালকা যান চলাচল করে। এসব যান বন্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাঁদের কোনো নির্দেশনা দেয়নি।

জানতে চাইলে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক-দক্ষিণ) মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, মহাসড়কে হালকা যান চলাচল বন্ধে তাঁরা সব সময়ই তৎপর।