গোয়ালন্দ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক মাস ধরে পড়ে আছেন অজ্ঞাত বৃদ্ধা

নাম-পরিচয়হীন অজ্ঞাত এই বৃদ্ধা প্রায় এক মাস ধরে আছেন গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। রাজবাড়ী, ৮ সেপ্টেম্বর।  ছবি: এম রাশেদুল হক
নাম-পরিচয়হীন অজ্ঞাত এই বৃদ্ধা প্রায় এক মাস ধরে আছেন গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। রাজবাড়ী, ৮ সেপ্টেম্বর। ছবি: এম রাশেদুল হক

নাম-পরিচয়হীন এক বৃদ্ধাকে (৭০) নিয়ে বিপাকে পড়েছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। গত ১০ আগস্ট ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে নিয়ে আসেন কিছু শিক্ষার্থী। এরপর থেকে তিনি সেখানে আছেন।

গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আসিফ মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, সেখানকার রেলগেট এলাকায় রাস্তার ধারে ওই নারী অসুস্থ অবস্থায় পড়ে ছিলেন। পরে স্থানীয় কয়েকজন শিক্ষার্থী তাঁকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন। তবে তিনি কোত্থেকে কীভাবে এই এলাকায় এলেন, তার কিছুই জানা যাচ্ছে না।

গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে ওই বৃদ্ধা আগের থেকে অনেকটা সুস্থ। হাসপাতালের পরিচারিকা মনোয়ারা বেগম তাঁকে খাওয়াচ্ছিলেন। তাঁর আগে মাথায় তেল-পানি দিয়ে পরনের কাপড় গোছগাছ করে দেন। এ সময় ওই বৃদ্ধা শুধু চারদিক তাকিয়ে দেখছিলেন। কিন্তু নাম-পরিচয় কিছুই বলতে পারছেন না। পরিচয় জিজ্ঞাসা করলে শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন।

বৃদ্ধার কক্ষের আশপাশের কয়েকজন রোগী জানান, তিনি কখনোই কারও সঙ্গে কথা বলেননি। মাঝেমধ্যে বিড় বিড় করে কিছু একটা বলার চেষ্টা করেন। এতে তাঁকে অস্বাভাবিক প্রকৃতির মনে হয়।

মনোয়ারা বেগম বলেন, প্রায় এক মাস আগে এই নারীকে এলাকার কয়েকজন যুবক হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তখন তিনি খুবই অসুস্থ ছিলেন। তাঁর হাত-পায়ে ঘা ছিল। পরনের পোশাকও ছিল অনেকটা নোংরা প্রকৃতির।

হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ নার্স মৃদুলা বিশ্বাস বলেন, ‘হাসপাতালে আনার পর অনেকে তাঁর কাছে ভিড়তে চায়নি। আমরা তাঁকে নিয়মিত গোসল ও খাবার দিয়ে সুস্থ করে তুলেছি। কিন্তু এখন একটা ব্যবস্থা করা দরকার। এভাবে আর কত দিন রাখা যায়।’

একই কথা বললেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আসিফ মাহমুদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঠিকানা না জানায় বৃদ্ধার স্বজনদের খবর দেওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু এভাবে আর কত দিন? পরিচারিকারাও দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি তাঁর বাড়তি যত্ন নিতে গিয়ে কিছুটা বিরক্তি প্রকাশ করছেন। এখন দ্রুত তাঁর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা দরকার। এ জন্য তিনি গণমাধ্যমের সহায়তা কামনা করেছেন।