মা ও ভাইবোনের মতো তিনিও আত্মহত্যা করেন

মা, বড় ভাই ও বোনের পথেই চলে গেলেন রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ব্যবসায়ী রেজাউল করিম (৩৯)। তাঁদের মতোই আত্মহত্যা করেছেন তিনি। আজ সোমবার সকালে রেজাউলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

রেজাউল করিম উপজেলার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের কনোপাড়া গ্রামের মৃত আবেদ আলীর ছেলে। তাহেরপুর বাজারে তাঁর সার ও কীটনাশকের ব্যবসা আছে। এলাকায় তিনি উদীয়মান ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

বাগমারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান বলেন, রেজাউল করিম গতকাল রোববার রাতের খাবার খেয়ে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাতের কোনো এক সময় ঘর থেকে বের হয়ে বাড়ির পেছনে আমগাছের ডালের সঙ্গে গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। আজ ভোরে স্ত্রী তাঁকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। সকালে তাঁকে বাড়ির পাশে আমগাছের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায়। খবর পেয়ে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাঁর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠিয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়, রেজাউলের গলায় রশির দাগ দেখা গেছে। লাশ উদ্ধারের সময় মুখ থেকে লম্বা জিহ্বা বের হওয়া অবস্থায় ছিল। এটি আত্মহত্যার ঘটনা বলে রেজাউলের পরিবার জানিয়েছে।

ব্যবসায়ী রেজাউল করিমের স্ত্রী নাসরিন আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, সম্প্রতি তাঁর স্বামীর ব্যবসা ভালো যাচ্ছিল না। এ নিয়ে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছিলেন। এই কারণে তাঁর স্বামী আত্মহত্যা করতে পারেন। ১২ ও ৭ বছরের দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে তাঁদের।

গ্রামের স্কুলশিক্ষক আলতাফ হোসেন ও স্বজনেরা জানান, ১৫ বছর আগে রেজাউলের মা বিষপানে, ২০০৬ সালে বড় বোন রুবিনা খাতুন বিষপানে ও সর্বশেষ ২০১৫ সালে বড় ভাই আশরাফুল ইসলাম গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। মা ও বোন পারিবারিক অশান্তির কারণে ও বড়ভাই ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে আত্মহত্যা করেন। তবে প্রায় ২০ বছর আগে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে তাঁর বাবার। তাঁর ছোট ভাই আমিনুল হক বর্তমানে পোশাক কারখানার শ্রমিক।