স্কচটেপ খুলতেই বিস্ফোরণ, শিশুটি হাসপাতালে

সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ফাহিমের শয্যার পাশে তার নানি। ১২ সেপ্টেম্বর, মাদারীপুর। অজয় কুন্ডু
সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ফাহিমের শয্যার পাশে তার নানি। ১২ সেপ্টেম্বর, মাদারীপুর। অজয় কুন্ডু

বাগানে ফেলে রাখা একটি ব্যাগের মধ্যে ছিল ককটেল। কিন্তু অবুঝ এক শিশু ককটেলটি বল ভেবে হাতে তুলে নেয়। পরে ওই শিশু ককটেলে লাগানো লাল স্কচটেপটি খুলতে থাকে। হঠাৎ শিশুটির হাতেই বিস্ফোরিত হয় ককটেলটি। ঘটনাটি ঘটে বুধবার সকাল আটটার দিকে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার আলীনগরে।

ককটেল বিস্ফোরণে আহত ওই শিশুর নাম ফাহিম শেখ (৮)। ফাহিম ওই এলাকার মৃত ফারুক শেখের ছেলে। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিদের সূত্র জানায়, সকাল আটটার দিকে নাশতা খেয়ে বাড়ির সামনের বাগানে খেলতে যায় ফাহিম। সেখানে পড়ে থাকা ব্যাগে লাল স্কচটেপ প্যাঁচানো বল দেখতে পেয়ে তা হাতে তুলে নেয় সে। পরে স্কচটেপটি খুলতে গেলে সেটি বিস্ফোরিত হয়। এতে গুরুতর আহত হয় সে। তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে গুরুতর অবস্থায় তাকে প্রথম কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

বেলা তিনটার দিকে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডের একটি বিছানায় শুয়ে আছে শিশু ফাহিম। একটু পরপর ব্যথায় কাতরাচ্ছে সে। পাশে বসে আসে তার নানি। ফাহিমের পুরো মাথায় ব্যান্ডেজ লাগানো। চোখ খুলতে পারছে না। চোখগুলো ফুলে আছে। বুকেও রয়েছে ক্ষত।
হাসপাতালে ফাহিমের সঙ্গে এসেছেন তার নানি দিলরুবা বেগম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফাহিমের বাবা নেই। ছোটবেলা থেকেই আমার কাছে থেকে বড় হচ্ছে। ফাহিম এখন কথা বলতে পারছে না। আমি সবার কাছে সহযোগিতা চাই। দয়া করে সবাই এগিয়ে আসুন, আমাদের পাশে দাঁড়ান।’

চিকিৎসা কর্মকর্তা অখিল সরকার বলেন, ‘শিশুটির শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বিশেষ করে মাথা ও বুকে ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। আমরা সাধ্যমতো চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি।’

কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্দু বালা বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ফাহিম ককটেল বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।