অর্থপাচারের অভিযোগ, দুই ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদ

অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দুবাইয়ে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে দুই ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বুধবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তাঁদের দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সংস্থার পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন ও সহকারী পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান।

আজ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় রোজা প্রোপার্টিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাঈম উদ্দিন আহম্মেদ ও পরিচালক আশফাক উদ্দিন আহম্মেদকে।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, ৬ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদে দুই ব্যবসায়ী অনুসন্ধানাধীন বিষয়ে অনেক তথ্য দিয়েছেন। আরও তথ্য জানতে তাঁদের আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে জানা গেছে।

এর আগে গত সপ্তাহে একই অভিযোগে আরও ৮ ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁরা হলেন আরএকে পেইন্টস লিমিটেডের পরিচালক এস এ কে ইকরামুজ্জামান, তাঁর ছেলে এবং আরএকে পেইন্টস ও আরএকে কনজ্যুমার প্রোডাক্টসের পরিচালক কামার উজ্জামান, আরএকে কনজ্যুমার প্রোডাক্টস লিমিটেডের পরিচালক মো. আমির হোসাইন ও এম এ মালেক, ঝুলপার বাংলাদেশ লিমিটেড ও রাকিন ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির পরিচালক সৈয়দ এ কে আনোয়ারুজ্জামান, আরএকে পাওয়ার লিমিটেডের পরিচালক মাকসুদুল ইসলাম ও মো. মাকসুদুল ইসলাম ও আরএকে সিরামিকসের স্বতন্ত্র পরিচালক ফাহিমুল হক।

তবে একই অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হলেও বিএনপির সাবেক নেতা মোসাদ্দেক আলী ফালু, আরএকে পেইন্টস লিমিটেডের পরিচালক শায়লিন জামান আকবর ও স্টার সিরামিকস লিমিটেডের পরিচালক প্রতিমা সরকার হাজির হননি। তাঁদের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগে দুদক আইনি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বলে সংস্থাটির একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
এর আগে গত ২ আগস্ট মোসাদ্দেক আলী ফালুসহ ৯ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ইমিগ্রেশনে চিঠি পাঠায় দুদক। চিঠিতে বলা হয়, ওই ৯ জনের বিরুদ্ধে ৮ মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের প্রায় ৬৫ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮২ টাকা হিসাবে) দুবাইয়ে পাচার করে অফশোর কোম্পানি খুলে বিনিয়োগ, দুবাইয়ে আরও শত কোটি টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। দুদকের অনুসন্ধানেও এর প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। দুদক বিশ্বস্ত সূত্রে জেনেছে, এসব ব্যক্তি দেশ ছেড়ে অন্য দেশে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তাই তাঁরা যাতে দেশ ছেড়ে অন্য দেশে চলে যেতে না পারেন, সে বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয় দুদকের পক্ষ থেকে।
যাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় তাঁরা হলেন: বিএনপির নেতা ও সাবেক সাংসদ মোসাদ্দেক আলী ফালু, আরএকে পেইন্টস ও আশালয় হাউজিংয়ের পরিচালক এস এ কে একরামুজ্জামান, তাঁর ছেলে এবং আরএকে পেইন্টস ও আরএকে কনজ্যুমার প্রোডাক্টসের পরিচালক কামার উজ জামান, ঝুলপার বাংলাদেশ লিমিটেড ও রাকিন ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির পরিচালক সৈয়দ এ কে আনোয়ারুজ্জামান, আরএকে পাওয়ার লিমিটেডের পরিচালক মাকসুদুল করিম, আরএকে কনজ্যুমার প্রোডাক্টসের দুই পরিচালক মোহাম্মদ আমির হোসেন ও এম এ মালেক, রোজা প্রোপার্টিজের পরিচালক আশফাক উদ্দিন আহমেদ এবং আরএকে পেইন্টস ও আরএকে ক্যাপিটাল লিমিটেডের পরিচালক শায়লিন জামান আকবর।
পরে গত সোমবার নাঈম উদ্দিন আহম্মেদের বিদেশযাত্রায়ও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দুদক। নাঈম উদ্দিন আহম্মেদ মোসাদ্দেক আলী ফালুর ভাই নুরুদ্দিন আহম্মেদের ছেলে।