ধুলোমাখা পথ থেকে আলোঝলমলে মঞ্চে

>
বেলাল বয়াতি
বেলাল বয়াতি

• জন্মান্ধ এ শিল্পীর জন্ম জয়পুরহাটে
• ছোটবেলা থেকে দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়ছেন
• হাটে-বাজারে, পথে গান গাইতেন
• প্রথম আলো অনলাইন, ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে চারটি গান প্রকাশ
• আজ প্রথমবার মঞ্চে গাইবেন

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার জন্মান্ধ পথবাউল বেলাল বয়াতি প্রথমবারের মতো মঞ্চে গান গাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। আজ শুক্রবার বগুড়ার শহীদ টিটু মিলনায়তনে আয়োজিত লোকসংগীত উৎসবে নামকরা বাউলশিল্পীদের সঙ্গে একই মঞ্চে গান গাইবেন তিনি।

অজপাড়াগাঁয়ে থাকা বেলাল বয়াতির অসাধারণ গায়কি কণ্ঠের চারটি গানের ভিডিও সম্প্রতি প্রথম আলোর অনলাইন, ইউটিউব ও ফেসবুকে প্রচারিত হয়। এরপর নানা অনুষ্ঠানের প্রস্তাব আসা শুরু করে।

‘সত্য বল, সুপথে চল’ শীর্ষক স্লোগানে এ লোকসংগীত উৎসবের আয়োজন করেছে জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সদস্যভুক্ত সংগঠন বগুড়া বাউল গোষ্ঠী। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় এ উৎসব শুরু হবে বলে জানা গেছে।

বগুড়া বাউল গোষ্ঠীর সম্পাদক মাসউদ করিম বলেন, উৎসবে বেলাল বয়াতিকে সম্মাননা দেওয়া হবে।

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের মান্দাই গ্রামে হতদরিদ্র এক পরিবারে জন্ম বেলাল বয়াতির। তাঁর শৈশব কেটেছে জয়পুরহাট শহরের খনজনপুর ক্রিশ্চিয়ান মিশনে। সেখানেই বাউলগানে হাতেখড়ি তাঁর। যৌবনে বাউলিয়ানা জীবনকেই বেছে নেন তিনি। পথেঘাটে, হাটবাজারে মাটি-মানুষের গান গেয়ে জীবন-জীবিকা চালান।

বেলাল বলেন, গান গেয়ে দিনে গড়ে ৩০০-৪০০ টাকা উপার্জন করেন। ওইটুকু উপার্জন দিয়েই চার সদস্যের মুখে ভাত তুলে দেন তিনি। তাঁর চারটি গানের ভিডিও সম্প্রতি প্রথম আলোর অনলাইন, ইউটিউব ও ফেসবুকে প্রচারিত হয়। প্রথম আলোয় গান প্রচারের পর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন জনপ্রিয় একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানের নির্মাতা। তিনি বেলাল বয়াতিকে নিয়ে অনুষ্ঠান নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানান। তাঁর গান শুনে মুগ্ধ হয় বগুড়া বাউল গোষ্ঠী। লোকসংগীত উৎসবে গান গাওয়ার আমন্ত্রণ জানায় তাঁকে।

পথেঘাটে গান গেয়ে জীবন চালানো বেলাল বয়াতি প্রথমবারের মতো আলো ঝলমলে মঞ্চে সংগীত পরিবেশনের সুযোগ পেয়ে আবেগে আপ্লুত। তিনি বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে বলেন, ‘পথে বড় হয়েছি। পথই সঙ্গী, পথই ঠিকানা আমার। পথের সেই মানুষটি আমি আজ আলো-আঁধারির বিশাল মঞ্চে গান গাওয়ার সুযোগ পেতে যাচ্ছি। ইউটিউবে আমার গান দেখে এলাকার সবাই প্রশংসা করছেন। টেলিভিশনে গান গাওয়ার সুযোগ পেতে যাচ্ছি। সবই সম্ভব হয়েছে প্রথম আলোর জন্য। অন্ধ এই বাউলকে পথ থেকে আলোর ঠিকানার সন্ধান দিয়েছে তারা।’