দেশে ঘণ্টায় ১১টি শিশুর মৃত্যু হচ্ছে

>

• বৈশ্বিক শিশু মৃত্যুর প্রবণতা নিয়ে চারটি সংস্থার নতুন প্রতিবেদন
• ২০১৭ সালে বিশ্বে ১৫ বছরের কম বয়সী ৬৩ লাখ শিশুর মৃত্যু হয়
• প্রতি পাঁচ সেকেন্ডে বিশ্বে একটি শিশুর মৃত্যু হচ্ছে
• বাংলাদেশ ২৮ দিনের কম বয়সী শিশুর মৃত্যু কমাতে পারছে না
• নবজাতক মৃত্যু কমাতে সরকার দেশব্যাপী কর্মসূচি নিয়েছে 

দেশে অপুষ্টি, মৌলিক স্বাস্থ্যসেবার ঘাটতি, বিশুদ্ধ পানির অভাব ও পয়োব্যবস্থার স্বল্পতার কারণে প্রতি ঘণ্টায় পাঁচ বছরের কম বয়সী ১১টি শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। অথচ এসব মৃত্যু প্রতিরোধ সম্ভব। বৈশ্বিক শিশু মৃত্যুর প্রবণতা নিয়ে ইউনিসেফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘের জনসংখ্যা বিভাগের দেওয়া পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

বিশ্বে শিশুমৃত্যুর হার ও প্রবণতা নিয়ে আন্তর্জাতিক এই চারটি সংস্থা গতকাল বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক, জেনেভা ও ওয়াশিংটন থেকে একযোগে নতুন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে বিশ্বে ১৫ বছরের কম বয়সী ৬৩ লাখ শিশুর মৃত্যু হয়। অর্থাৎ প্রতি পাঁচ সেকেন্ডে বিশ্বে একটি শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। এসব মৃত্যু প্রতিরোধ সম্ভব।

ইউনিসেফের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে প্রতি ১ হাজার শিশুর মধ্যে ৩২টি শিশু মারা যায়। বাংলাদেশ শিশুমৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে সক্ষম হয়েছে। ১৯৯০ সালে এই বয়সী ৫ লাখ ৩২ হাজার শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। আর গত বছর ১ লাখ শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। সেই হিসাবে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশে ঘণ্টায় ১১টি শিশুর মৃত্যু হচ্ছে।

ইউনিসেফ বলছে, এক লাখ শিশুর মধ্যে অর্ধেকের কিছু বেশি শিশুর মৃত্যু হচ্ছে বয়স ২৮ দিন পূর্ণ হওয়ার আগে। অর্থাৎ বাংলাদেশে প্রতিবছর ৫০ হাজারের বেশি নবজাতকের মৃত্যু হচ্ছে বা ঘণ্টায় ৬টি নবজাতকের মৃত্যু হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বাংলাদেশ পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যুহার কমাতে পারলেও নবজাতক বা ২৮ দিনের কম বয়সী শিশুর মৃত্যু উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারছে না। বাংলাদেশে নবজাতক মৃত্যুর প্রধান কারণ জন্মের সময় শ্বাসকষ্ট, সংক্রমণ ও কম ওজনজনিত জটিলতা।

একাধিক সরকারি কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেছেন, বাংলাদেশ নবজাতকের মৃত্যুহার কমানোর ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য) মোহাম্মদ শরিফ প্রথম আলোকে বলেন, এই মাসেই জাতীয় নবজাতক স্বাস্থ্য কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে ইউনিয়ন পর্যায়ের সেবাকেন্দ্রে জন্মের পর নবজাতকের নাভিতে দেওয়া ওষুধ, সংক্রমণ প্রতিরোধে অ্যান্টিবায়োটিকের সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। পাশাপাশি ‘ক্যাঙারু মাদার কেয়ার’ নামের সেবাও দেশব্যাপী বিস্তৃত করা হবে।

বৈশ্বিক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে বছরে পাঁচ বছরের কম বয়সী ৫৪ লাখ শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। এর অর্ধেক হচ্ছে আফ্রিকার দেশগুলোতে। ৩০ শতাংশ মারা যাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে। আফ্রিকার উপসাহারা এলাকার প্রতি ১৩টি শিশুর ১টি মারা যায় পাঁচ বছর হওয়ার আগেই। উন্নত দেশগুলোতে ১৮৫ জনে ১ জন মারা যায়।