১৬ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর চলল ৩ ফেরি

পদ্মা নদীতে নাব্যতা সংকট থাকায় ব্যাহত হচ্ছে ফেরি চলাচল। ছবি: অজয় কুন্ডু
পদ্মা নদীতে নাব্যতা সংকট থাকায় ব্যাহত হচ্ছে ফেরি চলাচল। ছবি: অজয় কুন্ডু

পদ্মা নদীতে নাব্যতা সংকট থাকায় মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে ব্যাহত হচ্ছে ফেরি চলাচল। এই নৌপথে সচল ১৯টি ফেরির মধ্যে চলছে মাত্র ৩টি। চাহিদা অনুসারে ফেরি না চলায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এই নৌপথের চলাচলকারীরা।

এদিকে নৌপথের লৌহজং টার্নিং পয়েন্টে একাধিক ড্রেজার বসিয়ে খননকাজ চলমান থাকায় গতকাল সোমবার বিকেল ৪টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় ঘাট কর্তৃপক্ষ। তবে দিনের বেলায় স্বাভাবিক রয়েছে লঞ্চ ও স্পিডবোটের চলাচল।
বিআইডব্লিউটিসি কাঁঠালবাড়ি ঘাট সূত্র জানায়, নৌপথের লৌহজং টার্নিং পয়েন্টে দেখা দিয়েছে নাব্যতা সংকট। এ জন্য ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় ঘাটের উভয় পারে আটকা পড়ে কয়েক শ যানবাহন। এখন ১৯টি ফেরির মধ্যে ৩টি ফেরিতে যাত্রীবাহী বাস, অ্যাম্বুলেন্স ও পচনশীল দ্রব্যের যানবাহনকে অগ্রাধিকার দিকে পার করা হচ্ছে। এদিকে নদীতে নাব্যতা সংকট দূর করতে ড্রেজিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ঘাট এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মোতায়েন রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
বিআইডব্লিউটিসি কাঁঠালবাড়ি ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘চ্যানেলে ড্রেজিং কাজ চলছে। এর কারণে ফেরি না চলার মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ ড্রেজিং বিভাগের প্রকৌশলীদের কথামতো সোমবার বিকেল থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত আমরা সব কয়টি ফেরি বন্ধ রাখি। পরে সকাল ৮টা থেকে ৩টি ফেরি চলাচল করছে। আশা করছি নৌপথের এ সমস্যা আমরা দ্রুত কাটিয়ে উঠব।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে গিয়ে দেখা গেছে, ঘাটের চারটি সংযোগ সড়কেই রয়েছে যানবাহনের সারি। তবে টার্মিনাল কানায় কানায় ভর্তি রয়েছে পণ্যবাহী ট্রাকে। ঘাটের পন্টুনগুলোতে দেখা যায়নি কোনো ফেরি। ১ নম্বর ঘাটের পন্টুনে একটি রো রো ফেরি ও ৪ নম্বর ঘাটে একটি কে-টাইপের ফেরি নোঙর করে রাখা। লঞ্চ ও স্পিডবোটে যাত্রীদের চাপ বেশি ছিল।
চট্টগ্রামগামী ট্রাকের চালক সোবাহান সরদার বলেন, ‘ঘাটে আজ ১০ দিন ধরে আটকা পড়েছি। ঘাটের লোকেরা বলছে নাব্যতা সংকট থাকায় ফেরি ঠেকে যান চলে। তাই ফেরি ঠিকমতো চলতে পারে না। তাই আমাদের বিকল্প পথ ধরে যেতে বলছে। কিন্তু লাইন ভেঙে আমাদের বিকল্প পথ ধরে যাওয়া সম্ভব না।’

ঢাকাগামী ট্রাকের চালক মো. কাওলসার বলেন, বাগেরহাট থেকে ৬দিন আগে ঘাটে এসেছি। এখানে থাকতে হচ্ছে, ঘুমাতে হচ্ছে। এখানে হোটেলের খাবারের খুব দাম। বেকার এভাবে কত দিন পড়ে থাকব? আমরা এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চাই।’

ঢাকাগামী যাত্রী সঞ্জয় কুণ্ডু বললেন ‘মাদারীপুর থেকে বাসে করে ঘাটে আসি সকাল ১০টায়। পরে এক ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকার পরে একটি ফেরিতে ওঠার সুযোগ পাই। কিন্তু ফেরিটি টার্নিং পয়েন্টের চ্যানেলটি ঘুরতে গেলে ডুবোচরে আটকে যায়। এ কারণে শিমুলিয়া ঘাটে আসতে আমাদের দ্বিগুণ সময় ব্যয় হয়েছে।’

কাঁঠালবাড়ি ঘাটের ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট কুশল কুমার সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত কয়েক দিন ধরে ঘাটের অবস্থা বেশি খারাপ। ফেরি চলছেই না। যা দু-একটা চলে তা দিয়ে সব যানবাহন পারাপার করা সম্ভব নয়। ফেরি চলাচল ব্যাহত থাকায় টার্মিনাল ও ঘাটের সংযোগ সড়কে আটকা পড়েছে শতাধিক যানবাহন।’