সাতক্ষীরায় গৌতম হত্যা মামলায় ৪ জনের ফাঁসি

সাতক্ষীরায় কলেজছাত্র গৌতম হত্যা মামলায় চার আসামিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে এ মামলার ছয় আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অপর দুই আসামি পলাতক। আজ বুধবার বেলা ১১টায় সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার এ রায় ঘোষণা করেন।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার বহেরা গ্রামের আলী আহম্মেদ ওরফে শাওন, ভাড়খালী গ্রামের শাহাদাৎ হোসেন, মহাদেবনগর গ্রামের সাজু শেখ ও নাজমুল হোসেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের বয়স ২৮ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে।

খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন ওমর ফারুক, নূর আহম্মেদ মুক্ত, মহসিন আলী, কবিরুল ইসলাম মিঠু, জামসেদ আলী ও ফিরোজা খাতুন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে ২০১৬ সালের ১৩ ডিসেম্বর রাত সাড়ে আটটার দিকে এটি নির্মাণাধীন বাড়িতে হত্যা করা হয় গৌতম সরকারকে। গৌতম সরকারকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি সীমান্ত ডিগ্রি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন । সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঘোনা ইউনিয়নের মহাদেবনগর গ্রামের ইউপি সদস্য গণেশ সরকারের ছেলে তিনি। পরে লাশের বিভিন্ন স্থানে দড়ি দিয়ে ১২টি ইট ঝুলিয়ে পার্শ্ববর্তী মোকলেছুর রহমানের পুকুরে বাঁশের সঙ্গে বেঁধে ডুবিয়ে দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির বাবা গণেশ সরকার বাদী হয়ে আলী আহম্মেদ শাওন, শাহাদাৎ হোসেন, সাজু শেখ, নাজমুল হোসেন, মুহসিন আলী ও কবিরুল ইসলাম মিঠুর নামে ২০১৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর থানায় হত্যা মামলা করেন।

আসামিদের তথ্য অনুযায়ী পরদিন ওমর ফারুক, নূর আহম্মেদ মুক্ত ও জামসেদের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি সম্পূরক অভিযোগ দায়ের করা হয়। নাজমুল, শাহাদাৎ ও সাজু শেখ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

এ ঘটনায় পুলিশ সাজু শেখের মা ফিরোজা খাতুনকে গ্রেপ্তার করে। ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর সম্পূরক অভিযোগটি আদালতে পাঠানো হয়। সদর থানার উপপরিদর্শক আসাদুজ্জামানের কাছ থেকে মামলাটির তদন্তভার ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক আশরাফুল ইসলামের কাছে ন্যস্ত করা হয়। পরে একই বছরের ১৮ এপ্রিল ১০ জন আসামির নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তিনি। ২০১৮ সালের ১ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়।

এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাঁদের ফাঁসির আদেশ দেন। এ ছাড়া ছয়জন আসামির বিরুদ্ধে দোষ প্রমাণ না হওয়ায় খালাস দেওয়া হয়েছে।

মামলায় বাদী গণেশ সরকার বলেন, এ রায়ে তিনি খুশি নন। প্রমাণিত হওয়ার পরও দোষী ব্যক্তিদের খালাস দেওয়া হয়েছে। তিনি উচ্চ আদালতে যাবেন।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নাজমুল হোসেন ছেলে রেজাউল শেখ বলেন, রায়ের বিস্তারিত কপি পাওয়ার পর তাঁরা পদক্ষেপ নেবেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তপন কুমার দাস বলেন, রায় ঘোষণার সময় শাহাদাৎ হোসেন ও নাজমুল হোসেন আদালতে হাজির ছিলেন। তবে আলী আহম্মেদ শাওন ও সাজু শেখ পলাতক।