অনুপম নিসর্গে ছন্নছাড়া আয়োজন

নিরাপত্তাবেষ্টনী পেরিয়ে বাঘের খাঁচার একেবারে কাছাকাছি ঢুকে পড়েছেন শিশুসহ দর্শনার্থী। সম্প্রতি বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানায়।  ছবি: আশরাফুল আলম
নিরাপত্তাবেষ্টনী পেরিয়ে বাঘের খাঁচার একেবারে কাছাকাছি ঢুকে পড়েছেন শিশুসহ দর্শনার্থী। সম্প্রতি বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানায়। ছবি: আশরাফুল আলম
>

• আয়তনের দিক থেকে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা
• প্রাণী রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার সুনাম নেই এ চিড়িয়াখানার
• ১৯৭৪ সালের ২৩ জুন এই চিড়িয়াখানা আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়
• চালুর পর কোনো রকম পরিকল্পনা ছাড়াই চিড়িয়াখানা গড়ে উঠতে থাকে
• নৈসর্গিক অবস্থানে জাতীয় চিড়িয়াখানা হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘শিব গড়তে হনুমান’

বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানায় ঢোকার মুখে থমকে গেলাম। টিকিট কেনার বুথের খোলা মুখটি অনেকটা গর্তের মতো। এর ভেতর হাত ঢুকিয়ে টিকিটের দাম চুকিয়ে টিকিট নিতে হয়। ভিড়ের দিনে এই গর্তে ঢোকানো হাত ভাঙা বিচিত্র নয়!

টিকিটের দাম ৩০ টাকা। পৃথিবীর অন্যান্য চিড়িয়াখানার তুলনায় সস্তা। টরন্টো চিড়িয়াখানা ৩০ কানাডিয়ান ডলার, ভারতের মহীশুর চিড়িয়াখানা ৫০ রুপি (রোববার ৬০ রুপি), দিল্লি চিড়িয়াখানা ৪০ রুপি এবং কলকাতা চিড়িয়াখানায় ৩০ রুপি টিকিটের দাম।

মূল তোরণ পেরিয়ে ভেতরে তাকিয়ে চোখ জুড়িয়ে গেল। বিস্তৃত এলাকায় গাছগাছালির অনুপম নিসর্গ। দক্ষিণে হরিণের বেষ্টনীর পাশেই প্রশস্ত জলাশয়। পাকা রাস্তা ধরে একটু এগোতেই হাতের ডানে তথ্যকেন্দ্র। সস্তার তিন অবস্থার শুরু এখান থেকে। তথ্যকেন্দ্রটি প্রায় জীর্ণ। চিড়িয়াখানা-সংক্রান্ত পুস্তিকা, ম্যাপ, স্যুভেনির পাওয়া যাবে কি না—জানতে চাইলে কর্মকর্তা অবলীলায় জানালেন, ‘কিছু নেই।’

দ্বিতীয় দফায় যখন যাই, তখন একটি পুস্তিকা কিনতে পেরেছি তথ্যকেন্দ্র থেকে। তাতে ভুল আছে অনেক। যেমন বাঘের ব্যাপারে ইংরেজিতে লেখা, এরা মাংসাশীদের মধ্যে আকারে সবচেয়ে বড়। ভুল তথ্য। মেরু ভালুক মাংসাশীদের মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রাণী। সিংহ সম্পর্কে ইরেজিতে লেখা, এরা ভারত ও আফ্রিকার গভীর জঙ্গলে বাস করে। ভুল। সিংহ খোলা প্রান্তরে ঘাসের জঙ্গলে বাস করে।

পুস্তিকাটিতে তথ্য দেওয়া আছে শিম্পাজির, কিন্তু ছবি ওরাংওটাংয়ের। রিসাস বানর বলে যে ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছে, তা আর যা-ই হোক উপমহাদেশের কোনো বানরের ছবি নয়। সবচেয়ে মজার বিষয়, ২০১৫ সালে ঢাকা চিড়িয়াখানার নাম বদলে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা রাখা হলেও গাইড পুস্তিকায় এখনো ঢাকা চিড়িয়াখানা লেখা।

জানতে চাইলে জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর এস এম নজরুল ইসলাম বললেন, ‘একটি হালনাগাদ প্রাণীর তালিকা ও গাইড বই প্রকাশের জন্য ছাপাখানায় দিয়েছি।’

তথ্যকেন্দ্র থেকে আরেকটু এগোতেই হাতের বাঁয়ে পশু হাসপাতাল, সামনে জনতা পরিবৃত বেশ উঁচু খাঁচা। কয়েকটি কিশোর বেষ্টনীর ভেতরে ঢুকে বানরদের বাদাম দিচ্ছে ও ঢিল ছুড়ছে। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ অবশ্য বিজ্ঞপ্তিতে লিখেছে প্রাণীদের উত্ত্যক্ত না করতে, খাবার না দিতে। বানরের খাঁচা থেকে চিমসে গন্ধ আসছে। পচা ফলমূল, বানরের প্রস্রাব মিলে এই গন্ধ। বানরের প্রস্রাবের এলিফাটিক অ্যাসিড এ গন্ধের প্রধান উৎস। খাঁচা খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করলে এই গন্ধ কিছুটা কমবে, কিন্তু একেবারে যাবে না।

দর্শনার্থীদের আনা খাবার প্রাণীদের দেওয়ার বিপক্ষে চিড়িয়াখানার কিউরেটরও। তিনি বলেন, ‘চিড়িয়াখানার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি আছে। তাদের অনুমতি পেলে আমি এভাবে খাবার আনা ও দেওয়া বন্ধ করে দেব।’

বানরের খাঁচার পাশ দিয়ে একটি পাকা রাস্তা উত্তর-পশ্চিমে চলে গেছে। এর পূর্বে একটি রেস্তোরাঁ, পশ্চিমে পাখিদের বড় আকারের উঁচু খাঁচা। এখানে রয়েছে ধনেশ, হাড়গিলা, মদনটাক, লোহারজাং বা ব্ল্যাক নেকড স্টার্ক। এগুলো সবই এ দেশের প্রাণী। যদিও হাড়গিলা, লোহারজাং প্রায় নেই বললেই চলে। ধনেশ, মদনটাকও অতি বিপন্ন। চিড়িয়াখানার কর্তৃপক্ষ চাইলে এদের প্রদর্শনীতে না রেখে বন্দী প্রজননের ব্যবস্থা করতে পারত। এখন বোধ হয় আর সম্ভব নয়। কারণ, এরা প্রায় শেষ বয়সে পৌঁছে গেছে।

পূর্ব দিকে হরিণের বেষ্টনী। এখানে গড়ে হরিবোল অবস্থা। বেষ্টনীতে চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, সাম্বার হরিণ—সব আছে। চিত্রা হরিণের আরও একটি বেষ্টনী এখানে ঢুকতেই দেখা গিয়েছিল। আরেকটি খাঁচার মধ্যে এদের ঢোকানোর অর্থ পরিষ্কার হলো না।

নিরাপত্তাজালের ফাঁক গলে মাথা বের করে দিয়েছে অজগর। গতকাল বিকেলে।
নিরাপত্তাজালের ফাঁক গলে মাথা বের করে দিয়েছে অজগর। গতকাল বিকেলে।

চিড়িয়াখানার উত্তর-পূর্বের ঢালে বাঘ-সিংহের জন্য আছে খোলা হাওয়ার খাঁচা ছাড়া প্রদর্শনীর বেষ্টনী। ১৯২২ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তিয়াগো চিড়িয়াখানার প্রতিষ্ঠাতা ওয়েজফোর্থ এই পদ্ধতি প্রথম প্রণয়ন করেন। পদ্ধতিটি এখন আধুনিক চিড়িয়াখানার ভাবনার স্মারক। আধুনিক চিড়িয়াখানায় প্রাণীর ব্যবহারিক আচরণ সমীক্ষা ও প্রজননবিজ্ঞান প্রচলন করে সান্তিয়াগো চিড়িয়াখানা বিশ্বখ্যাতি লাভ করে।

এখানকার বাঘটি গরমে অতিষ্ঠ হয়ে তার বেষ্টনীর ভেতর ছোট্ট ঘরটিতে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে গেলে তীব্র কটু গন্ধ নাকে এল। আমি সদ্য মারা পড়া সুন্দরবনের বাঘের গন্ধ শুঁকেছি। হালকা একটা গন্ধ আছে বটে, কিন্তু অস্বস্তিকর নয়। এখানে এমন গন্ধ বের হয় কেন! বাঘের প্রস্রাবই মূলত এই গন্ধ-উৎপাদক। প্রতিটি স্তন্যপায়ী (অন্যরাও) বর্জ্য ত্যাগ করে। বর্জ্যের মাধ্যমে দেহের টক্সিন, হজমকৃত বর্জ্য, মৃত কোষ বের হয়ে যায়। আবার প্রস্রাবের সঙ্গে তীব্র স্থায়ী গন্ধি ফেরমেন থাকে।

চিড়িয়াখানার সম্পদের মধ্যে দুটি দারুণ হ্রদ আছে। এখানে শীতে মৌসুমি পরিযায়ী পাখি আসে। এখানে মাছ চাষ করা এবং মাছ ধরার অনুমতি দেওয়া কতটুকু যুক্তিসম্মত? জবাবে কিউরেটর নজরুল ইসলাম বললেন, ‘চিড়িয়াখানার বাইরে বেড়িবাঁধ দেওয়ার পর আর পরিযায়ী পাখি আসে না। ফলে চিড়িয়াখানার আয় বাড়ানোর জন্য কিছু মাছ ছেড়েছি। দর্শনার্থীরা টাকার বিনিময়ে সেখানে ছিপ দিয়ে মাছ ধরতে পারে। এ থেকে আমরা বছরে ১৬ লাখ টাকা উপার্জন করছি। আর যে মাছ রয়ে যায়, তা আমরা দরপত্রের মাধ্যমে বিক্রি করি।’

তবে বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞ রেজা খান বললেন, চিড়িয়াখানার লেকে মাছ ছেড়ে তা বাণিজ্যিকভাবে ধরা চিড়িয়াখানার ধারণার বিরোধী। এই লেকগুলো স্থলজ বন্য প্রাণীর জন্য তৈরি করা হয়েছিল। হাঁস, সাপ, ব্যাঙসহ নানা জলচর ও উভচর প্রাণী ছাড়াও বাঘ যাতে সেখানে পানি খেতে যেতে পারে, সেই ব্যবস্থা রাখা উচিত।

পশ্চিমে যেতে উল্লুকের খাঁচায় দেখা গেল দারুণ ভিড়। আবালবৃদ্ধবনিতা এই দড়াবাজ প্রাণীটির স্বতঃস্ফূর্ত ছোটাছুটি বিপুল বিস্ময়ে উপভোগ করছে।

এখনকার পৃথিবীতে বন্য প্রাণীর ছবি—সেটা বন্য বা আটক যে পরিবেশেই তোলা হোক না কেন, অনেকটা বন্য প্রাণী সংরক্ষণের হাতিয়ার হিসেবে দেখা হয়। বিদেশের কিছু কিছু চিড়িয়াখানায় ছবি তোলার সুযোগ করে দেওয়া আছে। আবার কাচের ঘরে কাচগুলো এমন কোণে বসানো, যাতে এর ওপর পড়া প্রাণীর প্রতিফলন ছবিতে চলে না আসে।

জাতীয় চিড়িয়াখানার সাপের ঘরটি সবচেয়ে বিশ্রীভাবে বসানো। মান্ধাতার আমলের ছোট ছোট খুপরি। কাচগুলো খাড়া করে বসানো। ভেতরে আলো নেই। ছবি তোলা কেন, খালি চোখে দেখাই দায়।

একের পর এক শূন্য খাঁচা।  ছবি: প্রথম আলো
একের পর এক শূন্য খাঁচা। ছবি: প্রথম আলো

সাপের খাঁচার আগে মাঝারি ছোট প্রাণীদের একটা চমৎকার বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছিল। সেখানে মেছো বিড়াল, মেঘলা চিতা, বনবিড়াল, বাগডাশ, খাটাশ, ভোঁদড়, মুখপোড়া হনুমান, লালচে হনুমানসহ বেশ কয়েকটি দেশি প্রজাতির প্রাণী ছিল। এই প্রাণীগুলো বর্ণিল ও মানুষের আধা চেনা-অচেনায় ছিল বলে এদের খাঁচার কাছে দর্শকেরা বেশ কিছুটা সময় কাটাতেন। এই খাঁচাগুলো এখন কিছু বেবুন, হনুমান, আফ্রিকান বাঁদর দিয়ে পূর্ণ করা।

পশ্চিম মুখে হাঁটতে হাঁটতে দেখা গেল তৃণভোজী প্রাণীদের। চিড়িয়াখানার ভেতরে প্রচুর গাছপালা আছে। কিন্তু তৃণভোজী প্রাণিকুলের বেষ্টনী ঊষর।

শুরুতে হাইকোর্টের দক্ষিণ সীমানাজুড়ে, ছোট্ট পরিসরে চিড়িয়াখানার স্থান করা হয়েছিল। সেটি দেখার সুযোগ হয়েছিল আমার। গোটা দুই চিতাবাঘ, চিত্রা হরিণ, বাগডাশের কথা মনে আছে।

ষাটের দশকেই তখনকার সময়ের কৃষি সহযোগিতা ও সহায়তা মন্ত্রণালয়ের চাহিদা অনুযায়ী, চিড়িয়াখানার জন্য ২১৩ দশমিক ৪১ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ১৯৬৮ সাল থেকেই মিরপুরের গজারি বনে চিড়িয়াখানা সরিয়ে আনা শুরু হয়। ১৯৭৪ সালের ২৩ জুন এই চিড়িয়াখানা আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়। মিরপুরে কোনো রকম পরিকল্পনা ছাড়াই চিড়িয়াখানা গড়ে উঠতে থাকে। অপেশাদার, অনভিজ্ঞ নির্বাহী, হাতুড়ে পশু ডাক্তার, পশু রক্ষণাবেক্ষণকারীদের নিয়ে এই যাত্রা শুরু হয়। হঠাৎ করে কোনো প্রাণী এল তো তার জন্য একটা বেষ্টনী তৈরি হলো—এই নিয়মে বর্তমান অবস্থায় পৌঁছেছে চিড়িয়াখানা। যদিও চিড়িয়াখানা ব্যবস্থাপনার একটি জাতীয় পরামর্শক বোর্ড আছে। কিন্তু কেউ এর তোয়াক্কা করে বলে মনে হয় না। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিরাই ঠিক করেন, কী কী প্রাণী চিড়িয়াখানায় থাকবে। ফলে এত বিস্তৃত জায়গায়, এত চমৎকার নৈসর্গিক অবস্থানে জাতীয় চিড়িয়াখানা হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘শিব গড়তে হনুমান’।

বিশ্বের আধুনিক চিড়িয়াখানার নকশা তৈরি করা হয় অভিজ্ঞ জীববিজ্ঞানী, চিড়িয়াখানা বোর্ড, অভিজ্ঞ চিড়িয়াখানা পরিচালকের চাহিদায়, নিসর্গ স্থপতির নকশায়। নকশার সময় মাথায় রাখতে হয় বিশ্বের ছয়টি জু-জিওগ্রাফিক বাস্তুতন্ত্রকে। এগুলো হলো প্যালে আর্কটিক, নিউ আর্কটিক, নিও-ট্রপিক্যাল, ইথিওপিয়ান, ওরিয়েন্টাল ও অস্ট্রেলিয়ান বাস্তুতন্ত্র। চিড়িয়াখানার ভেতরে এসব বাস্তুতন্ত্র কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়, যাতে দর্শক প্রাণী ও তার আবাসস্থল সম্পর্কে জানতে পারে। এই জানা বন্য প্রাণী সংরক্ষণের প্রাথমিক অনুপ্রেরণা। চিড়িয়াখানার ভেতর শিশুপার্ক, পিকনিক স্পট, মাছ ধরার ব্যবস্থা শুধু বন্য প্রাণীর প্রতি মানুষের আগ্রহ নষ্টই করে না, প্রাণীদেরও বিরক্তির কারণ হয়। এই এলাকাগুলোতে বাংলাদেশের নিজস্ব প্রাণীর একটি সংগ্রহশালা, প্রজাপতির ঘর, অ্যাকুরিয়াম—যেখানে মাছ, হাঙর, ডলফিন থাকবে।

জাতীয় চিড়িয়াখানার ওয়েবসাইটের হিসাব অনুযায়ী, কমবেশি ১০ হাজার মানুষ প্রতিদিন চিড়িয়াখানায় আসে। এই বিস্তৃত এলাকায়
সপরিবার হাঁটতে হলে মাঝেমধ্যে জিরিয়ে নিতে হয়। তার জন্য কিছু শেড কর্তৃপক্ষ তৈরি করেছে, কিন্তু জনতার তুলনায় সেগুলো যথেষ্ট নয়। বেশ কয়েকটি পরিবারের সদস্যদের দেখলাম শতরঞ্জি পেতে দুপুরের খাবার খাচ্ছে।

শিশু, বৃদ্ধ, পঙ্গুদের জন্য চিড়িয়াখানার বিস্তৃত এলাকায় ঘোরার কোনো ব্যবস্থা নেই। জাতীয় চিড়িয়াখানাকে একবিংশ শতাব্দীতে আনতে হলে এর পুরো খোলনলচে পাল্টাতে হবে।

চিড়িয়াখানায় পিকনিক স্পট।  প্রথম আলো
চিড়িয়াখানায় পিকনিক স্পট। প্রথম আলো

জাতীয় চিড়িয়াখানা আধুনিকীকরণের প্রধান অন্তরায় সরকারের সদিচ্ছার অভাব। এখনো আমাদের সংসদে চিড়িয়াখানা আইন পাস হয়নি। আমরা ওয়ার্ল্ড অ্যাসোসিয়েশন অব জুস অ্যান্ড অ্যাকুরিয়ামের সদস্য হতে পারিনি এই আইন নেই বলে। প্রাণীদের দুর্বল ব্যবস্থার জন্য আন্তর্জাতিক কুখ্যাতি আছে জাতীয় চিড়িয়াখানার। আমাদের প্রাণী আদান-প্রদান, আন্তর্জাতিক মানের ট্রেনিংয়ের সুবিধা নেই।

আমাদের দুর্ভাগ্য, চিড়িয়াখানা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন। এটা থাকা উচিত ছিল বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের কাছে।

বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞ রেজা খানের মতে, আধুনিক চিড়িয়াখানার মূলমন্ত্র হচ্ছে এটি হবে বন্য প্রাণী সংরক্ষণকেন্দ্রিক প্রদর্শনী কেন্দ্র। একটি চিড়িয়াখানার প্রথম কাজ প্রাণীদের তালিকা তৈরি করে তা জনসমক্ষে রাখা। যাতে সেখানকার প্রাণীদের সম্পর্কে দর্শনার্থীরা ও সরকার অবহিত থাকতে পারে। তা না হলে সেখানে নানা ধরনের কারচুপির সুযোগ থাকে। 

তথ্যসূত্র: বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা ও দ্য টপ টেন লার্জেস্ট জুস ইন দ্য ওয়ার্ল্ড শীর্ষক গ্রন্থ