বীরকন্যা প্রীতিলতার সনদ

প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার
প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার

বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের বিএ (ডিগ্রি) পাসের সনদ ও নম্বরপত্র মিলল ৮৬ বছর পর। এই সনদ উদ্ধারে লেগে ছিলেন কলকাতার নাট্যকার রতন ঘোষ। তিনি শৃণ্বন্তু নামে একটি শ্রুতি নাট্যদলের সভাপতি। বীরকন্যা প্রীতিলতা ট্রাস্টের হয়ে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সনদ সংগ্রহ করেন।

গত ২৬ জুলাই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালী চক্রবর্তী আনুষ্ঠানিকভাবে প্রীতিলতার সনদ ও নম্বরপত্র হস্তান্তর করেন। সনদটি ইস্যুর তারিখ দেখানো হয় ১৯৩৩ সালের ২৫ মার্চ। নম্বরপত্রে দেখা যায়, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার মোট ৬১৮ নম্বর পেয়েছেন।

সনদ হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন রতন ঘোষ এবং শৃণ্বন্তুর সাধারণ সম্পাদক মিতা ঘোষ। ছিলেন কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের প্রেস সচিব মো. মোফাকখারুল ইকবাল ও হেড অব চ্যান্সেলর বি এম জামাল হোসেন।

সনদটি বর্তমানে কলকাতা দূতাবাসে রয়েছে। দূতাবাস থেকে তা চট্টগ্রামের বীরকন্যা প্রীতিলতা ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তর করা হবে। চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বীরকন্যা প্রীতিলতা ট্রাস্টের সভাপতি পঙ্কজ চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, সনদটি সংগ্রহ করার জন্য ট্রাস্ট থেকে রতন ঘোষকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দেওয়া হয়েছিল।

প্রীতিলতার ডিগ্রি পাসের সনদ।  ছবি: সংগৃহীত
প্রীতিলতার ডিগ্রি পাসের সনদ। ছবি: সংগৃহীত

ইডেন কলেজ থেকে আইএ পাস করার পর প্রীতিলতা চলে যান কলকাতার বেথুন কলেজে। সেখান থেকে ১৯৩২ সালে বিএ পাস করেন। কিন্তু ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকায় তাঁর এবং সঙ্গী বীণা দাশগুপ্তের ফলাফল স্থগিত রাখা হয়। ২০১২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনে দুজনকে মরণোত্তর স্নাতক ডিগ্রি দেওয়া হয়।

প্রথম আলোকে রতন ঘোষ বলেন, ‘২০১৫ সালে চট্টগ্রাম এসে প্রীতিলতার স্মৃতিধন্য নানা জায়গায় ঘুরেছি। ওই সময় আবৃত্তিকার রণজিৎ রক্ষিত প্রীতিলতা ট্রাস্টের পঙ্কজ চক্রবর্তীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এ বছরের ৫ মে পঙ্কজ আমাকে প্রীতিলতার সনদ সংগ্রহের জন্য ট্রাস্টের পক্ষ থেকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দেন। ১২ মে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবরে সনদের জন্য আবেদন করি। সনদ নিতে ১০ বছরের বেশি দেরি হওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে হলফনামা ও দুই হাজার টাকা ফি জমা দিই। এরপর ২৬ জুলাই সনদ হস্তান্তর করা হয়।’

১৯১১ সালের ৫ মে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ধলঘাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন প্রীতিলতা। মাস্টারদা সূর্য সেনের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেন। ১৯৩২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর পাহাড়তলীর ইউরোপিয়ান ক্লাবে আক্রমণ হয় তাঁর নেতৃত্বে। আক্রমণ শেষে ধরা পড়ার সময় সায়ানাইড পান করে আত্মহত্যা করেন প্রীতিলতা।