ঘূর্ণিঝড়ের পর এবার ভূমিধসের আশঙ্কা

ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে মঙ্গলবার থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। গতকালও ভারী বর্ষণ অব্যাহত ছিল। বৃষ্টিতে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরের ভেতরে চলাচলের রাস্তায় কাদার সৃষ্টি হয়। ফলে পথ চলতে পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। বেলা তিনটায় টেকনাফের জাদিমোরা শালবন রোহিঙ্গা শিবিরে।  ছবি: গিয়াস উদ্দিন
ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে মঙ্গলবার থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। গতকালও ভারী বর্ষণ অব্যাহত ছিল। বৃষ্টিতে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরের ভেতরে চলাচলের রাস্তায় কাদার সৃষ্টি হয়। ফলে পথ চলতে পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। বেলা তিনটায় টেকনাফের জাদিমোরা শালবন রোহিঙ্গা শিবিরে। ছবি: গিয়াস উদ্দিন

ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলির’ প্রভাবে দুই দিন ধরে সারা দেশে কমবেশি বৃষ্টি হচ্ছে। আজ শনিবারও বৃষ্টি হতে পারে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির পাশাপাশি সেখানকার পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।

পাহাড়ধসের আশঙ্কায় চট্টগ্রামের মতিঝরনা, বাটালি হিল, পোড়া কলোনি, আমিন জুট মিল, আকবরশাহসহ বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের সরে যেতে মাইকিং করেছে প্রশাসন। কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন পাহাড়ের রোহিঙ্গা বসতিগুলোও টানা বৃষ্টির কারণে ঝুঁকির মুখে রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, রংপুর বিভাগ ছাড়া দেশের বেশির ভাগ এলাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়তে পারে। তবে রোববার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ অনেকটাই কমে আসবে। আগামী সপ্তাহ থেকে দিনের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে থাকবে এবং সকালের দিকে শীত অনুভূত হবে। আগামী নভেম্বর মাস থেকে পুরোপুরি শীত নামতে পারে।

ঝড়বৃষ্টির এই দুর্বিপাক শুধু যে বাংলাদেশ আর ভারতে ঘটছে, তা নয়। ইউরোপ, আমেরিকাতেও গত এক সপ্তাহে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে। এ সপ্তাহে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে চারটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে। আরব সাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় লুবান আঘাত করেছে ওমান আর ইয়েমেন উপকূলে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় তিতলি ভারতের ওডিশায়, আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মাইকেল যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় আছড়ে পড়েছে। আটলান্টিক মহাসাগরেই সৃষ্টি হয়েছে আরেকটি ঘূর্ণিঝড় ‘সার্জিও’। এটি আঘাত হানে মেক্সিকো উপকূলে।

গবেষণা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের পরিচালক সালিমুল হক বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি বেড়ে গেলে ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের মতো দুর্যোগ আরও বাড়তে পারে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আগামী বছরগুলোতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে উপকূলীয় এলাকায়। সেখানে অপেক্ষাকৃত দরিদ্র মানুষ বাস করে। দুর্যোগের ক্ষতির শিকার বেশি হয় তারাই।

আবহওয়াবিদেরা জানান, জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন–সংক্রান্ত প্যানেল চলতি মাসের শুরুতে ‘এক দশমিক পাঁচ ডিগ্রি’ নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, বিশ্বের তাপমাত্রা যেভাবে বাড়ছে তাতে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। আটলান্টিক মহাসাগরে এখন আরেকটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে। এর নাম ‘লেসলি’। এটি চলতি সপ্তাহে পর্তুগালে আঘাত হানতে পারে।