ফেরি থেকে নদীতে পড়ে যাওয়া শিশুর লাশ উদ্ধার

শিশুর খোঁজে নদীতে ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরি দলের তৎপরতা। ছবি: এম রাশেদুল হক
শিশুর খোঁজে নদীতে ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরি দলের তৎপরতা। ছবি: এম রাশেদুল হক

গোয়ালন্দ ফেরিঘাটে গত সোমবার রাতে ফেরি থেকে নদীতে পড়ে যাওয়া সাড়ে চার বছরের শিশু রুকাইয়ার লাশ উদ্ধার করেছেন স্থানীয় লোকজন। আজ সকাল সোয়া ১০টার দিকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার ৬ নম্বর ফেরিঘাটের সামনে লাশটি ভাসতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। 

পরে কয়েকজন লাশটি ট্রলারে করে তুলে ডাঙায় আনেন। গোয়ালন্দ ঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুল ইসলাম এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দৌলতদিয়া নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) লাবু মিয়া, ফাঁড়ির সেকেন্ড অফিসার (এসআই) আসাদুজ্জামান মোল্লাসহ পুলিশের সদস্যরা হাজির হন। এসআই কামরুল ইসলাম লাশের সুরতহাল করেছেন। সুরতহাল শেষে লাশটি থানায় নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
পুলিশ বলছে, শিশুটির পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা রওনা হয়েছে।
শিশুটির বাবার নাম সেলিম রেজা ও মায়ের নাম জেসমিন আক্তার। সেলিম রেজা পেশায় মৎস্য ব্যবসায়ী। বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা শহরে। তাঁর দুই মেয়ের মধ্যে রুকাইয়া ছিল ছোট। বড় মেয়ের বয়স ছয় বছর।
গত সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে দৌলতদিয়া ৩ নম্বর ফেরিঘাট থেকে নিখোঁজ হয় শিশুটি। রাতে তার মা তাকে ফেরিতে শৌচাগারের দরজার বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে ভেতরে যান। বাইরে অপেক্ষায় থাকা সাড়ে চার বছরের শিশুটি হঠাৎ ফেরিতে থাকা বাসের ব্রেক করার শব্দে চমকে ভয়ে দৌড় দিয়ে ফেরি থেকে নদীতে পড়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, ফেরিটি তখন ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল বলে পেছনের ডালা নামানো ছিল, কিন্তু পন্টুন থেকে সরে এসেছিল। শিশুটি ভয়ে দৌড় দেওয়ার সময় অন্ধকারে ঠাওরাতে না পেরে পন্টুন ও ফেরির ফাঁকা স্থান দিয়ে নদীতে পড়ে যায়। শিশুটিকে কেউ পড়ে যেতে না দেখলেও তার দৌড়ে যাওয়া ও পানিতে পড়ে যাওয়ার শব্দ শুনতে পেয়েছেন কয়েকজন।
পরিবার ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, শিশুটির মা জেসমিন আক্তারের ছোট ভাইয়ের অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে তারা কয়েকজন মাইক্রোবাসে করে ঢাকায় যাচ্ছিল। রাতে দৌলতদিয়ার ৩ নম্বর ফেরিঘাটে তাঁদের গাড়িটি রজনীগন্ধা নামক একটি ফেরিতে ওঠে। মা জেসমিন এ সময় রুকাইয়াকে নিয়ে শৌচাগারের দিকে যান। মেয়েকে বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তিনি ভেতরে ঢোকেন। পরে বেরিয়ে এসে রুকাইয়াকে না দেখতে পেয়ে তিনি মেয়ের খোঁজে চিৎকার করতে থাকেন। শিশুটির বাবাও খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। তখন কয়েকজন জানান, ফেরিতে ওই সময় একটি এসি বাস উঠে সশব্দে ব্রেক করলে আওয়াজে ভয় পেয়ে যায় শিশুটি। সে পেছনের দিকে দৌড় দেয়, সঙ্গে সঙ্গে পানিতে কিছু পড়ে যাওয়ার বড় ধরনের শব্দ হয়।
আরও পড়ুন: ফেরি থেকে নদীতে পড়ে গেল শিশু