টাঙ্গাইলে আ.লীগে প্রার্থীজট, বিএনপি মাঠে নেই

টাঙ্গাইলের আটটি সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীদের তৎপরতা থাকলেও বিএনপির প্রার্থীরা মাঠে নেই। একটি আসন ছাড়া সব কটিতেই আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী থাকায় কোন্দলে জড়িয়ে পড়েছেন নেতা-কর্মীরা। কোনো কোনো আসনে বর্তমান সাংসদের বিরুদ্ধে এককাট্টা হয়েছেন অন্য সব মনোনয়নপ্রত্যাশী।
এদিকে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেওয়ায় উজ্জীবিত বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

আব্দুর রাজ্জাক (আ.লীগ), মাহবুব আনাম (বিএনপি), মোহাম্মদ আলী (বিএনপি), শহীদুল ইসলাম (বিএনপি)
আব্দুর রাজ্জাক (আ.লীগ), মাহবুব আনাম (বিএনপি), মোহাম্মদ আলী (বিএনপি), শহীদুল ইসলাম (বিএনপি)

টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) : আসনের সাংসদ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাবেক খাদ্যমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে সাংসদ নির্বাচিত হন। এবারও তিনি এই আসনে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী। মধুপুর ও ধনবাড়ী—দুই উপজেলায়ই আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোর সমর্থন রয়েছে তাঁর প্রতি। এ আসনে ২০০১ ও ২০০৮ সালে বিএনপির মনোনয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফকির মাহবুব আনাম ওরফে স্বপন। তিনি এবারও দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী। তবে এবার তিনি ছাড়াও দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আরেক সদস্য সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ আলী এবং মধুপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র সরকার শহীদুল ইসলাম মনোনয়ন চাইবেন। তবে মাঠে তাঁদের কারোই তেমন তৎপরতা নেই।

খন্দকার আশরাফুজ্জামান (আ.লীগ), ইউনুস ইসলাম তালুকদার (আ.লীগ), তানভীর হাসান (আ.লীগ), খন্দকার মশিউজ্জামান (আ.লীগ), আব্দুস সালাম পিন্টু (বিএনপি)
খন্দকার আশরাফুজ্জামান (আ.লীগ), ইউনুস ইসলাম তালুকদার (আ.লীগ), তানভীর হাসান (আ.লীগ), খন্দকার মশিউজ্জামান (আ.লীগ), আব্দুস সালাম পিন্টু (বিএনপি)

টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর): আসনের বর্তমান সাংসদ খন্দকার আসাদুজ্জামান। তিনি ১৯৯৬, ২০০৮ সালের নির্বাচনেও সাংসদ নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি বয়সের ভারে ন্যুব্জ। স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারেন না। তাই তিনি প্রার্থী হচ্ছেন না। তাঁর ছেলে সোনালী ব্যাংকের সাবেক পরিচালক খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেলকে তিনি প্রার্থী করতে চান। রোমেল কয়েক মাস ধরে তাঁর বাবার অনুসারীদের সঙ্গে নিয়ে মাঠে নিয়মিত গণসংযোগ করছেন। এ ছাড়া এ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক খন্দকার আশরাফুজ্জামান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক এবং জার্মান আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক তানভীর হাসান ও গোপালপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনুস ইসলাম তালুকদার দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। তানভীর হাসান ও ইউনুস ইসলাম গোপালপুর ও ভূঞাপুরে ইতিমধ্যে বড় ধরনের নির্বাচনী মহড়া করেছেন। ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে নিয়মিত সভা-সমাবেশ করছেন।
এ আসনে ১৯৯১ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সাংসদ নির্বাচিত হন দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু। ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর তিনি উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। বর্তমানে তিনি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে পিন্টুর অনুপস্থিতিতে তাঁর ছোট ভাই যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রার্থী হন। এবার আইনগত বাধা না থাকলে কারাগার থেকেই আব্দুস সালাম পিন্টু নির্বাচন করবেন বলে তাঁর পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে। তবে তিনি প্রার্থী হতে না পারলে তাঁর পরিবারের অন্য কেউ প্রার্থী হবেন।

(ওপরে বাঁ থেকে পর্যায়ক্রমে) কামরুল হাসান খান (আ.লীগ), সৈয়দ আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহ (আ.লীগ),শহিদুল ইসলাম লেবু (আ.লীগ),এস আকবর খান (আ.লীগ), শহীদুল ইসলাম (আ.লীগ), লুৎফর রহমান খান (বিএনপি), মাঈনুল ইসলাম (বিএনপি)
(ওপরে বাঁ থেকে পর্যায়ক্রমে) কামরুল হাসান খান (আ.লীগ), সৈয়দ আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহ (আ.লীগ),শহিদুল ইসলাম লেবু (আ.লীগ),এস আকবর খান (আ.লীগ), শহীদুল ইসলাম (আ.লীগ), লুৎফর রহমান খান (বিএনপি), মাঈনুল ইসলাম (বিএনপি)

টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল): আসনের বর্তমান সাংসদ আমানুর রহমান খান ওরফে রানা আওয়ামী লীগের নেতা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাগারে। তিনি এবার দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন না, এমনটা ধরে নিয়েই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে মাঠে নেমেছেন আটজন। তাঁরা নিজেদের মতো করে জনসংযোগ করছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কামরুল হাসান খান, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সৈয়দ আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহ ওরফে তুহিন, ঘাটাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক এস আকবর খান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শহীদুল ইসলাম, সাবেক সাংসদ মতিউর রহমানের ছেলে তানভীর রহমান, সোনালী ব্যাংকের পরিচালক নুরুল আলম তালুকদার, তেজগাঁও কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক অধীর চন্দ্র সরকার।
এ আসনে বিএনপি থেকে ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা লুৎফর রহমান খান ওরফে আজাদ সাংসদ নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯১ ও ২০০১ সালে বিএনপি সরকারের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মতিউর রহমানের কাছে পরাজিত হন। এবারও তিনি দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। তবে জেলা বিএনপির কোষাধ্যক্ষ ব্যবসায়ী মাঈনুল ইসলামও দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। বিএনপির এই দুই মনোনয়ন প্রত্যাশীর তৎপরতা এলাকায় নেই।

(ওপরে বাঁ থেকে পর্যায়ক্রমে) হাসান ইমাম খান (আ.লীগ), মোজহারুল ইসলাম তালুকদার (আ.লীগ), লিয়াকত আলী (আ.লীগ), আবু নাসের (আ.লীগ), লুৎফর রহমান (বিএনপি), বেনজীর আহমেদ (বিএনপি),
(ওপরে বাঁ থেকে পর্যায়ক্রমে) হাসান ইমাম খান (আ.লীগ), মোজহারুল ইসলাম তালুকদার (আ.লীগ), লিয়াকত আলী (আ.লীগ), আবু নাসের (আ.লীগ), লুৎফর রহমান (বিএনপি), বেনজীর আহমেদ (বিএনপি),

টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী): আসনের বর্তমান সাংসদ হাসান ইমাম খান এবারও দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। তবে উপজেলা আওয়ামী লীগ পুরোপুরি তাঁর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এ আসনে মনোনয়ন চাইছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপকমিটির সাবেক সহসম্পাদক এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক আবু নাসের, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোজহারুল ইসলাম তালুকদার এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য লিয়াকত আলী। তাঁরা তিনজন এককাট্টা হয়ে জনসংযোগ করছেন। বর্তমান সাংসদকে বাদ দিয়ে অন্য যে কাউকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য তাঁরা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।
বিএনপি থেকে ২০০৮ সালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য লুৎফর রহমান ওরফে মতিন। তিনি এবারও মনোনয়নপ্রত্যাশী। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক বেনজীর আহমেদ ওরফে টিটোও মনোনয়ন চাইবেন। বিলবোর্ড, পোস্টার ছাড়া এলাকায় বিএনপির এই দুই মনোনয়নপ্রত্যাশীর তৎপরতা নেই। তবে জোটগতভাবে নির্বাচন হলে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম ঐক্যফ্রন্টের হয়ে এ আসনে প্রার্থী হতে পারেন।

(ওপরে বাঁ থেকে পর্যায়ক্রমে) ছানোয়ার হোসেন (আ.লীগ), জামিলুর রহমান (আ.লীগ), নাহার আহমেদ (আ.লীগ), মাহমুদুল হাসান (বিএনপি), সুলতান সালাউদ্দিন টুকু (বিএনপি), আহসান হাবিব (বিএনপি), ছাইদুল হক (বিএনপি),শফিউল্লাহ আল মুনির (জাপা), মুরাদ সিদ্দিকী (স্বতন্ত্র)
(ওপরে বাঁ থেকে পর্যায়ক্রমে) ছানোয়ার হোসেন (আ.লীগ), জামিলুর রহমান (আ.লীগ), নাহার আহমেদ (আ.লীগ), মাহমুদুল হাসান (বিএনপি), সুলতান সালাউদ্দিন টুকু (বিএনপি), আহসান হাবিব (বিএনপি), ছাইদুল হক (বিএনপি),শফিউল্লাহ আল মুনির (জাপা), মুরাদ সিদ্দিকী (স্বতন্ত্র)

টাঙ্গাইল-৫ (সদর): এ আসনের বর্তমান সাংসদ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছানোয়ার হোসেন। তিনি এবারও দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। এ ছাড়া টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র জামিলুর রহমান এবং জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাহার আহমেদ মনোনয়ন চেয়ে তৎপরতা চালাচ্ছেন।
তবে মহাজোটে আসনটির দাবিদার জাতীয় পার্টি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আবুল কাশেম মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। এবার জাতীয় পার্টি থেকে দলের চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ব্যবসায়ী শফিউল্লাহ আল মুনির মনোনয়ন চাইছেন।
বিএনপি থেকে এ আসনে মনোনয়ন চাইবেন সাবেক মন্ত্রী দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, জেলা বিএনপির সহসভাপতি ছাইদুল হক এবং দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য খন্দকার আহসান হাবিব মনোনয়ন চাইবেন। তবে এই চার প্রার্থীর কেউ মাঠে নেই। এ আসনে সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ও মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তমের ভাই মুরাদ সিদ্দিকী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে গণসংযোগ করছেন।

(ওপরে বাঁ থেকে পর্যায়ক্রমে) তারানা হালিম (আ.লীগ), খন্দকার আব্দুল বাতেন (আ.লীগ), আহসানুল ইসলাম (আ.লীগ), তারেক শামস খান (আ.লীগ), গৌতম চক্রবর্তী (বিএনপি), নুর মোহাম্মদ খান (বিএনপি)
(ওপরে বাঁ থেকে পর্যায়ক্রমে) তারানা হালিম (আ.লীগ), খন্দকার আব্দুল বাতেন (আ.লীগ), আহসানুল ইসলাম (আ.লীগ), তারেক শামস খান (আ.লীগ), গৌতম চক্রবর্তী (বিএনপি), নুর মোহাম্মদ খান (বিএনপি)

টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার): আসনের বর্তমান সাংসদ খন্দকার আব্দুল বাতেন। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনের পর ২০১৪ সালেই প্রথম এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হন। এবার এ আসনে মনোনয়ন চেয়ে মাঠে কাজ করছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, ২০০৮ সালের নির্বাচনে মনোনয়নপ্রাপ্ত জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক আহসানুল ইসলাম ওরফে টিটু, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপকমিটির সহসম্পাদক তারেক শামস খান ওরফে হিমু, ব্যারিস্টার আশরাফুল ইসলাম ও কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এ টি এম আনিসুর রহমান। নাগরপুর ও দেলদুয়ার উপজেলার নেতা-কর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে একেকজন একেক নেতার পেছনে কাজ করছেন।
এ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইবেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী দলের কেন্দ্রীয় পল্লী উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের আহ্বায়ক গৌতম চক্রবর্তী। তিনি ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে এ আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে জোট সরকারে তিনি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এ ছাড়া এ আসনের সাবেক সাংসদ সাবেক প্রতিমন্ত্রী নুর মোহাম্মদ খান দলীয় মনোনয়ন চাইবেন।

(ওপরে বাঁ থেকে পর্যায়ক্রমে) একাব্বর হোসেন (আ.লীগ), খান আহমেদ শুভ (আ.লীগ), খন্দকার আব্দুল হাফিজ (আ.লীগ), আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী (বিএনপি), সাঈদ সোহরাব (বিএনপি)
(ওপরে বাঁ থেকে পর্যায়ক্রমে) একাব্বর হোসেন (আ.লীগ), খান আহমেদ শুভ (আ.লীগ), খন্দকার আব্দুল হাফিজ (আ.লীগ), আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী (বিএনপি), সাঈদ সোহরাব (বিএনপি)

টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর): আসনের বর্তমান সাংসদ একাব্বর হোসেন এবারও দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। এবার মনোনয়ন চেয়ে মাঠে নেমেছেন জেলা যুবলীগের সহসভাপতি ও জেলা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খান আহমেদ শুভ। তিনি এই আসনের সাবেক সাংসদ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খানের ছেলে। উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে এই দুই মনোনয়নপ্রত্যাশীকে নিয়ে। এ ছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সাবেক সেনা কর্মকর্তা খন্দকার আব্দুল হাফিজ দলীয় মনোনয়ন চাইবেন।
বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী কেন্দ্রীয় বিএনপির শিশুবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী। তিনি ১৯৯৬ সালে সাংসদ নির্বাচিত হলেও ২০০১ সালে ও ২০০৮ সালে পরাজিত হন। এবার বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সাঈদ সোহরাবও মনোনয়নপ্রত্যাশী। আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী বর্তমানে কারাগারে আছেন। সাঈদ সোহরাবেরও তেমন তৎপরতা নেই।

(ওপরে বাঁ থেকে পর্যায়ক্রমে) কাদের সিদ্দিকী (কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ), জোয়াহেরুল ইসলাম (আ.লীগ), অনুপম শাহজাহান (আ.লীগ), শওকত সিকদার (আ.লীগ), সাঈদ আজাদ (আ.লীগ), আসাদুল হক তালুকদার (আ.লীগ), আবদুস সালাম খান (আ.লীগ)
(ওপরে বাঁ থেকে পর্যায়ক্রমে) কাদের সিদ্দিকী (কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ), জোয়াহেরুল ইসলাম (আ.লীগ), অনুপম শাহজাহান (আ.লীগ), শওকত সিকদার (আ.লীগ), সাঈদ আজাদ (আ.লীগ), আসাদুল হক তালুকদার (আ.লীগ), আবদুস সালাম খান (আ.লীগ)

টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর): আসনের বর্তমান সাংসদ অনুপম শাহজাহান জয়ের বিরুদ্ধে এককাট্টা হয়েছেন আওয়ামী লীগের অন্তত অর্ধডজন প্রার্থী। তাঁরা প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি করেছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে। অনুপম শাহজাহানের বাবা শওকত মোমেন শাহজাহান ১৯৮৬, ১৯৯৯ সালের উপনির্বাচন, ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে নির্বাচিত হওয়ার কিছুদিন পরেই তিনি মারা যান। পরে উপনির্বাচনে অনুপম শাহজাহান দলীয় মনোনয়ন পেয়ে বিজয়ী হন। এবার দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম, সখীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত সিকদার, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সাবেক সহসভাপতি আতাউল মাহমুদ, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য সাঈদ আজাদ, জাতীয় শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম খান, বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান এ কে এম আসাদুল হক তালুকদার।
অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে এ আসনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম প্রার্থী হবেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। তিনি ১৯৯৬ সালে এ আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়ে ১৯৯৯ সালে সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। পরে ২০০১ সালে তাঁর নিজের দল থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনে পরাজিত হন।

প্রতিটি আসনেই অধিকসংখ্যক মনোনয়নপ্রত্যাশী এবং কোথাও কোথাও কোন্দল প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম জানান, আওয়ামী লীগ বড় দল। সব আসনেই অনেক যোগ্য নেতা রয়েছেন। তাই আসনগুলোতে মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা বেশি। তবে মনোনয়ন নিয়ে এখন প্রতিযোগিতা থাকলেও নির্বাচনে কোনো সমস্যা হবে না। কারণ দল যাঁকে মনোনয়ন দেবে, তাঁর পেছনেই সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন।
জেলা বিএনপির সভাপতি শামছুল আলম জানান, বিএনপির নেতা-কর্মীরা মামলা ও পুলিশি হয়রানির কারণে ঠিকমতো নির্বাচনী তৎপরতা চালাতে পারছেন না। তবে সবাই যাঁর যাঁর অবস্থান থেকে কাজ করে যাচ্ছেন।