দুর্নীতিবাজদের থেকে ৫ বছরে আদায় ২৭৪ কোটি টাকা: দুদক চেয়ারম্যান

ইকবাল মাহমুদ। ফাইল ছবি
ইকবাল মাহমুদ। ফাইল ছবি

পাঁচ বছরে বিভিন্ন মামলায় সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও জরিমানা বাবদ দুর্নীতিবাজদের কাছ থেকে ২৭৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে। ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত অর্থ আদায়ের এ তথ্য জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

আজ মঙ্গলবার অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত ইউনাইটেড ন্যাশনস কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট করাপশন (আনকাক) এর দ্য ইমপ্লিমেন্টেশন রিভিউ গ্রুপের এক অনুষ্ঠানে ইকবাল মাহমুদ এ কথা বলেন। দুদকের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আনকাকের ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ দলের প্রধান ইকবাল মাহমুদ বিভিন্ন পরিসংখ্যান উল্লেখ করে বলেন, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত দুদক দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগে ১৮৯টি মামলা করেছে এবং ২২৩টি মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে।

দুদকের কর্মকাণ্ড মূল্যায়ন করে তিনি বলেন, ২০১১ সালে যেখানে দুদকের মামলায় বিচারিক আদালতে সাজার হার ছিল ২০ শতাংশ, ২০১৭ সালে তা ৬৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। তিনি বলেন, অর্থপাচার মামলার ক্ষেত্রে এই সাজার হার শতভাগ। ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত অর্থপাচার সংক্রান্ত ২৩টি মামলার রায় হয়েছে, যার প্রতিটি মামলায় আসামিদের সাজা হয়েছে।


দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ২০১৩ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত আদালতের নির্দেশে কমিশনের বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্তদের ৭১ কোটি ৫২ লাখ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। একইভাবে ২০২ কোটি ৭৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ২০১৩ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দুর্নীতি ও অর্থপাচারের ৫৫০টি মামলায় আদালতে সাজা হয়েছে।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের শূন্য সহিষ্ণুতার নীতির কথা উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদকের আইনি ম্যান্ডেট অনুসারে স্বাভাবিক অনুসন্ধান ও তদন্তের পাশাপাশি দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধে বহুমুখী উদ্ভাবনী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ বছরে ১৫টি ফাঁদ মামলা পরিচালনা করে ঘুষ নেওয়ার সময় ১৮ জন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে হাতেনাতে ঘুষের টাকাসহ গ্রেপ্তার করেছে দুদক।

দুদকের ২৫টি প্রাতিষ্ঠানিক টিমের কার্যক্রম ব্যাখ্যা করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদক সরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করে তা প্রতিরোধে পদ্ধতিগত সংস্কারের মাধ্যমে হয়রানি ও দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশে সরকারি পরিষেবা নিশ্চিত করতে আইনানুগ প্রক্রিয়ায় পরামর্শ দিচ্ছে। ইতিমধ্যেই কমিশন ভূমি মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ, আয়কর বিভাগ ও কাস্টমস বিভাগে তাদের বিজনেস প্রসেস রি-ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অংশ হিসেবে দুর্নীতির সম্ভাব্য উৎস চিহ্নিত করে, তা বন্ধে সুনির্দিষ্ট সুপারিশমালা পাঠিয়েছে।

১২ নভেম্বর থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় চলমান আনকাক সম্মেলনে বাংলাদেশের তিন সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল অংশ নিচ্ছে।