সরকার নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে: মির্জা ফখরুল

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সংঘর্ষের ঘটনাকে ‘চক্রান্ত’ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি অভিযোগ করেন, এই সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে সরকার সংসদ নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে।

আজ বুধবার বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়।

মির্জা ফখরুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা একটি চক্রান্ত। আমরা নির্বাচন করতে যাচ্ছি। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের অফিসের সামনে নমিনেশন নেওয়ার জন্য তাদের লোকজন ভিড় করেছে, তখন কিছু করেনি।’

উসকানি দিয়ে হামলার ঘটনা ঘটানো হয়েছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কালকে (মঙ্গলবার) হঠাৎ করে চিঠি দিল। এই চিঠি দিয়ে আজকে পুলিশের অ্যাকশন। প্রভোকেশন (উসকানি) করে নির্বাচনকে বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছে।’

আজ বেলা পৌনে একটার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশের একটি পিকআপসহ দুটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। সেখানে বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে। এ সময় পুলিশের ছোড়া প্যালেট বুলেটে (ছররা গুলির মতো) বিএনপির কমপক্ষে ১২ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল থেকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতা-কর্মী-সমর্থকদের ভিড় ছিল। পুলিশ রাস্তায় তাঁদের দাঁড়াতে দিচ্ছিল না। বেলা পৌনে একটার দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বড় একটি মিছিল নিয়ে ঢাকা-৮ আসনের জন্য মনোনয়ন ফরম কিনতে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আসেন। ওই সময় কার্যালয়ের সামনে থেকে তাঁর মিছিল সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। তবে কর্মী-সমর্থকেরা সরে না যাওয়ায় একপর্যায়ে পুলিশের গাড়ি মিছিলের ওপর উঠে যায়। ওই সময় কয়েকজন আহত হন। এ নিয়ে কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে পুলিশের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। মুহূর্তে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ কয়েকজন কর্মী-সমর্থককে লাঠিপেটা করে। পুলিশের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। পুলিশ প্যালেট বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। তবে বিএনপির নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় পুলিশ সেখান থেকে পিছু হটে। একপর্যায়ে নেতা-কর্মীরা পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেন। তাঁরা রাস্তায় চলাচল করা অন্যান্য ব্যক্তিগত গাড়িও ভাঙচুর করে।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে প্যালেট বুলেটে আহতরা হলেন: পিরোজপুরের নেছারাবাদের মো. শামসুল হক, রাজধানীর মুগদার মেহেদি হাসান মিরাজ, অরিন, পল্টনের মো. কাদির, হৃদয় শেখ, মতিঝিলের মকবুল হোসেন, সবুজবাগের মনির হোসেন, খিলগাঁওয়ের মোস্তাক, কলাবাগানের সুমন, বিমানবন্দর থানা এলাকার মহিউদ্দিন রতন, মাদারীপুরের সাখাওয়াত হোসেন এবং পিরোজপুরের আসাদুজ্জামান। তাঁদের গলা, মাথা ও পিঠে গুলির আঘাত লেগেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, আরও অনেকে আহত হয়েছেন।