প্রত্যাবাসনবিরোধী বিক্ষোভ করছে রোহিঙ্গারা

বাংলাদেশ থেকে আজ বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেলা একটার দিকে প্রত্যাবাসনবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করেছে রোহিঙ্গারা। কয়েকটি বাস নিয়ে শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের কর্মকর্তারা মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে অপেক্ষারত রোহিঙ্গাদের আনতে টেকনাফের উঞ্চিপাং ক্যাম্পে যান।

বিক্ষোভে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দিচ্ছে তারা।

রোহিঙ্গারা দাবি করছে, মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার পরিবেশ নেই। জোর করে ফেরত পাঠালে মানবাবিধকারের লঙ্ঘন হবে।

বেলা দেড়টা পর্যন্ত সেখানে শত শত রোহিঙ্গাকে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। সোয়া একটা থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চলছিল। সেখানে র‍্যাব, পুলিশ, বিজিবি সদস্য মোতায়েন আছে। এর মধ্যেও রোহিঙ্গারা স্লোগান দিচ্ছে। এ বিক্ষোভ অন্য ক্যাম্পেও ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এর আগে শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মাদ আবুল কালাম বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) দেওয়া প্রতিবেদন প্রত্যাবাসনের অনুকূলে না। টেকনাফের ২২ নম্বর ক্যাম্প উঞ্চিপ্রাংয়ে রোহিঙ্গারা প্রত্যাবাসনের জন্য প্রস্তুত। তাদের সঙ্গে কথা বলব। তারা স্বেচ্ছায় যেতে চাইলে প্রত্যাবাসন শুরু হবে—দিনের যেকোনো সময়। ওদিকে মিয়ানমারও প্রস্তুত আছে।’

১৫০ জনের প্রথম দলকে দিয়ে আজ বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কথা রয়েছে। সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত টেকনাফের কেরুনতলী ট্রানজিট ঘাট এবং নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ঘাট দুটি পরিদর্শন করে সেখানে প্রত্যাবাসনের জন্য কোনো রোহিঙ্গাকে দেখা যায়নি। টেকনাফের ঘাটে কয়েকজন আনসার সদস্য ট্রানজিট ক্যাম্পটি পাহারা দিচ্ছেন। নাফ নদীতে রোহিঙ্গা পারাপারের কোনো নৌকা বা ট্রলারও দেখা যায়নি।

প্রত্যাবাসন করতে হলে এখান থেকে নৌকা নিয়ে পাঁচ কিলোমিটার নদী পার হয়ে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুতে নিতে হবে। ওদিকে ঘুমধুম সীমান্তে ট্রানজিট ক্যাম্পটিও ফাঁকা পড়ে থাকতে দেখা যায়। সেখানে কয়েকজন বিজিবি সদস্য টহলে আছেন। এখান থেকে স্থলপথে বাংলাদেশ–মিয়ানমার মৈত্রী সেতু পার হয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কথা।

উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গা সংখ্যা এখন ১১ লাখ ১৮ হাজার ৫৫৪। এর মধ্যে গত বছরের ২৫ আগস্টের পর এসেছে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা। আজ প্রথম দিন ৩০ পরিবারের ১৫০ জনকে প্রত্যাবাসনের জন্য প্রস্তুত করা হলেও অনেকেই এতে রাজি না।