আ. লীগ ছেড়ে জাপায় গেলেন মাসুদ উদ্দিন

>
  • এক-এগারোর সময় আলোচিত ছিলেন মাসুদ উদ্দিন
  • আ.লীগের মনোনয়ন ফরম কিনে জমা দিয়েছিলেন
  • পরে আ.লীগের পরামর্শে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন
  • রাতারাতি জাপার সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য পদ পান
  • ফেনী-৩–এ মাসুদ উদ্দিনের মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত
মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী
মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী-৩ আসন (সোনাগাজী-দাগনভূঞা) থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে মনোনয়ন ফরম নিয়েছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী। এর পাঁচ দিনের মাথায় গত বুধবার তিনি জাতীয় পার্টির (জাপা) মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। এর পরদিনই জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হয়েছেন এক-এগারোর সময় আলোচিত সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা।

ঢাকায় জাতীয় পার্টির উচ্চপর্যায়ের একটি সূত্র প্রথম আলোকে জানায়, ফেনী-৩ আসনে মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর মনোনয়নপ্রাপ্তি অনেকটা নিশ্চিত। এর আগে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে দলটির ফরম কিনে জমাও দিয়েছিলেন। পরে আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের পরামর্শ অনুযায়ী জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন এবং রাতারাতি দলটির নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য পদ পান।

গতকাল জাতীয় পার্টির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় প্রধান এইচ এম এরশাদ গতকালই মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি এরশাদের প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করবেন।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ, দলটির পদপ্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, এলাকার উন্নয়ন ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করাই মূল উদ্দেশ্য।

২০০৭ সালে এক-এগারোর সময় আলোচিত এই সেনা কর্মকর্তা বর্তমানে অবসরে আছেন। তাঁর পৈতৃক বাড়ি ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা মতিগঞ্জ ইউনিয়নের সুলাখালী গ্রামে।

মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী ২০০৭ সালে সেনাবাহিনীর নবম ডিভিশনের জিওসির দায়িত্বে ছিলেন। তিনি এক-এগারোর পট পরিবর্তনে অন্যতম প্রধান ভূমিকায় ছিলেন। তখন তিনি গুরুতর অপরাধ দমন-সংক্রান্ত জাতীয় সমন্বয় কমিটির সমন্বয়ক হন এবং পদোন্নতি পেয়ে লে. জেনারেল হন। এই কমিটির অধীনেই দুর্নীতিবিরোধী অভিযান পরিচালিত হয়। ২০০৮ সালে মাসুদ উদ্দিন অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার নিযুক্ত হন। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার তিন দফায় তাঁর চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধি করে। অবসরগ্রহণের পর তিনি ঢাকায় রেস্তোঁরাসহ একাধিক ব্যবসায় যুক্ত হন।

ঢাকায় সরকারি দলের উচ্চপর্যায়ের একটি সূত্র জানায়, শেষ মুহূর্তে নীতিনির্ধারকদের মনে হয়েছে, এক-এগারোর এই সেনা কর্মকর্তাকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হলে এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়বে দল। তা ছাড়া আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরমেও এক-এগারোর সময়ের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চেয়ে একটি ঘর রাখা হয়েছে। এই অবস্থায় আওয়ামী লীগের মিত্র জাতীয় পার্টি থেকে তাঁকে মনোনয়ন চাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, গত নির্বাচনেও ফেনী-৩ আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিয়েছিল। আওয়ামী লীগ কাউকে প্রার্থী করেনি। যদিও ওই নির্বাচনে জিতেছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের রহিমউল্লাহ। এবারও এই আসন জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়ার চিন্তাভাবনা আছে।

যদিও এই আসনের মনোনয়ন পেতে বর্তমান সাংসদ রহিমউল্লাহ, যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা আবুল বাশার, অভিনয়শিল্পী শমী কায়সার, রোকেয়া প্রাচীসহ ১৫ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। অন্যদিকে বিএনপির প্রার্থী হতে ইচ্ছুক দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) নাসিরউদ্দিন আহমেদ ও যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সোলায়মান ভূঁইয়াসহ ১৯ জন দলটির মনোনয়ন ফরম কিনেছেন।