সিইসিকে মামলার তালিকা দিল বিএনপি

দলের নেতা–কর্মীদের মামলার তালিকা প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার কাছে দিয়েছে বিএনপি। সংলাপের পর প্রধানমন্ত্রীর কাছে দুই দফায় দেওয়া মামলার তালিকাই সিইসিকে দেওয়া হয়েছে। নেতা–কর্মীদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া ও গ্রেপ্তার বন্ধে সিইসিকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে দলটি।

আজ রোববার বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সই করা চিঠিসহ মামলার তালিকা দলের পক্ষ থেকে সালাউদ্দিন খান নামের একজন সিইসির দপ্তরে পৌঁছে দেন। তিনি বিএনপির নেতা–কর্মীদের মামলাসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের দায়িত্বে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

সিইসি বরাবর বিএনপির দেওয়া চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিএনপির জাতীয় নেতারাসহ দেশব্যাপী মহানগর, জেলা, উপজেলা, থানা, এমনকি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধেও হাজার হাজার মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্ভট, ভিত্তিহীন, গায়েবি ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা করা হয়েছে। বিশেষ করে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে হঠাৎ ১ সেপ্টেম্বর থেকে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিজেরাই বাদী হয়ে বিএনপির নেতা–কর্মীদের নামে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা এবং গ্রেপ্তার অব্যাহত রেখেছে। ১০–১২ বছর আগে মৃত ব্যক্তি, অসুস্থ, পঙ্গু, হজ পালনরত ব্যক্তি, বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তিরাও এসব গায়েবি মামলার হাত থেকে রক্ষা পাননি।

চিঠিতে আরও বলা হয়, বিএনপিসহ ২০ দল ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে সাত দফা দাবি নিয়ে ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেয়। প্রধানমন্ত্রী সেসব মামলা ও গ্রেপ্তারের তালিকা তাঁর দপ্তরে পাঠাতে বলেন। সেই আলোকে ৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বরাবর প্রথম দফায় ১ হাজার ৪৬টি মামলার তালিকা দিয়েছে বিএনপি। ১৩ নভেম্বর ১ হাজার ২টি মামলার দ্বিতীয় তালিকা দিয়েছে বিএনপি। দুই দফায় মামলার তালিকা পাঠানো হলেও মামলাগুলো প্রত্যাহার এবং গ্রেপ্তার হওয়া নেতা–কর্মীদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে কি না, তা এখন পর্যন্ত বিএনপিকে অবহিত করা হয়নি।

গ্রেপ্তার বন্ধে সিইসিকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ৮ নভেম্বর জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ৭৭৩ জন বিএনপির নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ১৫ নভেম্বর সেই তালিকা নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীনে হলেও নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ উপেক্ষা করে ধারাবাহিকভাবে বিএনপির নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তার ও বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এ কারণে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো তালিকা নির্বাচন কমিশনের কাছেও পাঠানো হলো।
অবিলম্বে নেতা–কর্মীদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়াসহ গ্রেপ্তার বন্ধের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে দলটি।