'আমৃত্যু মানুষের জন্য কাজ করে যেতে চাই'

ইমাজ উদ্দিন
ইমাজ উদ্দিন

পাকিস্তান আমলে ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে জয়ী হন। সর্বশেষ ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। ৪৮ বছর ধরে নির্বাচন করছেন। তিনি ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও নওগাঁ-৪ (মান্দা) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। এ নিয়ে স্বাধীনতার পর ৯টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হলেন তিনি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক ১৯৬৩-৬৪ সালে নওগাঁ সরকারি কলেজে ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। ১৯৬৫ সালে নওগাঁ মহকুমা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ২০১৬ সালে তাঁকে স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলেন, ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক মনেপ্রাণে একজন সাংগঠনিক ব্যক্তি। তাঁর নেতৃত্বে মান্দায় দল সব সময় ঐক্যবদ্ধ ছিল এবং বর্তমানেও রয়েছে। এ আসন থেকে আরও ১০ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তবে সাংগঠনিক দক্ষতা ও জনপ্রিয়তার দিক থেকে ইমাজ উদ্দিন এগিয়ে রয়েছেন। এ কারণে আবারও তাঁর প্রতি আস্থা রেখেছে দল।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যসূত্র অনুযায়ী, ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিকের জন্ম ১৯৪১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি মান্দা উপজেলার কালিকাপুর গ্রামে। তিনি বিতর্কিত ১৯৮৮ ও ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ছাড়া সব কটি নির্বাচনে অংশ নেন। ১৯৭০ সালের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে মান্দা থেকে নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালের প্রথম সংসদ, ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় সংসদ ও ১৯৮৬ সালের তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হন। তবে তিনি ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী নাছির উদ্দিনের কাছে পরাজিত হন। ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের সপ্তম সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে ইমাজ উদ্দিন বিএনপির সামসুল আলম প্রামাণিকের কাছে পরাজিত হন। ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করে বিএনপির সামসুল আলমের কাছে আবারও পরাজিত হন। ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন ইমাজ উদ্দিন। এ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী সামসুল আলমকে পরাজিত করে সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আবার সাংসদ নির্বাচিত হন।

মান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার জসিম উদ্দিন বলেন, ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক নওগাঁ জেলার বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা। তিনি নওগাঁ আওয়ামী লীগের অভিভাবক। এখনো তুমুল জনপ্রিয় তিনি। এখানে তাঁর ভোট ব্যাংক রয়েছে। এবারও তিনি জয়ী হবেন।

মন্ত্রী ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলাম। এখনো তাঁর আদর্শের দল আঁকড়ে ধরে মানুষের সেবা করে যাচ্ছি। মানুষও আমাকে অফুরান ভালোবাসা দিয়েছে। আমৃত্যু এলাকার মানুষ ও দলের জন্য কাজ করে যেতে চাই।’