ফয়সল আহমদের হাত ধরে এল ধানের শীষ

ফয়সল আহমদ চৌধুরীর হাতে সিলেট-৬ আসনে বিএনপিদলীয় মনোনয়ন।  প্রথম আলো
ফয়সল আহমদ চৌধুরীর হাতে সিলেট-৬ আসনে বিএনপিদলীয় মনোনয়ন। প্রথম আলো

১৯৯৬ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) আসনে ধানের শীষ প্রতীক ছিল না। বিএনপি জোটগতভাবে নির্বাচন করায় ২০০১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। জোটগত নির্বাচনে কোনো জয় না আসায় এবার জোর দাবি ওঠে ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে দলীয় প্রার্থীর। বিএনপির মনোনয়ন দৌড়েও ছিলেন অনেকে। তাঁদের মধ্য থেকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ও শিল্প-উদ্যোক্তা ফয়সল আহমদ চৌধুরীকে বেছে নিল বিএনপি

গতকাল মঙ্গলবার দলীয় মনোনয়নের চিঠি তাঁর হাতে পৌঁছেছে। ধানের শীষবিহীন দুটো নির্বাচনের পর এবার তৃতীয় নির্বাচনে ফয়সল আহমদ চৌধুরী দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় তৃণমূলের নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা আনন্দিত। ফয়সল আহমদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘জামায়াত ২০–দলীয় জোটে থাকলেও এবারও স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এই অবস্থায় নির্বাচনী এলাকার কর্মী–সমর্থকদের চাওয়া ছিল ধানের শীষ প্রতীক পাওয়া। আমার হাত ধরে এ চাওয়া পূর্ণ হওয়ার একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে।’

সিলেট-৬ আসনে ভোট ও ফলাফলে দেখা গেছে, ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রথম নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন মরহুম লুৎফুর রহমান। তিনি বিজয়ী হয়েছিলেন। এরপর দুটো নির্বাচনে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক ছিল। কিন্তু প্রার্থী বিজয়ী হতে পারেননি। ১৯৯৬ সালে সপ্তম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুরুল ইসলাম নাহিদের কাছে হেরে যান ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা সাবেক সাংসদ সৈয়দ মকবুল হোসেন। ২০০১ সালে বিএনপি চারদলীয় জোটগতভাবে নির্বাচন করায় এই আসন জামায়াতকে ছেড়ে দেয়। এর আগের নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা সৈয়দ মকবুল হোসেন বিদ্রোহী হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন এবং বিজয়ী হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনেও আসনটি জামায়াতকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নুরুল ইসলাম নাহিদ বিজয়ী হয়ে শিক্ষামন্ত্রী হন।

বিএনপির সূত্র জানায়, আসনটি পুনরুদ্ধারে আর জামায়াতকে ছাড় না দিতে এবারের নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির পক্ষ থেকে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। এবার নিবন্ধন না থাকার পরও স্বতন্ত্র হিসেবে প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা জামায়াতে থাকায় এ নিয়ে নির্বাচনী এলাকা গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলার বিএনপিসমর্থিত জনপ্রতিনিধিরাও বিক্ষুব্ধ হন। তাঁরা সংবাদ সম্মেলন করে এই আসনে বিএনপির অস্তিত্ব রক্ষায় ধানের শীষের প্রতীকে নির্বাচন করার দাবি জানিয়েছিলেন।

বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির সভাপতি নজমুল হোসেন পুতুল বলেন, এই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপির সব নেতার মুখে একটি কথাই ছিল, আর তা হচ্ছে নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক যেন থাকে। ফয়সল আহমদ চৌধুরীর হাত হয়ে ধানের শীষ প্রতীক এসেছে। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচনে দলীয় প্রতীকবিহীন অবস্থার অবসান হলো বলে তিনি করেন।