প্রার্থী নিয়ে দুই জোটেই ভজকট

হাফিজ আহমদ মজুমদার, সেলিম উদ্দিন, ফরিদ উদ্দিন ও মামুনুর রশীদ
হাফিজ আহমদ মজুমদার, সেলিম উদ্দিন, ফরিদ উদ্দিন ও মামুনুর রশীদ

সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট) আসনে মহাজোট কিংবা ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী নিয়ে প্রার্থীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ভজকট অবস্থা। কারণ আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি (জাপা), বিএনপি, জামায়াত, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামসহ সব দলের প্রার্থীই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। সবাই আবার নিজেদের চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে দাবিও করছেন।
গত বুধবার মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিনে এ আসনে ১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁরা হচ্ছেন সেলিম উদ্দিন (জাপা), হাফিজ আহমদ মজুমদার (আওয়ামী লীগ), মো. বাহার উদ্দিন আল রাজী (স্বতন্ত্র, আ.লীগের বিদ্রোহী), ফয়জুল মুনির চৌধুরী (স্বতন্ত্র, আ.লীগের বিদ্রোহী), মামুনুর রশীদ (বিএনপি), ফরীদ উদ্দিন চৌধুরী (জামায়াত), শরীফ আহমদ লস্কর (বিএনপি), এম এ মতিন চৌধুরী (ইসলামী ঐক্যজোট), উবায়দুল্লাহ ফারুক (জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম), মো. নুরুল আমীন (ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ), আহমদ আল ওয়ালী (স্বতন্ত্র) ও মো. শহীদ আহমদ চৌধুরী (স্বতন্ত্র)।
মনোনয়নপত্র জমাদানকারীদের রাজনৈতিক পরিচয় ঘেঁটে দেখা গেছে, মহাজোট থেকে দুজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁরা হলেন বর্তমান সাংসদ ও জাপার কেন্দ্রীয় নেতা সেলিম উদ্দিন। তিনি সিলেট-৬ আসনেও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ দলীয় মনোনয়ন পেয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। উভয়েই নিজেদের মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে জানান দিচ্ছেন। এর বাইরে আওয়ামী লীগের দুজন নেতা স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান শরিক বিএনপি। জোটভুক্ত চারজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও এ আসনের সাবেক সাংসদ মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় এখানে ধানের শীষ প্রতীকের মনোনয়ন পেয়ে ফরম জমা দিয়েছেন। এ ছাড়া জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও কানাইঘাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি মামুনুর রশীদ ও জকিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শরিফ আহমদ লস্কর দলীয় মনোনয়ন পেয়ে ফরম জমা দিয়েছেন। একই ফ্রন্টের অন্তর্ভুক্ত জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতা মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুকও এখানে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
২০-দলীয় ঐক্যজোটের কয়েকজন নেতা জানান, কিছুদিন ধরেই এখানে বিএনপি ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম যৌথভাবে সভা-সমাবেশ করে এ আসনে জামায়াতের কাউকে মনোনয়ন না-দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছে। অন্যদিকে জামায়াতের একটি সূত্র জানিয়েছে, অতীতে জামায়াতের প্রার্থী এখানে নির্বাচন করে জয়লাভ করেছেন। এ আসনে জামায়াতের অবস্থানও বেশ শক্ত। এটি বিবেচনায় নিয়ে জামায়াতকে আসন বিএনপি ছেড়ে দিয়েছে।
ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিএনপি যে ২৫টি আসন জামায়াতকে ছেড়ে দিয়েছে, এর মধ্যে সিলেট-৫ অন্যতম। কৌশলের অংশ হিসেবে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে অসংখ্য প্রার্থী এখানে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
বিএনপির প্রার্থী মামুনুর রশীদ বলেন, ‘দল থেকে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, দল আমাকেই চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেবে।’
আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাফিজ আহমদ মজুমদার বলেন, ‘আমি রাজনীতি থেকে দূরে সরে গিয়েছিলাম। এ অবস্থায় আমাকে পুনরায় আনা হয়েছে। দলীয় মনোনয়ন পেয়ে মনোনয়নপত্রও জমা দিয়েছি। আমিই এখানে নির্বাচন করব। এ আসনের সাংসদ ছিলাম আমি। এলাকার মানুষের সঙ্গেও আমার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। তাঁরা নিশ্চয়ই পুনরায় আমাকে নির্বাচিত করবেন।’