ডিসি-এসপিদের বদলিতে আস্থা ফিরবে

মওদুদ আহমদ। প্রথম আলো ফাইল ছবি
মওদুদ আহমদ। প্রথম আলো ফাইল ছবি

জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) বদলি করলে জনমনে আস্থা ফিরবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ। তিনি বলেছেন, দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ন্যূনতম পরিবেশ নেই। দিন দিন পরিবেশের অবনতি হচ্ছে।

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে দলের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের মওদুদ এ কথা বলেন। এ সময় তিনি দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত চারটি চিঠি নির্বাচন কমিশনে জমা দেন। মওদুদের সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

মওদুদ আহমদ বলেন, সরকার তাদের নীলনকশা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন সেটা রোধ করতে পারছে না। দেশব্যাপী গণগ্রেপ্তার ও পুলিশি অভিযান চলছে। যাঁরা নির্বাচন করবেন, তাঁরা বাসায় থাকতে পারছেন না। বিএনপির সাতজন সম্ভাব্য প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অনেকে আগে থেকেই গ্রেপ্তার হয়ে জেলে আছেন। তাঁদের জামিন হবে কি না, বলা মুশকিল। কারণ বিচারিক আদালতও সরকারের নিয়ন্ত্রণে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। উচ্চ আদালত জামিন দিলেও নিম্ন আদালত নানা অজুহাতে জামিন দিচ্ছে না।

মির্জা ফখরুলের চিঠিগুলোর মধ্যে একটিতে গণগ্রেপ্তার বন্ধ, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মুক্তি এবং পুলিশ বিভাগ ও জনপ্রশাসনে বদলি, প্রত্যাহার ও রদবদলের মাধ্যমে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার দাবি করা হয়। একটিতে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের মধ্যে যাঁদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যাচাই করেছে, তাঁদের বাদ দেওয়ার দাবি করা হয়। অন্য দুটির একটিতে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিপপের চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা এবং অপরটিতে ভোটকেন্দ্রগুলোতে নৈর্ব্যক্তিকভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানানো হয়।

চিঠি জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, সরকারের সাজানো প্রশাসন সংসদ নির্বাচনে কাজ করছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা বা ডিসিরা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা বা ইউএনওরা মূল প্রশাসনের লোক। এসপি-এএসপিরাও সরকারের অধীনেই কাজ করেন। তাঁরা তাদের ক্ষমতার প্রয়োগ করে যাচ্ছেন। তাঁরা এখনো দলীয়ভাবে সরকারের অধীনে কাজ করছেন। সরকারের সাজানো প্রশাসন ও সাংসদেরা মাঠ পর্যায়ে প্রভাব বিস্তার করে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় সবার জন্য সমান সুযোগ সম্ভব নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ন্যূনতমভাবে গণগ্রেপ্তার বন্ধ ও প্রশাসনে রদবদল হলে পরিবেশ কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। ডিসি-এসপিদের বদলি করলে জনমনে আস্থা ফিরবে।

মওদুদ বলেন, ‘নির্বাচন প্রহসনে পরিণত হোক, আমরা তা চাই না। কারণ জাতির জন্য এটাই শেষ সুযোগ। নির্বাচন কমিশন আমাদের বলেছে তারা অভিযোগ পর্যবেক্ষণ করবে, যাচাই করে ব্যবস্থা নেবে।’