স্কুলে অপমানের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

বাবা দিলীপ অধিকারীর সঙ্গে অরিত্রি অধিকারী। ছবি:সংগৃহীত
বাবা দিলীপ অধিকারীর সঙ্গে অরিত্রি অধিকারী। ছবি:সংগৃহীত

রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, স্কুলে নকলের অভিযোগে অপমানের জের ধরে সে আত্মহত্যা করেছে। আজ সোমবার রাজধানীর শান্তিনগরে এই ঘটনা ঘটে।

মারা যাওয়া ওই ছাত্রীর নাম অরিত্রি অধিকারী (১৫)। সে ভিকারুননিসায় নবম শ্রেণিতে পড়ত। বিকেলে সাড়ে চারটার দিকে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসকেরা অরিত্রিকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই ছাত্রীর গ্রামের বাড়ি বরগুনা সদরে।

অরিত্রির বাবা দিলীপ অধিকারী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর মেয়ের পরীক্ষা চলছে। গতকাল রোববার পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষক অরিত্রির কাছে মোবাইল ফোন পায়। মোবাইলে নকল করছে—এমন অভিযোগে অরিত্রিকে আজ সোমবার তার বাবা-মাকে নিয়ে স্কুলে যেতে বলা হয়।

দিলীপ অধিকারী অভিযোগ করেন, আজ তিনি স্ত্রী ও অরিত্রিকে নিয়ে স্কুলে যান। তার ছোট মেয়েও একই স্কুলে পড়ে। তাঁরা প্রথমে ভাইস প্রিন্সিপালের কক্ষে যান। কিন্তু ভাইস প্রিন্সিপাল তাঁদের ‘অপমান’ করে কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। আগামীকাল মেয়ের টিসি (স্কুল থেকে দেওয়া ছাড়পত্র) নিয়ে যেতেও বলা হয়। দিলীপ অধিকারী বলেন, এরপর তিনি প্রিন্সিপালের কক্ষে যান। যেখানে স্কুল পরিচালনা পর্ষদের একজন সদস্যও ছিলেন। প্রিন্সিপালও ভাইস প্রিন্সিপালের মতো আচরণ করেন।

দিলীপ অধিকারী বলেন, এ সময় অরিত্রি দ্রুত প্রিন্সিপালের কক্ষ থেকে বের হয়ে যায়। পরে স্ত্রীসহ তিনি বাড়ি গিয়ে দেখেন অরিত্রি তার কক্ষে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়নায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছে। অরিত্রিকে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেন তাঁরা। পরে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়।

পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আতাউর রহমান বলেন, সুরতহাল করে অরিত্রির লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর তার মৃত্যু কারণ জানা যাবে।
ময়নাতদন্ত শেষে ঢামেকের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক সোহেল মাহমুদ জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে মেয়েটি গলায় ফাঁস দিয়েছে। তার গলায় দাগ ছিল। তার ‘নেক টিস্যু’ সংগ্রহ করা হয়েছে, তা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।

এদিকে অরিত্রির মৃত্যুর সংবাদ শুনে সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান ভিকারুননিসার প্রিন্সিপাল নাজনীন ফেরদৌস। সেখানে তিনি অরিত্রির স্বজনদের তোপের মুখে পড়েন। এ সময় তাঁরা প্রিন্সিপালের গাড়ি ঘিরে রাখেন। কিছুক্ষণ পর তিনি দ্রুত হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান।

এ ব্যাপারে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল নাজনীন ফেরদৌসের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরে ফোন করতে বলেন।