যুবলীগ নেতা হত্যা, মাথা-মুখ থেঁতলে দেয় বিএনপি-জামায়াত

নোয়াখালী সদর উপজেলায় যুবলীগের কর্মী মো. হানিফ (২৪) নিহতের ঘটনায় বিএনপি ও জামায়াতকে দায়ী করেছে আওয়ামী লীগ। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী-৪ আসনে (সদর ও সুবর্ণচর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাংসদ মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী এ অভিযোগ করেন।

জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংসদ অভিযোগ করেন, বিএনপি ও জামায়াত পরিকল্পিতভাবে যুবলীগ নেতা হানিফকে ধরে নিয়ে চোখে মরিচ ছিটিয়ে ইট দিয়ে তাঁর মাথা ও মুখ থেঁতলে দেয় এবং তাঁর পায়ে গুলি করে হত্যা নিশ্চিত করে। তিনি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। এর আগে তিনি হাসপাতালে গিয়ে হানিফের লাশ দেখে আসেন এবং তাঁর বাবাকে সান্ত্বনা দেন।

নিহত হানিফ এওজবালিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।

তবে নোয়াখালী-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান দাবি করেছেন, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা বিনা কারণে বিএনপির বৈঠকে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করতে গিয়ে যুবলীগের একজন মারা গেছেন। ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। হামলা করার কারণেই বিএনপির কর্মীরা প্রতিহত করেছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

দলীয় ও স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, মঙ্গলবার বিকেলে সদর উপজেলার নুর পাটোয়ারীর হাটের পশ্চিম পাশে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুর রহিম ওরফে রিজভীর বাড়িতে বিএনপি ও জামায়াতের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বৈঠকে বসেন। বিকেল সোয়া চারটার দিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের একদল নেতা-কর্মী ওই বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, পাল্টাপাল্টি হামলা, সংঘর্ষ বাধে। এ সময় বেশ কয়েকটি গুলির শব্দ শোনা যায়।

আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের ভাষ্য, বিএনপির কর্মীরা যুবলীগ নেতা মো. হানিফের চোখে মরিচের গুঁড়া নিক্ষেপ করে ইট দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে এবং পায়ে গুলি করে। এতে ঘটনাস্থলেই হানিফ মারা যান। পরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম প্রথম আলোকে বলেন, নিহত হানিফের দুই পা গুলিবিদ্ধ হয়। এ ছাড়া তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থান আঘাতে থেঁতলানো ও রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা গেছে। লাশ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।

মর্গের সামনে হানিফের বাবা মফিজ উল্যাহ বারবার আহাজারি করে বলেন, ‘আমার এত সুন্দর ছেলেটারে তাঁরা এভাবে নির্মমভাবে কেন মারল? তাঁর কী অপরাধ?’

নিহত হানিফের চাচাতো ভাই দেলোয়ার হোসেনের কাছে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে মফিজ উল্যাহ বলেন, ঘটনা সম্পর্কে সাংসদ একরামুল করিম যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাই তাঁদের বক্তব্য।

সুধারাম থানার ওসি আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির একটি বৈঠক থেকে যুবলীগের নেতা হানিফসহ কয়েকজনের ওপর অতর্কিতে হামলা চালানো হয়। এতে ওয়ার্ড যুবলীগের নেতা হানিফ মারা গেছেন। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত।