নির্বাচন কমিশন ব্যথিত-বিব্রত: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। ফাইল ছবি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। ফাইল ছবি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, ‘গতকাল আনন্দের সঙ্গে বলেছিলাম, সারা দেশে নির্বাচনী কার্যক্রমে কোনো অঘটন ঘটেনি। কিন্তু তারপরেই দুটো ঘটনা ঘটেছে, যা আমাদের বিব্রত করেছে, মর্মাহত করেছে। নিহতের ঘটনায় আমরা বিব্রত-ব্যথিত।’

ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপি মহাসচিবের গাড়িতে হামলার ঘটনাটিও অনাকাঙ্ক্ষিত বলে মন্তব্য করেন সিইসি। তিনি বলেন, এ ঘটনায় তাঁরা বিব্রত। এটা কখনো কাম্য হতে পারে না। একটা মানুষের জীবন সমস্ত নির্বাচনের চেয়ে মূল্যবান। সারা দেশে যে ৩০০টি আসনে নির্বাচন হবে, তার যে মূল্য, একটা মানুষের জীবনের মূল্য তার চেয়ে বেশি। সহিংসতার কারণে সেই জীবন চলে গেল, এটা কারও কাম্য হতে পারে না। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে বের করতে হবে।

সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা, কর্মী, প্রার্থী, ভক্ত, সকলের প্রতি অনুরোধ করতে চাই—আপনারা ধৈর্যশীল আচরণ করবেন। নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলবেন, কারও নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবেন না। একে অন্যের গণতান্ত্রিক অধিকার, মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাবেন। যেকোনো উত্তেজনাকর, উদ্বেগজনক নির্বাচন পরিপন্থী ও অনাকাঙ্ক্ষিত কার্যাবলি পরিহার করবেন এবং নিজেরাই তার প্রতিহত করবেন।’

পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিচারিক হাকিমদের সচেষ্ট থাকার নির্দেশনা দিয়ে সিইসি বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। মানুষকে আশ্বস্ত করতে হবে নির্বাচন সহিংসতার জায়গা নয়। নির্বাচন মানুষের ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের জায়গা। ধৈর্য ও একে অন্যের প্রতি সম্মান দেখিয়ে নির্বাচন পরিচালনা করতে ম্যাজিস্ট্রেটদের নির্দেশ দেন সিইসি।

সিইসি বলেন, এবারের সংসদ নির্বাচন বৈশিষ্ট্যপূর্ণ তো বটেই, সবদিক দিয়ে আলাদা নির্বাচন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আগের কোনো নির্বাচনের সঙ্গে তুলনা করা যায় না। প্রতিটা কেন্দ্রে গড়ে ছয়জন প্রার্থী, সারা দেশে মোট ১ হাজার ৮০০-এর বেশি প্রার্থী মাঠে থাকবেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। নির্বাচন অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বীপূর্ণ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সিইসি।

কমিশন নির্বাচনের আগে সব ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাছে দেওয়া হয়েছে। আইনের সঠিক প্রয়োগ করে একটি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল নির্বাচন উপহার দিতে এসব কর্মকর্তার প্রতি আহ্বান জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

এ সময় নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।