জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্রদ্ধা। সাভার, ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্রদ্ধা। সাভার, ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: সংগৃহীত

মহান বিজয় দিবসে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। আজ ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে প্রথমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এর পরপরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা। সাভার, ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: সংগৃহীত
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা। সাভার, ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: সংগৃহীত

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর প্রধান বিচারপতি, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান।

বিএনপির পক্ষ থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা। সাভার, ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: দীপু মালাকার
বিএনপির পক্ষ থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা। সাভার, ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: দীপু মালাকার

পরে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সর্বস্তরের মানুষের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এখন সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে জনতার ঢল নেমেছে। শ্রদ্ধা-ভালোবাসা নিয়ে শহীদদের উদ্দেশে পুষ্পাঞ্জলি নিবেদন করছে লাখো মানুষ।বীরের জাতি হিসেবে বাঙালির আত্মপ্রকাশের দিন আজ। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের অস্তিত্ব প্রকাশের দিন আজ ১৬ ডিসেম্বর। পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মাতৃভূমিকে মুক্ত করতে প্রাণ উৎসর্গ করা যুদ্ধজয়ের আনন্দ অতুলনীয়। ৪৭ বছর আগে এই দিনে বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী হাতের অস্ত্র ফেলে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়েছিল বিজয়ী বাঙালির সামনে। তারা স্বাক্ষর করেছিল পরাজয়ের সনদে।

মহান বিজয় দিবসে বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে জনতার ঢল। সাভার, ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: দীপু মালাকার
মহান বিজয় দিবসে বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে জনতার ঢল। সাভার, ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: দীপু মালাকার

সারা দেশের মানুষের পাশাপাশি পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে থাকা বাঙালিরা আজ মহান বিজয় দিবসে আনন্দে মেতে উঠেছে। একই সঙ্গে স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করা অকুতোভয় বীর সন্তানদের গভীর বেদনা ও পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করছে কৃতজ্ঞ জাতি। শ্রদ্ধা জানাচ্ছে সম্ভ্রম হারানো মা-বোনদের।

ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ। সাভার, ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: দীপু মালাকার
ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ। সাভার, ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: দীপু মালাকার

বঙ্গবন্ধুর বজ্রকণ্ঠের ভাষণ আর মুক্তিযুদ্ধের সময়ের জাগরণী গানে মুখরিত পাড়া-মহল্লা, গলি থেকে রাজপথ।

বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে। সাভার, ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: দীপু মালাকার
বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে। সাভার, ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: দীপু মালাকার

পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ২৪ বছরের মুক্তির সংগ্রাম ও একাত্তর সালের নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের পথ বেয়ে এসেছে বাঙালির বিজয়। সাম্প্রদায়িক দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে সৃষ্ট পাকিস্তানে ১৯৪৭ সালেই বাঙালির ওপর প্রথম আঘাত এসেছিল। রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন পাকিস্তানি শাসকেরা। ১৯৫২ সালে বুকের তাজা রক্তে রাজপথ রাঙিয়ে বাংলার বীর সন্তানেরা মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে বিশ্বে এক অনন্য নজির সৃষ্টি করেছিলেন। ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধিকারের চেতনার যে স্ফুরণ ঘটেছিল, কালক্রমে তা সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে রূপ নেয়।

জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে প্রতিবন্ধীরা। সাভার, ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: দীপু মালাকার
জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে প্রতিবন্ধীরা। সাভার, ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: দীপু মালাকার

বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার জন্য চূড়ান্ত যুদ্ধে অংশ নিতে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে তোলেন। তিনি ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার সামনে দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণে শত্রুদের মোকাবিলা করার জন্য যার কাছে যা আছে, তা নিয়ে সবাইকে প্রস্তুত থাকতে বলেন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে। সাভার, ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: দীপু মালাকার
বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে। সাভার, ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: দীপু মালাকার

পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল নিরস্ত্র নিরপরাধ ঘুমন্ত বাঙালির ওপর। বর্বর হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছিল তারা। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি থেকে সেই রাতেই তারা বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে। তবে তার আগেই তিনি বাঙালির ওপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যা শুরুর বার্তা দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। সেই ঘোষণায় তিনি বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান।

বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে। সাভার, ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: দীপু মালাকার
বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে। সাভার, ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর। ছবি: দীপু মালাকার

বঙ্গবন্ধুর সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তোলে বীর বাঙালি। দীর্ঘ নয় মাস সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের এই দিনে পৃথিবীর মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশের। লাল-সবুজ পতাকা ঊর্ধ্বে তুলে ধরে বিজয়ী বাঙালি। সেই পতাকা উঁচিয়ে প্রগতির পথে চলেছে বাঙালির অভিযাত্রা।