দ্বন্দ্ব ভুলে প্রচারে সরব নেতারা

গণসংযোগ করছেন চট্টগ্রাম-৯ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিবুল হাসান চৌধুরী। গতকাল নগরের নন্দন কানন এলাকায়।  ছবি: প্রথম আলো
গণসংযোগ করছেন চট্টগ্রাম-৯ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিবুল হাসান চৌধুরী। গতকাল নগরের নন্দন কানন এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো
>
  • চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ
  • প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে কোন্দল ও মনোমালিন্য বেড়ে যায়। 
  • এখন একসঙ্গে প্রচারণায় দল ও জোটের নেতারা।

তফসিল ঘোষণার পর বিভিন্ন আসনে প্রার্থী হতে চেয়ে একাধিক নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে কিছুদিন ধরে কিছু নেতার মধ্যে কোন্দল এবং মনোমালিন্যও দেখা দিয়েছিল। তবে প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার পর আবার সেই কোন্দল ক্রমশ মিটিয়ে একসঙ্গে প্রচারণায় নেমেছেন আওয়ামী লীগ এবং জোটের নেতারা।

নেতাদের ভাষ্য, দলীয় ঐক্যের বিকল্প নেই। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টকে মোকাবিলায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি সর্বোপরি নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে ভোটযুদ্ধ করবে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, এটা শুধু ভোটের যুদ্ধ নয়, এটা আদর্শিক যুদ্ধ। কারণ, একদিকে আওয়ামী লীগ আর অন্যদিকে দেশবিরোধীরা বিএনপির নেতৃত্বে একজোটে রয়েছে। সেখানে ২১ আগস্টের খুনিরা যেমন আছে, তেমনি যুদ্ধাপরাধী দলও আছে। এই নেগেটিভ জোট তাঁদের নেতাদের ঐক্যের জন্য শাপে বর হয়েছে। চট্টগ্রামের সব আসনেই আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ বলে জানালেন তিনি।

মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে মহিবুল হাসান চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী। এ আসনে দলের প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন সদ্য সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি এবং নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম।

কিন্তু প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার পরপরই আবদুচ ছালাম নওফেলের সঙ্গে প্রচারণায় রয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার থেকে নগর কমিটির সহসভাপতি নুরুল ইসলাম বিএসসিও নওফেলের জন্য বাকলিয়া এলাকায় গণসংযোগ করেছেন। ওই দিন সকালে নওফেল বিএসসির বাসায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন।

এর আগে প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার পর নওফেল নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। নওফেলের নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন করেন মেয়র নিজেই।

এ ছাড়া আ জ ম নাছিরের সঙ্গে একসময় নগর কমিটির সহসভাপতি সাংসদ আফছারুল আমীনের দ্বন্দ্ব ছিল। আফছারুল আমীন চট্টগ্রাম-১০ (হালিশহর-ডবলমুরিং) থেকে মনোনয়ন পাওয়ার পর সেই দ্বন্দ্বও মুছে যায়। গত শুক্রবার হালিশহর এলাকায় নাছির ও আফছারুল আমীন একসঙ্গে প্রচার চালিয়েছেন। একইভাবে চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর পতেঙ্গা) আসনের প্রার্থী এম এ লতিফের সঙ্গে দূরত্ব থাকলে সেখানেও প্রচারণায় যাচ্ছেন মেয়র।

জানতে চাইলে আ জ ম নাছির উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, দল যাঁকে মনোনয়ন দেয়, আওয়ামী লীগের নেতারা তাঁর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ। একই আসনে অনেক যোগ্য প্রার্থী আছেন। কিন্তু দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ নন।

চট্টগ্রাম-১০ আসনে দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মো. মহিউদ্দিন ও যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ। চট্টগ্রাম-১১ আসনে মনোনয়ন চেয়ে পাননি নগর আওয়ামী লীগের দুই সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী। তাঁরাও দলীয় প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নেমেছেন।

চট্টগ্রাম নগরের সঙ্গে সংযুক্ত চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন জাসদ নেতা মইন উদ্দীন খান বাদল। একই আসনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন আওয়ামী লীগের দক্ষিণ জেলার সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ। মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পর মোছলেম উদ্দিন জোটের প্রার্থীর পক্ষে প্রতিনিধি সভা করে সবার কাছে ভোট চেয়েছেন।