পিডিপির প্রার্থী রুপা রায়ের কর্মী স্বামী ও ছেলেরা
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল–৭ (মির্জাপুর) আসনের নারী প্রার্থী রুপা রায় চৌধুরীর কর্মী তাঁর স্বামী ও ছেলেরা। তাঁর স্বামী হিমাংশু শেখর রায় স্ত্রীর জন্য নিজেই এলাকায় এলাকায় গিয়ে পোস্টার সাঁটাচ্ছেন। সাইকেলে মাইক নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। নিজ হাতে ভোটারদের কাছে প্রচারপত্র বিলি করছেন।
প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টি (পিডিপি) থেকে রুপা রায় চৌধুরী নির্বাচন করছেন। তাঁর হলফনামা থেকে জানা যায়, পেশায় তিনি গৃহিণী ও কৃষিজীবী। শিক্ষাগত যোগ্যতা স্বাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন। কৃষি খাত থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ৩২ হাজার আর নির্ভরশীলদের আয় ১৮ হাজার টাকা।
এ ছাড়া নির্ভরশীলদের চাকরি থেকে বছরে ১ লাখ ৫২ হাজার ৪০০ টাকা আয় রয়েছে।
হলফনামা থেকে আরও জানা যায়, তাঁর নিজের নগদ ১৮ হাজার টাকা ও ব্যাংকে স্বামীর নামে ১ হাজার টাকা রয়েছে। এ ছাড়া স্বামীর প্রায় ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের ৬৯ শতক জমি রয়েছে।
গত মঙ্গলবার রাত পৌনে আটটার দিকে প্রচারণার জন্য ধারণ (রেকর্ড) করা গান মাইকে বাজিয়ে মির্জাপুর বাজারে সাইকেলে চেপে স্ত্রীর জন্য প্রচারণা চালাচ্ছিলেন হিমাংশু শেখর রায়। একই সঙ্গে তিনি সাইকেল থামিয়ে বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছে প্রচারপত্র বিলি করে ভোট প্রার্থনা করছিলেন। এ সময় তিনি বলেন, সংসারের কাজ শেষে রুপা রায় চৌধুরী ছোট দুই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির আশপাশে দিনের বেলা প্রচারণা চালান। তাঁদের তেমন টাকা নেই। কর্মীদের মাধ্যমে প্রচারণা চালালে টাকার প্রয়োজন। এ জন্য যতটুকু সময় পান পরিবারের সদস্যরাই প্রচার চালাচ্ছেন।
হিমাংশু শেখর আরও বলেন, এলাকায় ঘুরে ঘুরে পোস্টার সাঁটানোর জন্য বাঁশ দিয়ে একটি মই বানিয়েছেন। বাজার থেকে সুতলি ও আটা কিনে নিজেই পোস্টার লাগিয়ে তা বিভিন্ন স্থানে সাঁটাচ্ছেন। এ কাজে তাঁর সবচেয়ে বড় সঙ্গী নিজের তৈরি বাঁশের মই আর চাচাতো ভাই প্রশান্ত রায়ের দেওয়া বাইসাইকেল। টাকার জোগান যতটুকু পারছেন নিজেরাই দিচ্ছেন।
তাঁর (হিমাংশু) বাবা ভবেশ রায় বলেন, ‘১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের অ্যাসেম্বলির বৃহত্তর ময়মনসিংহ–৩৫ (মির্জাপুর-নাগরপুর) আসনে রাইচরণ রায় (মুক্তার) এমএলএ নির্বাচিত হন। আমরা তাঁর বংশধর। আমাদের বংশে একজন এমপি ছিল। এ কারণে ছেলের বউ এমপি নির্বাচন করছে।’
রুপা রায় চৌধুরী বলেন, প্রায় চার বছর আগে তাঁরা রামকৃষ্ণ পার্টি নামে একটি দল গঠন করেন। দলটির সভাপতি তিনি আর সাধারণ সম্পাদক তাঁর শ্বশুর ভবেশ রায়। দলটির নিবন্ধন না পাওয়ায় তিনি পিডিপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। এ কাজে তাঁকে তাঁর স্বামী ও শ্বশুর সবচেয়ে বেশি উৎসাহ দিয়েছেন।
রুপা আরও বলেন, ‘নারী হিসেবে আমাদের অধিকার আদায় করতে ছোট জায়গা থেকে সাহস করে কাজ করতে হবে। আমি এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে ভোট প্রার্থনা করছি। আমাকে সবাই সহযোগিতা করছেন। বিজয়ী হওয়ার বিষয়ে আমি আশাবাদী।’
প্রসঙ্গত, প্রায় চার বছর ধরে রুপা রায় এলাকার বিভিন্ন স্থানে দেয়াললিখন ও ফেস্টুন সাঁটানোর মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন।