দৃশ্যপটে কেবল নৌকা

এলাকা ঘুরে, প্রচারণা দেখে বোঝার উপায় নেই, ঢাকা-১৫ আসনে ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গণসংযোগ, মিছিল, সভা-সমাবেশ, পোস্টার কিংবা ব্যানার-ফেস্টুনে একচেটিয়াভাবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কামাল আহমেদ মজুমদারের উপস্থিতি দৃশ্যমান। অবশ্য ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও মহাজোটের শরিক দল জাতীয় পার্টির প্রার্থীর কিছু পোস্টারও চোখে পড়ে।

নির্বাচনের মাত্র পাঁচ দিন আগেও নৌকা প্রতীকের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী নির্বাচনের মাঠে নেই।

এবারের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বর্তমান সাংসদ কামাল মজুমদারেই আস্থা রেখেছে। ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই মাঠে সরব প্রবীণ এই রাজনীতিক। প্রায় প্রতিদিন চলছে এলাকাভিত্তিক গণসংযোগ। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বসানো হয়েছে একাধিক নির্বাচনী ক্যাম্প। সংসদীয় এলাকায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে চলছে মতবিনিময়। কোনো কোনো জায়গায় তিনি নিজে উপস্থিত না থাকতে পারলেও তাঁর হয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যরা সবকিছু চালিয়ে নিচ্ছেন। গতকাল সোমবার বিকেলেও তিনি ১৪ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে গণসংযোগ চালান। পরে একই এলাকার হাজী আশরাফ আলী স্কুলে একটা সমাবেশে অংশ নেন।

কামাল মজুমদারের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান লড়ছেন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে। মূলত প্রচারপত্র বিতরণেই নিজেদের প্রচার সীমিত রেখেছে দলটি। ওই আসনের ভোটাররা জানান, দিনের বেলা প্রচারণায় দেখা যায় না দলের নেতা-কর্মীদের। রাতের বেলা কিছুটা বিক্ষিপ্তভাবে প্রচার চালান জামায়াতের কর্মীরা। ১০ থেকে ১২ জনের ছোট ছোট দল করে এলাকাভিত্তিক প্রচারপত্র বিতরণ করেন। এর বাইরে এলাকাভিত্তিক ভোটারদের কাছে মুঠোফোনে খুদে বার্তা (এসএমএস) পাঠানো হচ্ছে। যেখানে লেখা, ‘খালেদা জিয়ার সালাম নিন, ডা. শফিকুর রহমানকে ধানের শীর্ষে ভোট দিন’। ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যার দিকে ইব্রাহিমপুর এলাকায় শফিকুর রহমানের নাম উল্লেখ করে এ ধরনের এসএমএস পাঠানো হয়। নিবন্ধন না থাকায় প্রচারপত্র বা খুদে বার্তায় জামায়াতে ইসলামী উল্লেখ নেই।

আসনটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৪, ১৩, ১৪ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এসব ওয়ার্ডের আওতাভুক্ত এলাকাগুলো হচ্ছে মিরপুরের সেকশন ১৩ ও ১৪, বড়বাগ, পীরেরবাগ, মণিপুর, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, সেনপাড়া, পর্বতা, ইব্রাহিমপুর ও কাফরুল। ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৫৬২। ১৯৯১ সাল থেকে পাঁচটি  সংসদ নির্বাচনে এই আসনে তিনবার আওয়ামী লীগ ও দুবার বিএনপি বিজয়ী হয়েছে।

সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের পর ২০০৮–এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কামাল মজুমদার বিএনপির হামিদুল্লাহ খানকে হারিয়ে দেন।