৫টি ভোটের ফলে এগিয়ে আ.লীগ

সিলেটের ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে দুটি আসনে গত প্রায় দুই যুগে কখনোই ধানের শীষ প্রতীক বিজয়ী হয়নি। তবে এর মধ্যে একটিতে একবার চারদলীয় জোটের শরিক দল জামায়াতের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছিলেন। পাঁচটি সংসদ নির্বাচনের ফল ঘেঁটে এ তথ্য জানা গেছে। ওই ফলাফল বলছে, জয় পাওয়ার হিসাবে আওয়ামী লীগই দল হিসেবে সবার ওপরে রয়েছে।

সিলেট-১ আসনে তিনবার আওয়ামী লীগ ও দুইবার বিএনপি জয় পেয়েছে। সিলেট-২ আসনে দুইবার করে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি এবং একবার বিএনপি জয় পায়। সিলেট-৩ আসনে দুইবার করে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির এবং একবার বিএনপির প্রার্থী জয়ী হন। সিলেট-৪ আসনে আওয়ামী লীগ তিনবার ও বিএনপি দুইবার জয়ী হয়। সিলেট-৫ আসনে দুইবার আওয়ামী লীগ এবং একবার করে জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ঐক্যজোট জয় পেয়েছে। সিলেট-৬ আসনে তিনবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং একবার জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও স্বতন্ত্র হিসেবে বিএনপির ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী একবার বিজয়ী হন।

সিলেট-১ (মহানগর ও সদর):  সিলেট-১ আসনে তিনবার আওয়ামী লীগ এবং দুইবার বিএনপির প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী প্রয়াত খন্দকার আবদুল মালিক সাংসদ হয়েছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রয়াত স্পিকার হুমায়ূন রশিদ চৌধুরী জিতেছিলেন। ২০০১ সালে বিএনপির প্রয়াত অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান জয়ী হন। বর্তমান সাংসদ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন মুহিত।

সিলেট-২ (বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর): ১৯৯১ সালে জাতীয় পার্টির মকসুদ ইবনে আজিজ লামা, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের শাহ আজিজুর রহমান, ২০০১ সালে বিএনপির এম ইলিয়াস আলী, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের শফিকুর রহমান চৌধুরী ও ২০১৪ সালে জাপার মো. ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী বিজয়ী হন।

সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ): পাঁচটি নির্বাচনের মধ্যে দুইবার (২০০৮ ও ২০১৪ সালে) আওয়ামী লীগের প্রার্থী (মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী) বিজয়ী হয়েছেন। বাকি তিনবারই আওয়ামী লীগের প্রার্থী দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন। এর মধ্যে ২০০১ সালে এখানে জয় পান বিএনপির প্রার্থী শফি আহমেদ চৌধুরী। আর ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে জিতে সাংসদ হন জাপার এ মুকিত খান।

সিলেট-৪ (গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ): এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে আসছেন ইমরান আহমদ। তিনি তিনবার (১৯৯১, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে) এখানে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি দুইবার এখানে বিএনপির প্রার্থী জয় পেয়েছেন। ১৯৯৬ সালে প্রয়াত সাইফুর রহমান ও ২০০১ সালে দিলদার হোসেন সেলিম বিজয়ী হন।

সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট): এই আসনে আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জাতীয় পার্টি ও ধর্মভিত্তিক দুটি দলের ভোটব্যাংক রয়েছে। দুইবার (১৯৯৬ ও ২০০৮ সাল) আওয়ামী লীগের প্রার্থী (হাফিজ আহমদ মজুমদার) বিজয়ী হয়েছেন। একবার করে জিতেছেন জাতীয় পার্টি (২০১৪ সালে, সেলিম উদ্দিন), জামায়াতে ইসলামী (২০০১ সালে, ফরীদ উদ্দিন চৌধুরী) ও ইসলামী ঐক্যজোটের (১৯৯১ সালে, ওবায়দুল হক) প্রার্থীরা। ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জামায়াতের ফরীদ উদ্দিন চৌধুরী। ২০০১ সালে ও ১৯৯১ সালে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের হাফিজ আহমদ মজুমদার।

সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ):  শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এখানে ১৯৯৬, ২০০৮ ও ২০১৪ সাল এই তিনবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন। ১৯৯১ ও ২০০১ সালের নির্বাচনেও নাহিদ নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। এর মধ্যে ১৯৯১ সালের নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রার্থী হন। ওই দুটি নির্বাচনে জেতেন যথাক্রমে জাতীয় পার্টির প্রার্থী শরফদ্দিন খসরু এবং স্বতন্ত্র হিসেবে বিএনপির ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী সৈয়দ মকবুল হোসাইন লিচু মিয়া। ২০০১ সালে এখানে চারদলীয় জোটের মনোনীত প্রার্থী জামায়াতের হাবিবুর রহমানের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। অবশ্য ২০০৮ সালের নির্বাচনে হাবিবুর রহমান নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন।