ফল না নিয়ে কেন্দ্র না ছাড়ার আহ্বান রিজভীর

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। প্রথম আলো ফাইল ছবি
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। প্রথম আলো ফাইল ছবি

সব হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি উপেক্ষা করে দলে দলে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘আপনাদের একেকটি ভোট নিশ্চিত করতে পারে জনগণের মুক্তি ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। ফলাফল না নিয়ে আপনারা ভোটকেন্দ্র ত্যাগ করবেন না।’

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘ভোটাররা ভোটকেন্দ্র পাহারা দেওয়ার মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার রক্ষা করবেন। আজ বিকেল থেকে পালাক্রমে ভোটকেন্দ্র পাহারা দেবেন। ফজরের নামাজ পড়েই ভোটের লাইনে দাঁড়ানোর জন্য আপনাদের অনুরোধ করছি। ভোট শুরুর আগে ব্যালট বাক্স পরীক্ষা করবেন। ভোট দিয়ে কেন্দ্রের আশপাশে থাকবেন। আপনারা শুধু সাধারণ ভোটারই নন, ভোটারদের অতন্দ্র প্রহরী। ভোট গ্রহণ শেষে ভোট গণনা করে কে কত ভোট পেল, তা নিশ্চিত না হয়ে সাদা কাগজে সই করবেন না। কোনো অবস্থাতেই প্রিসাইডিং কর্মকর্তার সই ছাড়া সই করবেন না। ফলাফল নিয়ে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার সঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তা বা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে যাবেন।’

রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, সব প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে হবে। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় জনগণ অগণতান্ত্রিক শক্তি, দুর্বৃত্তদের প্রতিরোধ করা শুরু করেছে। জনগণের শক্তির কাছে দুর্বৃত্তরা পরাজিত হবে, এটাই ইতিহাসের শিক্ষা। এ সময় তিনি ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের করা মিথ্যা মামলা, হামলা ও গ্রেপ্তার এবং বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর চালানো ‘নির্যাতনের’ হিসাব দেন।

সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বিএনপির নেতা রিজভী বলেন, ময়ূরের সিংহাসন থেকে ছিটকে পড়ার ভয়ে সরকার এই কয়েক দিন রক্তাক্ত হামলায় সারা দেশকে আতঙ্কের জনপদে পরিণত করেছে। বিএনপির মিছিল ও নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালানোসহ সহিংস আক্রমণে তাদের রক্ত ঝরাচ্ছে। শারীরিকভাবে ধানের শীষের প্রার্থীদের আক্রমণ করাসহ হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে আক্রমণ করে রক্তাক্ত করা হয়েছে। আগের রাতে ব্যালটে নৌকা মার্কায় সিল মেরে ‘রাখার’ পরিকল্পনাসহ নানামুখী নীলনকশা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা চলছে। গতকাল থেকে নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধ থাকলেও আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা বিভিন্ন নির্বাচনী আসনে মোটরসাইকেল মহড়া দিচ্ছে। এ ছাড়া ‘বিরামহীন’ পুলিশি হয়রানি, মামলা ও গ্রেপ্তার চলছে। তিনি ভোটার, ধানের শীষের সমর্থকদের বলেন, আগামীকাল আলো আসবেই।

মামলা-হামলার বর্ণনা দিয়ে রিজভী বলেন, গত ৮ নভেম্বর তফসিল ঘোষণার পর থেকে গতকাল ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীর সংখ্যা ১১ হাজার ৫০৬ জন। গায়েবি ও মিথ্যা মামলার সংখ্যা ৯৫৭টি। শুধু গতকালই বিভিন্ন জেলায় ‘বানোয়াট’ মামলা হয়েছে ৫৯টি, গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১ হাজার ১৭৭ জন নেতা-কর্মীকে।