সব সম্ভাবনাই আছে: জি এম কাদের

জি এম কাদের
জি এম কাদের

জাতীয় পার্টি (জাপা) সরকারে নাকি বিরোধী দলে থাকবে, তা সংসদীয় দল ও মহাজোটের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পর চূড়ান্ত করা হবে। এমনকি জাতীয় সরকারও হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের।

আজ বুধবার বনানীতে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন জি এম কাদের।

জাপা চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের রাজনৈতিক উত্তরসূরি জি এম কাদের বলেন, ‘আমরা দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেছি। আওয়ামী লীগ এবং ১৪ দলের সঙ্গে মহাজোট গঠন করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। আজকের সভার সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমাদের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) শপথ নেবেন। শপথ গ্রহণের পর সংসদীয় দল সিদ্ধান্ত নেবে—আগামী দিনে আমাদের রাজনীতিটা কোন দিকে প্রবাহিত হয়। দলের সাংসদেরাই বসে সিদ্ধান্ত নেবেন। এরপর মহাজোটের সঙ্গে বসেও আমাদের সমস্যা ও সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা করব।’

জি এম কাদের বলেন, সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচন এবং সরকার ও বিরোধী দলের থাকা না-থাকার বিষয় সম্পর্কে সংসদীয় দল সিদ্ধান্ত নেবে। দলের অধিকাংশ প্রেসিডিয়াম সদস্য সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। প্রেসিডিয়াম সদস্যরাও সংসদীয় দলকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে জি এম কাদের বলেন, ‘পার্লামেন্টে (সংসদে) শক্তিশালী বিরোধী দল থাকা দরকার। তবে অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে যদি মনে করা হয় শক্তিশালী বিরোধী দল হচ্ছে না... এটি আগেও হয়েছে। ’৭৩ সালে আওয়ামী লীগের সিটের (আসন) সংখ্যা দুই-তিনটি বাদে সবগুলোই ছিল। এটা তো জনগণের ইচ্ছা। গণতন্ত্রে তো জনগণের ইচ্ছার বাইরে কোনো কিছু হওয়ার উপায় নেই। হয়তো জাতীয় সরকার হতে পারে। অনেক কিছুই হতে পারে। নির্বাচনে রেজাল্ট যেটা আসে সেটার ওপর ভিত্তি করে সংসদ চলবে।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান বলেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সংসদে সরকারি দলের (আওয়ামী লীগ) পরই এখন আমাদের (জাতীয় পার্টি) অবস্থান। আমরা মহাজোট গঠন করে নির্বাচন করেছি। তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ও আমাদের নির্বাচনী অঙ্গীকার মিলেমিশে করেছি। সেই অবস্থান থেকেই আমাদের সামনে অগ্রসর হতে হবে। ভবিষ্যতে অবস্থান বুঝে যদি কোনো প্রয়োজন হয়, দেশের স্বার্থে তখন সেটা দেখা যাবে। জোটের সঙ্গে আছি। জোটের সব নেতা-কর্মী কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। কাজেই এখনো আমরা একভাবেই আছি। একভাবেই থাকতে চাই। মন্ত্রিপরিষদে থাকার বিষয়টিও সংসদীয় দল ও মহাজোটের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বিরোধী দলের নেতা হওয়ার বিষয়টিও আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হবে। এখন আমি সম্ভাবনার বিষয়টি বলতে চাই না। সব ধরনের সম্ভাবনাই আছে।’

নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে কি না? জানতে চাইলে জিএম কাদের বলেন, ‘আমার এলাকায় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে, এইটুকু বলতে পারব। অন্য এলাকায় হয়েছে কি না, তা বলতে পারব না। যেহেতু আমার এলাকার নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম।’

আজ সকাল ১০টায় বৈঠক শুরু হয়। তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বৈঠক চলে। এতে দলের জি এম কাদের, মসিউর রহমান, কাজী ফিরোজ রশীদ, ফয়সল চিশতী, আবু হোসেন বাবলা, লে. জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন, সালমা ইসলামসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। তবে বিদায়ী সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ এবং পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে দেখা যায়নি।

আরও পড়ুন: