এমপিওবঞ্চিত মাহবুবুর এখন নির্মাণশ্রমিক

নির্মাণশ্রমিকের কাজে  মাহবুবুর।  প্রথম আলো
নির্মাণশ্রমিকের কাজে মাহবুবুর। প্রথম আলো

চোখ-মুখে ক্লান্তি আর হতাশা। তবু সতর্কতার সঙ্গে রডে তারের গাঁথুনি দিয়ে চলেছেন তিনি। কারও সঙ্গে চোখে চোখ রেখে কথা বলার সুযোগ নেই। ‘স্যার’ বলে ডাকতেই মাথা উঁচু করে আনমনা হয়ে তাকালেন।

তিনি মাহবুবুর রহমান। নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার জয়ন্তিপুর দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক। ১৮ বছর ধরে ওই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করলেও তাঁর এমপিও (মাসিক মঞ্জুরি আদেশ) হয়নি। মাদ্রাসা সূত্রে জানা যায়, মাহবুবুর রহমান ২০০০ সালে সহকারী মৌলভি হিসেবে চাকরি নেন। প্রতিষ্ঠানটির পাশাপাশি তিনি নিজেও সরকারি বেতন মঞ্জুরির জন্য আবেদন জমা দেন। একের পর এক মঞ্জুরির আদেশ আসে। কিন্তু তাঁর মঞ্জুরির আদেশ হয়নি। বৃদ্ধ বাবা-মাসহ সংসারে আছে ছয় সদস্য। পরিবারের তিনবেলা খাবার, বাবা-মার ওষুধ ও সন্তানের লেখাপড়ার খরচ মেটানো অসম্ভব হয়ে পড়ে।

গত বৃহস্পতিবার বাগাতিপাড়ার এক নির্মাণাধীন বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে মাহবুবুর বলেন, ‘এমপিওর আশায় মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতে শুরু করেছিলাম। ভেবেছিলাম, একটু দেরি হলেও এমপিও হবেই। কিন্তু অপেক্ষার পালা শেষ হচ্ছে না।’ তিনি জানান, পরিবারের খরচ বেড়েছে। বাধ্য হয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি একটি মসজিদে মাত্র এক হাজার টাকা বেতনে ইমামতি শুরু করেন। মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা কার্যক্রমে যোগ দিয়েও কিছু উপার্জনের চেষ্টা করেন। কিন্তু সামান্য অর্থে সংসার চলে না। ধারদেনা বেড়ে যায়। চলতি বছর নন–এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওর নতুন বার্তায় আশায় বুক বেঁধেছিলেন। শেষ পর্যন্ত নিরাশ হয়ে নির্মাণশ্রমিকের কাজ শুরু করেছেন।