আব্বাস দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

মির্জা আব্বাস, আফরোজা আব্বাস
মির্জা আব্বাস, আফরোজা আব্বাস

প্রায় ২১ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বিএনপির নেতা মির্জা আব্বাস ও তাঁর স্ত্রী আফরোজা আব্বাসের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ সোমবার রাজধানীর শাহজাহানপুর থানায় এ মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন।

দুদকের জনসংযোগ বিভাগ প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দুদক সূত্র জানায়, রোববার কমিশনের সভায় এ মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আফরোজা আব্বাস আয়কর নথিতে নিজেকে একজন হস্তশিল্প ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করলেও পাসপোর্টে নিজেকে গৃহিণী হয়েছে উল্লেখ করেছেন। তাঁর নিজের আয়ের কোনো বৈধ উৎস নেই। দুদকে জমা দেওয়া আফরোজা আব্বাসের সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে দুদক তাঁর ২০ কোটি ৭৬ লাখ ৯২ হাজার ৩৬৩ টাকার সম্পদ পায়। প্রসঙ্গত, তিনি দুদকে ২০ কোটি ৫২ লাখ ৮০ হাজার ৫৫৮ টাকার সম্পদের ঘোষণা দিয়েছিলেন।

আফরোজা আব্বাস দুদকে যে সম্পদের হিসাব জমা দিয়েছেন তার সপক্ষে কোনো দালিলিক তথ্যপ্রমাণ দিতে পারেননি বলে অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়। অনুসন্ধান প্রতিবেদন বলছে, তিনি অবৈধভাবে অর্জিত জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ হস্তান্তর, রূপান্তর ও অবস্থান গোপন করার উদ্দেশ্যে দালিলিক প্রমাণবিহীন ভুয়া ঋণ নেওয়ার তথ্য দিয়েছেন।

দুদক মনে করছে, আফরোজা আব্বাসের নামে অর্জিত সম্পদ প্রকৃতপক্ষে তাঁর স্বামী মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহমেদের সহায়তায় অবৈধ উৎস থেকে অর্জিত। দুদকের প্রতিবেদন বলছে, ১৯৯১ সালের আগে মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহমেদের উল্লেখযোগ্য কোনো আয় ছিল না। তিনি ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী হওয়ার সুবাদে বিপুল অবৈধ অর্থ আয় করেন। স্ত্রীর সহায়তায় ওই অবৈধ সম্পদ স্ত্রীর নামে জমা করেছেন।

দুদকের এজাহারে বলা হয়, প্রায় ২১ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন এবং অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের বৈধতা দেওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে অবৈধ পন্থায় হস্তান্তর, রূপান্তর, অবস্থান গোপন করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ও অর্থপাচার আইনে অপরাধ করেছেন।

এর আগে সাবেক পূর্তমন্ত্রী মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে আয়ের সঙ্গে সংগতিবিহীন ৭ কোটি ৫৪ লাখ ৩২ হাজার ২৯০ টাকার সম্পদ অর্জন এবং ৫৭ লাখ ২৬ হাজার ৫৭১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ১৬ আগস্ট মামলা করে দুদক। ২০০৮ সালের ১৪ মে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এই মামলার বিচার চলছে।

সাংবাদিকদের জন্য মিরপুরে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে তৎকালীন গণপূর্তমন্ত্রী মির্জা আব্বাস, তৎকালীন গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীরসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৬ মার্চ শাহবাগ থানায় আরেকটি মামলাটি করে দুদক। এতে ১৫ কোটি ৫২ লাখ ৫০ হাজার ৯০০ টাকা রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়। এই মামলায় ২০১৬ সালের ২০ অক্টোবর মির্জা আব্বাসসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।