ইয়াবার প্রকৃত মালিক খুঁজতে মাঠে বদি!

কক্সবাজারের টেকনাফে গতকাল রোববার বিজিবির উদ্ধার করা ১ লাখ ২০ হাজার ইয়াবা বড়ি ও অটোরিকশার প্রকৃত মালিককে খুঁজতে মাঠে নেমেছেন স্থানীয় সাবেক সাংসদ আবদুর রহমান বদি। সোমবার বিকেলে বদি পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও টেকনাফে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে টেকনাফ পৌরসভা ও সাবরাং ইউনিয়নের অটোরিকশার স্টেশনে তল্লাশি চালান। তিনি অটোরিকশার মালিক ও চালকের খোঁজ করেন।

রোববার ভোরে টেকনাফের সাবরাং আলীর ডেইল এলাকা থেকে বিজিবির সদস্যরা ১ লাখ ২০ হাজার ইয়াবা বড়িসহ একটি অটোরিকশা জব্দ করেন। এ ঘটনায় বিজিবি উদ্ধার করা ইয়াবা বড়িগুলো ব্যাটালিয়নে জমা রেখে অটোরিকশাটি টেকনাফ শুল্ক বিভাগে জমা দেয়।

‘অভিযানের’ সময় বদির সঙ্গে ছিলেন টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আহামদ, সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর হোসেন, টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র আবদুল্লাহ মনির প্রমুখ।

এ সময় বদি বলেন, ‘জীবন বাজি রেখে ইয়াবা বন্ধ করাই হচ্ছে আমার মূল লক্ষ্যে। ইয়াবার দুর্নাম নিয়ে আর বেঁচে থাকতে চাই না। উখিয়া-টেকনাফকে ইয়াবামুক্ত করা এখন আমার প্রধান কাজ। যেখানে ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনা ঘটবে, সেখানে জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ জনগণকে নিয়ে আমি ছুটে যাব। কেননা, ইয়াবামুক্ত টেকনাফ গড়তে হলে ইয়াবার প্রকৃত মালিককে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে বিজিবির হাতে উদ্ধার ইয়াবার মালিক ও চালকের নাম বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। তাদের ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হবে।

টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আছাদুদ জামান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, বিজিবির উদ্ধার করা ইয়াবার সঙ্গে একটি অটোরিকশা জব্দ করা হয়েছে। তবে গাড়ির চালক পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা যায়নি। ওই গাড়ির কোনো লাইসেন্স নেই। তাই এ ঘটনায় প্রকৃত মালিককে পাওয়া যায়নি। তবে ইয়াবাগুলো বিজিবির হেফাজতে রাখা হয়েছে এবং অটোরিকশাটি শুল্ক বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে।

বিজিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়া অন্য কারও আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার কোনো বিধান নেই। সে যে-ই হোক না কেন। ’

এর আগে গত শুক্রবার টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরীপাড়ার নিজ বাসভবনে এলাকাবাসী ও দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে এক বক্তৃতায় ইয়াবা কারবারিদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানান বদি।

যদিও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সর্বশেষ করা তালিকায় ৭৩ প্রভাবশালী ইয়াবা কারবারি (গডফাদার) ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সর্বশেষ করা ইয়াবা ব্যবসায়ীর ১ হাজার ১৫১ জনের তালিকায় বদিসহ ২২ জনপ্রতিনিধির নাম রয়েছে। এ তালিকায় সাবেক সাংসদের ৫ ভাই, ১ বোনসহ নিকটাত্মীয় রয়েছেন ২৬ জন।

ইয়াবার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বদি আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাননি বলে প্রচলিত রয়েছে। এ আসনে (কক্সবাজার-৪) এবার সাংসদ হয়েছেন তাঁর স্ত্রী শাহীন আক্তার।