আফরোজা আব্বাসের ব্যাংক হিসাব ও শেয়ার ফ্রিজ

আফরোজা আব্বাস
আফরোজা আব্বাস

জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসের ব্যাংক হিসাব ও দুটি প্রতিষ্ঠানে তাঁর মালিকানাধীন এক লাখ ৩৯ হাজার ২৫৫ টি শেয়ার অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে বলেন, মামলার তদন্তের স্বার্থে আদালতের অনুমতি নিয়ে আজ মঙ্গলবার এসব সম্পত্তি ফ্রিজ করা হয়।

চলতি মাসের ৭ তারিখ রাজধানীর শাহজাহানপুর থানায় বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস ও আফরোজা আব্বাসের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। ওই মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ ও মহানগর দায়রা জজ আদালতে করা আবেদনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বলেন, আফরোজা আব্বাসের নামে ঢাকা ব্যাংকে একটি সঞ্চয়ী হিসাবে ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৮৫৮ টাকা জমা আছে। এ ছাড়া একটি বিও হিসাবে ঢাকা ব্যাংকের ৩৯ হাজার ২৫৫টি শেয়ার ও তার নামে ঢাকা টেলিফোন কোম্পানিতে থাকা এক লাখ শেয়ার আছে। তিনি এ সম্পদ হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন।

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ওই সব সম্পদ ফ্রিজ করার আদেশ দেন বলে জানিয়েছে দুদক।

দুদকের মামলায় বলা হয়, আফরোজা আব্বাস আয়কর নথিতে নিজেকে একজন হস্তশিল্প ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করলেও পাসপোর্টে নিজেকে গৃহিণী হয়েছে উল্লেখ করেছেন। তাঁর নিজের আয়ের কোনো বৈধ উৎস নেই। দুদকে জমা দেওয়া আফরোজা আব্বাসের সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে দুদক তাঁর ২০ কোটি ৭৬ লাখ ৯২ হাজার ৩৬৩ টাকার সম্পদ পায়।আফরোজা আব্বাস দুদকে ২০ কোটি ৫২ লাখ ৮০ হাজার ৫৫৮ টাকার সম্পদের ঘোষণা দিয়েছিলেন।

আফরোজা আব্বাস দুদকে যে সম্পদের হিসাব জমা দিয়েছেন তার সপক্ষে কোনো দালিলিক তথ্যপ্রমাণ দিতে পারেননি বলে অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়। অনুসন্ধান প্রতিবেদন বলছে, তিনি অবৈধভাবে অর্জিত জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ হস্তান্তর, রূপান্তর ও অবস্থান গোপন করার জন্য দালিলিক প্রমাণবিহীন ভুয়া ঋণ নেওয়ার তথ্য দিয়েছেন।
দুদক মনে করছে, আফরোজা আব্বাসের নামে অর্জিত সম্পদ প্রকৃতপক্ষে তাঁর স্বামী মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহমেদের সহায়তায় অবৈধ উৎস থেকে অর্জিত। দুদকের প্রতিবেদন বলছে, ১৯৯১ সালের আগে মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহমেদের উল্লেখযোগ্য কোনো আয় ছিল না। তিনি ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী হওয়ার সুবাদে বিপুল অবৈধ অর্থ আয় করেন। স্ত্রীর সহায়তায় ওই অবৈধ সম্পদ স্ত্রীর নামে জমা করেছেন।

১৪ জানুয়ারি এই মামলায় হাই কোর্ট থেকে আট সপ্তাহের আগাম জামিন পান আব্বাস দম্পতি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আব্বাস ঢাকা-৮ আসনে এবং আফরোজা ঢাকা-৯ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন।