জুবায়ের আসলে কোথায়?

>* আসামি তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী
* কক্সবাজারের পুলিশ লাইন হেফাজতে আত্মসমর্পণের অপেক্ষায়
* হেফাজতে থেকে আসামি কী করে জবাব খুঁজছেন

তারিখটা ১৮ জানুয়ারি। টেকনাফের দক্ষিণ জালিয়াপাড়ার তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী জুবায়ের আত্মসমর্পণের জন্য পুলিশ হেফাজতে যান। পুলিশ জানাল, তাঁর বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় হত্যা মামলা করেছে বিজিবি। প্রথম আলোর সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে জুবায়ের এ তথ্য জানিয়ে দাবি করেন, এরপর থেকে তিনি কক্সবাজার পুলিশ লাইনে আছেন।

পুলিশ বলছে, ‘বন্দুকযুদ্ধে’ একজন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হওয়ার ঘটনায় এ মামলা হয়েছে। জুবায়ের এতে আসামি। তবে তাঁর কোনো খোঁজ পুলিশ জানে না।

আত্মসমর্পণের জন্য কক্সবাজারে অবস্থানরত জুবায়ের নিজেই গতকাল বুধবার মোবাইলে প্রথম আলোকে এ খবর জানান। জুবায়ের বলছেন, তিনি দুবাইয়ে ছিলেন। সাবেক সাংসদ আবদুর রহমান বদি তাঁকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানান। তখনই তিনি দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। ১৬ মামলার আসামি জুবায়ের নতুন আরেকটি মামলায় জড়িয়ে আক্ষেপ করছেন এখন।

বিজিবির নায়েক মো. হাবিল উদ্দীন টেকনাফ মডেল থানায় যে মামলা করেছেন, সেখানে এজাহারে লিখেছেন, বিজিবির টহল দল ১৯ জানুয়ারি সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে টেকনাফের পর্ণাচর এলাকায় যায়। খবর পায়, নামারবাজার ব্রিজের ওপর এক ব্যক্তি ইয়াবা নিয়ে অবস্থান করছেন। ঘটনাস্থলে বিজিবি সদস্যরা যাচ্ছেন—এমন খবর পেয়ে একজন পালানোর চেষ্টা করেন। বিজিবি সদস্যরা তাঁকে ধরে ফেলেন। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তাঁর নাম মোস্তাক আহমদ প্রকাশ মুশু (৩৫)। দুজন সাক্ষীর সামনে ওই ব্যক্তিকে তল্লাশি করে দুই হাজার পিস ইয়াবাও উদ্ধার করেন তাঁরা। আটক করা ব্যক্তি জানান, জালিয়াপাড়ার এজাহার কোম্পানির লবণ প্রকল্পের পুব পাশে কেওড়াবাগানে ইয়াবা মজুত আছে। তিনি জানান, ওই ইয়াবা দক্ষিণ জালিয়াপাড়ার মো. ওসমানের ছেলে মো. জোবায়েরসহ ১৪ জনের জিম্মায় আছে। তাঁরা ঘটনার দুদিন আগে মিয়ানমার থেকে ইঞ্জিনচালিত বোটে একটি বড় চালান নিয়ে এসেছেন। এখন কেওড়াবাগানে অস্ত্রশস্ত্রসহ পাহারা দিচ্ছেন। তথ্য যাচাই-বাছাই এবং ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারের জন্য টেকনাফ মডেল থানার ১২ জন পুলিশ সদস্যসহ অভিযানে যায় বিজিবি। এ সময় মোস্তাককে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে তাঁর সহযোগীরা। সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে মোস্তাক গুলিবিদ্ধ হন। পরে হাসপাতালে মারা যান। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসতে থাকলে তাদের জানমালের কথা চিন্তা করে বিজিবি ও পুলিশ গুলি ছোড়া বন্ধ করে। তখন অজ্ঞাতনামা আসামিরা গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় ২০ জানুয়ারি মামলা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার বাদী নায়েক মো. হাবিল উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিযোগে থাকা ব্যক্তিকে আমি চিনি না, জানিও না। বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় মৃত্যুর আগে ওই মাদক ব্যবসায়ী যে তথ্য দিয়েছেন, তা-ই লেখা হয়েছে।’

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস জানান, জোবায়ের কোথায়, তা তিনি জানেন না। তা ছাড়া জেলে থেকেও আসামিরা অপরাধে জড়ান। এমন প্রমাণ আছে বিস্তর।