দুই শিশু হত্যা: ১৬ দিনে অভিযোগপত্র

আদালত
আদালত

রাজধানী ঢাকার ডেমরার কোনাপাড়ায় ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে স্কুলছাত্রী দুই শিশুকে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। ৭ জানুয়ারি ওই দুই শিশুকে হত্যা করা হয়। তদন্ত শেষে হত্যাকাণ্ডের ১৬ দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার ডেমরা থানার উপপরিদর্শক শাহ আলম ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এই অভিযোগপত্র জমা দেন।

অভিযোগপত্রভুক্ত দুই আসামি হলেন সিরামিক মিস্ত্রি গোলাম মোস্তফা (২৮) ও তাঁর ফুফাতো ভাই আজিজুল বাওয়ানী (২৮)। ঘটনার পরদিন যাত্রাবাড়ীর ভাঙা প্রেস থেকে গোলাম মোস্তফাকে ও ডেমরার মোল্লা ব্রিজ এলাকা থেকে আজিজুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা কারাগারে আটক আছেন। নিহত দুই শিশুর বয়স পাঁচ ও সাড়ে চার বছর। তাদের পরিবার কাছাকাছি বাসায় থাকত।

দুই আসামির বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে হত্যা ও লাশ গুম করার অভিযোগে দণ্ডবিধির ৩০২/২০১/৩৪ এবং ধর্ষণচেষ্টা, হত্যা ও আলামত নষ্ট করার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১)/৯(৪)(খ) ধারায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। এসব ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। এ মামলার অভিযোগপত্রে ৩০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্র বলেছে, ৭ জানুয়ারি দুপুরে বাড়ির সামনে খেলার সময় নিখোঁজ হয় ওই দুই শিশু। তাদের খোঁজ না পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে এলাকায় মাইকিংও করা হয়। পরে রাতে কাছাকাছি একটি বাড়ির নিচতলার ভাড়াটে মোস্তফার বাসার খাটের নিচ থেকে মেয়ে দুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় এক শিশুর বাবা ডেমরা থানায় মামলা করেন। পুলিশ মোস্তফাকে বাসায় না পেয়ে তাঁর স্ত্রী আঁখিসহ দুজনকে আটক করে। পরদিন মোস্তফা ও আজিজুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, ঘটনার সময় মোস্তফার স্ত্রী পোশাককর্মী আঁখি ছিলেন কর্মস্থলে। মোস্তফা ও আজিজুল তখন বাসার বাইরে খেলায় ব্যস্ত ওই দুই শিশুকে লিপস্টিক কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বাসায় নিয়ে যান। তাঁরা দুজন ইয়াবা বড়ি সেবন করে উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে দুই শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। তাতে ব্যর্থ হয়ে গলায় গামছা পেঁচিয়ে তাদের হত্যা করেন। এসব কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন দুই আসামি। অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, হত্যার পর দুই শিশুর লাশ খাটের নিচে রেখে দেন মোস্তফা ও আজিজুল। পরে তাঁরা বাসা থেকে বের হয়ে যান।