ঢাবিতে ইশার মিছিল নিয়ে বাম সংগঠনের প্রশ্ন

গত মঙ্গলবার ঢাবিতে মিছিল করে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন। এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বাম ছাত্র সংগঠনগুলো। ছবি: প্রথম আলো
গত মঙ্গলবার ঢাবিতে মিছিল করে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন। এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বাম ছাত্র সংগঠনগুলো। ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে নিজেদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার দাবি নিয়ে মঙ্গলবার বিক্ষোভ করেছিল ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম ছাত্র সংগঠনগুলো প্রশ্ন তুলেছে। তারা বলছে এ ঘটনা তাদের হতবাক করেছে।

সংগঠনগুলো বলছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মভিত্তিক কোনো রাজনৈতিক দল কর্মসূচি পালন করতে পারবে না বলে অলিখিতভাবে নিয়ম রয়েছে। এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় সবগুলো ছাত্র সংগঠন ও প্রশাসনের সমন্বয়ে গঠিত পরিবেশ পরিষদের বৈঠকে তাঁরা এ বিষয়ে একমত হয়েছিলেন।

গত বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন। সেখানে ইশা ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এম. হাছিবুল ইসলাম অভিযোগ করেন, আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে তাঁরা উপাচার্য ও প্রক্টরের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা ও বৈঠক করেছেন। কিন্তু ডাকসু নির্বাচনের কার্যক্রমে তাঁদের ক্রমাগত উপেক্ষা করা হচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাইফুর রহমান বলেন, আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে ইশা ছাত্র আন্দোলনকে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতেই হবে।

ইশা ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের এসব বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সমাবেশের পরপরই প্রগতিশীল ছাত্রজোটের পক্ষ থেকে বিবৃতি আসে। এতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে ধর্মভিত্তিক সংগঠনের প্রকাশ্য মিছিলের ঘটনা তাদের হতবাক করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্বিকারত্ব আরও বেশি ভাবিয়ে তুলেছে। ধর্মভিত্তিক ছাত্র সংগঠনগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিষদ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত। এই সকল সংগঠনকে ক্যাম্পাসের গণতন্ত্রমনা শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা কখনোই গ্রহণ করেনি।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্কসবাদী বাসদ সমর্থিত), বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী ও ছাত্র ঐক্য ফোরাম এই জোটের অন্তর্ভুক্ত।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী প্রথম আলোকে বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা অপরাজেয় বাংলা ভাঙতে আসার পর থেকে অলিখিতভাবেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ। তাই তাঁরা এর বিরোধিতা করছেন।

সম্প্রতি ডাকসুর পরিবেশ পরিষদের বৈঠকে ছাত্রলীগ-ছাত্রদলও পরিবেশ পরিষদের বৈঠকে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে।

ইশার মিছিলের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা পরিবেশ পরিষদের সর্বশেষ সভায় ডাকসুর গঠনতন্ত্রে ধর্মভিত্তিক সংগঠন ও তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছি। ছাত্রদলসহ অন্যান্য প্রগতিশীল সংগঠনও এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে একমত পোষণ করেছে।’