মালদ্বীপে মেয়ের মৃত্যুর বিচার চাইলেন বাংলাদেশি দম্পতি

নিহত বাংলাদেশি শিশু রওশনের মা–বাবার (মাঝের দুজন) সংবাদ সম্মেলন। মালদ্বীপ, ২৪ জানুয়ারি। ছবি: মালদ্বীপ টাইমস থেকে নেওয়া
নিহত বাংলাদেশি শিশু রওশনের মা–বাবার (মাঝের দুজন) সংবাদ সম্মেলন। মালদ্বীপ, ২৪ জানুয়ারি। ছবি: মালদ্বীপ টাইমস থেকে নেওয়া

সন্তানের মৃত্যুর বিচার না হওয়া পর্যন্ত মালদ্বীপ ছাড়বেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশি চিকিৎসক দম্পতি। তাঁরা বলছেন, তাঁদের শিশুসন্তানের মৃত্যু নিছক কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটি স্পষ্টতই দায়িত্বের অবহেলা।

গত ১৭ ডিসেম্বর মালদ্বীপে নির্মাণাধীন ভবন থেকে সিমেন্টের বস্তা পড়ে নিহত হয় ওই চিকিৎসক দম্পতির কন্যাশিশু রওশন জিয়ান (৮)। এ নিয়ে রাজধানী মালেতে গত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করেন ওই দম্পতি।

বৃহস্পতিবার মালদ্বীপ টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সংবাদ সম্মেলনে জিয়ানের মা ফারজানা হোসাইন বলেছেন, তাঁরা এই মামলার বিচার না হওয়া পর্যন্ত মালদ্বীপ না ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

মালদ্বীপের একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত এই চিকিৎসক দম্পতি ডিসেম্বর মাসে মালেতে ছুটি কাটাচ্ছিলেন। এর মধ্যে ১৭ ডিসেম্বর ওই দুর্ঘটনা ঘটে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ১০ তলাবিশিষ্ট নির্মাণাধীন একটি ভবনের ষষ্ঠ তলা থেকে ক্রেন দিয়ে তোলার সময় সিমেন্টের বস্তা শিশুটির ওপর পড়ে। মূলত ভবনটির নিরাপত্তাবেষ্টনীতে ছিদ্র থাকার কারণে ওই বস্তা শিশুটির গায়ে পড়া সম্ভব হয়েছে বলে এই দম্পতির অভিযোগ। এ জন্য তাঁরা সংশ্লিষ্ট আবাসন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ডব্লিউ কনস্ট্রাকশনের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তোলেন এবং এর মালিককে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।

দুর্ঘটনার পর তাঁদের খোঁজখবর নেওয়ার জন্য ফারজানা হোসাইন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ, ভাইস প্রেসিডেন্ট ফয়সাল নাসিম, সাবেক প্রেসিডেন্ট মামুন আবদুল গাইয়ুম, রাজধানী মালের মেয়র শিফা মোহাম্মদসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তবে ওই দুর্ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দাদের অভূতপূর্ব সাড়া দেওয়ার জন্য তাঁদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানান এই দম্পতি। কারণ, ওই দুর্ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন সংশ্লিষ্ট নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন।

অবশ্য ডব্লিউ কনস্ট্রাকশন তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছে, তারা নিয়ম মেনেই ভবনের নির্মাণকাজ করছিল। ঘটনার পর ওই ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ থাকলেও বর্তমানে তা আবার চালু হয়েছে।