পরিবার ও সংগঠন বলছে পুলিশ গুলি করছে, পুলিশের অস্বীকার

মেহবুব রহমান ম্যানসেল। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
মেহবুব রহমান ম্যানসেল। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

যশোর শহর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মেহবুব রহমান ম্যানসেল (৩৫) গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গতকাল রোববার দিবাগত রাতে শহরের ষষ্টিতলাপাড়া এলাকায় পাশের বাড়ির ছাদে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। তাঁর বাম পায়ে গুলি লেগেছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

মেহবুবের পরিবার ও সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে পুলিশ গুলি করেছে। তবে পুলিশ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বলছে, মেহবুব সন্ত্রাসী। গতকাল রাতে নিজেদের মধ্যে গোলাগুলিতে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

মেহবুবের স্ত্রী বৈশাখী রহমান বলেন, ‘স্ট্রোকের কারণে তাঁর স্বামী অসুস্থ। রোববার রাতে তিনি (মেহবুব) বাড়ির নিচতলায় ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত দেড়টার দিকে পুলিশ গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে। মেহবুব এ সময় বাড়ির ছাদে উঠে যান। তিনি ছাদ টপকে পাশের ইমাম হাসান লালের বাড়ির ছাদে যান। এরপর গুলির শব্দ শুনি। পুলিশ তাঁর বা পায়ে গুলি করেছে।’

শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) ইমাম হাসান লাল বলেন, ‘আমার বাড়ির একটা বাড়ি পর মেহবুবের বাড়ি। গতকাল রাত দেড়টার দিকে পুলিশ আমার বাড়ি ঘেরাও করে। পুলিশ বাড়ির গেট খুলে দিতে বলে। আমি গেট খুলে দিলে পুলিশ বাড়ির ছাদে যায়। কিছু সময় পর গুলির শব্দ শুনতে পাই। সেখানে কী হয়েছে জানি না। সকালে মেহবুবকে বাম পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দেখেছি।’

গুলিবিদ্ধ হয়ে যশোর আড়াই শ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের বিছানায় মেহবুর রহমান। ছবি: এহসান-উদ-দৌলা
গুলিবিদ্ধ হয়ে যশোর আড়াই শ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের বিছানায় মেহবুর রহমান। ছবি: এহসান-উদ-দৌলা

যশোর জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মঈন উদ্দীন মিঠু বলেন, মেহবুব রহমান ম্যানসেল যশোর শহর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। কিছুদিন আগে তিনি স্ট্রোক করেন। তাঁর শরীরের ডানপাশ প্রায় অবশ। ডান পা কিছু সচল থাকলেও ডান হাত একেবারেই অচল। শনিবার গভীর রাতে যশোর-৩ আসনের সাংসদ কাজী নাবিল আহমেদের বাসভবনে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে রোববার বিকেলে শহরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মেহবুব ওই বিক্ষোভ মিছিলে ছিলেন। রাত সাড়ে তিনটার দিকে এক ব্যক্তি আমাকে ফোন করে বলেন, পুলিশ মেহবুবের পায়ে গুলি করেছে। তবে কী কারণে গুলি করেছে তা জানি না।

যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জন মো. আব্দুর রশিদ জানান, ম্যানসেলের বাম পায়ে গুলি কিংবা ছাররা লেগেছে। তাঁর বাম পায়ের রক্তনালী ছিঁড়ে গেছে এবং হাড় ভেঙে গেছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতাল এবং জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে রেফার্ড করা হয়েছে।

যশোর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সমীর কুমার সরকার বলেন, পুলিশ গুলি করেছে সঠিক নয়। মেহবুব সন্ত্রাসী। রোববার রাতে নিজেদের মধ্যে গোলাগুলিতে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং মেহবুবকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করি। এ সময় আমরা মেহবুবের কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল ও আটটি গুলি এবং তাঁর সহযোগী মেহেদি হাসান অনিকের(২৩) কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও চারটি গুলি উদ্ধার করি। মেহেদি হাসান অনিক যশোর শহরের শংকরপুর এলাকার ছেলে।